আইনের কবলে ‘মিনিকেট’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ৬:২০:৫২ অপরাহ্ন

আইন হচ্ছে ‘মিনিকেট’ চাল নিয়ে। সরকার বলছে দেশে মিনিকেট নামে কোন চাল নেই। তবুও ব্যবসায়িরা মিনিকেট নামে বাজারজাত করছে চাল। এই কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে আইন। আইনে চালের বস্তায় চালের জাত লেখা বাধ্যতামূলক করা হবে। একই সঙ্গে চালে কতোটুকু ছাঁটাই বা পলিশ করা যাবে তা-ও নির্ধারণ করে দেয়া হবে। সরকার বলছে, যেহেতু মিনিকেট নামে কোন ধানের চাষ হয় না, তাই এ নামে কোন চাল থাকার কথা নয়। কারণ ধানের নামেই চালের নাম হয়।
এ ব্যাপারে সরকার বলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। মিনিকেট বা নাজির শাইল নামে কোন চাল হতে পারে না। তবুও দেশের বাজারগুলো সয়লাব হয়ে আছে মিনিকেট, নাজিরশাইল চালে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এসব নামের কোন ধানের আবাদ যেমন দেশের কোথাও হয় না তেমনি এগুলো কেউ আমদানিও করে না। কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাজারে বিপুল পরিমানে ব্রি ধান রয়েছে।কিন্তু বাজারে ব্রি চাল নামে কোন চালের অস্তিত্বই নেই। আবার দেশে এখন বিপুল পরিমাণ হাইব্রিড ধান উৎপাদিত হলেও বাজারে হাইব্রিড ধানের চাল বা হাইব্রিড চাল বলে কিছু পাওয়া যায় না।আসল কথা হলো, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত ব্রি ২৮ ধানকেই মিলগুলো নিজেদের ইচ্ছে মতো কেটে, মিক্স ও ওভারপলিশ করে নানা নামে বাজারে আনছে। আশ্চর্য্যের বিষয় হচ্ছে, বাজারে মিনিকেট, নাজির শাইল, কাজললতা চাল আছে; কিন্তু ধান নেই। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে ব্রি ধানের দুটি জাত থেকেই বেশি ধান পাওয়া যায়। অথচ বাজারে ব্রি নামে কোন চাল আর নাজিরশাইল নামেও কোন ধান নেই। মূলত ব্রি ২৯ ধানটি ছাঁটাই করে ও অতিমাত্রায় পলিশ করে নাজিরশাইল নাম দিয়ে বাজারে ছাড়া হয়। জানা যায়, মিনিকেট নামটির সূত্রপাত হয়েছে ভারত থেকে আসা ধান থেকে। মূলত ভারত থেকে একটি ধান আসতো আগে। মিনি বা ছোট প্যাকেটে করে সেগুলো কৃষকদের দেয়া হতো। সেই ধানকেই পরে কেটে যে চাল হতো তারই নাম মিলগুলো মিনিকেট বলে উল্লেখ করতে শুরু করে। বিশেষ করে কুষ্টিয়া ও নওগাঁয় এর ব্যাপক প্রচলন হয়ে পরে তা ব্যক্তির নামেও বাজারজাত হতে শুরু করে।
মিনিকেট, নাজিরশাইল বা যে নামেরই চাল হোক না কেন-এগুলো ছাঁটাই ও পলিশ করে বাজারে ছাড়া হয়। অথচ এই ছাঁটাই ও পলিশ করায় চালের পুষ্টিমান থাকেনা। তাই সরকার এব্যাপারে আইন করতে যাচ্ছে। এখন থেকে মিলে চাল ইচ্ছামতো ছাঁটাই করা যাবে না। ধানের যেটুকু ছাঁটাই করা যাবে, তার একটা অনুপাত ঠিক করে দেয়া হবে। এছাড়া চালের বস্তায় বাধ্যতামূলকভাবে ধানের জাত লিখতে হবে।