অমর ২১ শে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:৩৫:১৬ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : ১৯৫২ সালের এই মাসে বাঙালি তরুণরা বুকের রক্ত ঢেলে মাতৃভাষার অধিকারকে সার্বজনীন মৌলিক অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। ওই আত্মবলিদানের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার স্বপ্নও জেগে ওঠে, যা এই জাতিকে পরবর্তী ধাপে পথ দেখিয়েছে। বাঙালি জাতি মাসজুড়ে ভালোবাসা জানাবে ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন তাদের। একুশ আমাদের চিন্তায়, চেতনায়, মনন, মণীষায়, জ্ঞানে অহংকারের প্রতিভূ হিসেবে দেদীপ্যমান। ভাষা আন্দোলন-উত্তর প্রজন্মের জীবনে একুশের প্রভাব অপরিসীম। ভাষাপুত্র সালাম, বরকত, রফিকদের আত্মত্যাগ আমাদের বীরত্বগাঁথা, বারবার দেশাত্মবোধে উদ্দীপ্ত করে। ভাষা অধিকারের সংগ্রাম এক দিনে অঙ্কুরিত হয়নি। বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপনের প্রথম ক্ষেত্র রচিত হয় ১৯০০ সালে। অবিভক্ত ভারতের যুক্ত প্রদেশের গভর্নর স্যার অ্যান্টিনিও যুক্ত প্রদেশের সরকারি দপ্তরে ও নথিপত্রে উর্দু ভাষা ও উর্দু বর্ণমালার পরিবর্তে দেব নাগরি অক্ষর প্রবর্তন করেন। তখন এ প্রদেশের মুসলমানরা ক্ষুব্ধ হয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদের মুখে ভাষা প্রবর্তনের গুঞ্জন শুরু হয়। হিন্দুরা জাতীয়তার কথা উল্লেখ করে হিন্দি ভাষার পক্ষে জনমত গড়ে তোলার দাবি উত্থাপন করে। এতে মুসলমানরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলে। তবে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার সর্বপ্রথম দাবি করেন নবাব নওয়াব আলী। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য ১৯২০ সালে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মূল প্রস্তাব উপস্থাপন করেন ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
পাকিস্তান সৃষ্টির প্রাক্কালে ঢাকা ও কলকাতায় ‘পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সংসদ’ সংগঠনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবি জোরদার হয়। এরপর থেকে আন্দোলনের পরিক্রমায় আসে ১৯৪৮ সাল। এ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি গণপরিষদের অধিবেশনে পরিষদের ভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজি গৃহীত হয়। বলা হলো, এ দুই ভাষা ছাড়া আর কোনো ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। তাই অধিবেশনে সংশোধন প্রস্তাব আনলেন গণপরিষদে কংগ্রেসের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকেও গণপরিষদের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তাব দিলেন।