ডাক ডেস্ক ॥ ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আজ শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে যে কোনো সময়ে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ সময় সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা পাঁচ থেকে সাত ফুট পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল শুক্রবার জানায়, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর পরিবর্তে ৬ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার বেগের বাতাসের শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আপাতত এর গতিমুখ সুন্দরবনের দিকে।
বুলবুলের সম্ভাব্য এই হানার মুখে গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রতিমন্ত্রী। পরে সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ভোলা জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সাত জেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে লোক সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় ২০০০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির যে গতি ও যেদিকে অগ্রসর হচ্ছে তাতে আঘাত হানবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে উপকূলীয় প্রতিটি জেলার প্রশাসকদের সঙ্গে আমাদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটির সভা হয়েছে। তারা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জেলা উপজেলা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুন্দ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে আসতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।