ঈদের জামাতের একটি অনুভূতি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ মে ২০২২, ৫:১৭:৫৮ অপরাহ্ন

রফিকুর রহমান লজু
পরপর দুই বছর পর এবার সিলেটের শাহী ঈদগাহে ঈদুল-ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাণঘাতি করোনার কারণে গত দু’বছর (২০২০, ২০২১) শাহী ঈদগাহে ঈদের নামাজ হয়নি। একই কারণে অন্যান্য ঈদগাহে এবং মাঠে-ময়দানেও ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হতে পারেনি।
এবার যেভাবে মানুষের ঢল নেমেছিল এবং লোক সমাগম হয়েছিল, ইতোপূর্বে এমন হয়নি। শাহী ঈদগার মূল বিস্তৃত মাঠ এবং চার ওয়ালের বাইরের বর্ধিত অংশেও স্থান সংকুলান হয়নি। অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে এবং ধারণা ছাড়িয়ে লোক সমাগম হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণত যে লোকজন শাহী ঈদগাহে আসেন না, যারা নিজ নিজ মসজিদে বা মাঠে নামাজ পড়েন, এবার তারাও শাহী ঈদগাহে এসেছেন। সবাই আন্দাজ করেছেন জমায়েত বেশি হবে কিন্তু এই বেশি ধারণা কেউ সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেননি। তাই বর্ধিত চিহ্নিত এলাকা ছাড়িয়ে টি.বি গেইট পর্যন্ত মানুষ লাইন ধরেছেন, পূর্ব দিকে কুমারপাড়া পর্যন্ত ও রায়নগর এর কিছু অংশ ছুইয়ে ছিল। দক্ষিণ দিকে হাজারীবাগ এবং সৈয়দপুর কমপ্লেক্সের গলিও ভরে গিয়েছিল। এলাকার বাসাবাড়ি ও অফিসের ছাদেও মানুষ নামাজ পড়েছেন। শাহী ঈদগাহে নামাজ পড়ার একটা আলাদা আকর্ষণ আছে। করোনার পর এবারই প্রথম ঈদের নামাজ হলো শাহী ঈদগাহে। এসব নানা কারণে লোক সমাগম অধিক হয়েছিল।
এছাড়া আরও একটা কারণে লোক জমায়েত বেশি হয়েছিল। একটা আকর্ষণ ছিল নামাজের ইমাম। নামাজ পড়িয়েছেন একজন নতুন হুজুর। তিনি শেখবাড়ি জামিয়ার মুহতামিম শায়খুল হাদিস মুফতি মোহাম্মদ রশিদপুর রহমান ফারুক, পীরসাহেব বরুণা। তিনি এর আগে সিলেট শাহী ঈদগাহে নামাজ পড়াননি। তাঁর জনপ্রিয়তা এবং ইমামতি করা ও খুতবা পাঠ আগে সিলেটবাসী পায়নি। এবারই তিনি সিলেটে প্রথম নামাজ পড়িয়েছেন। এই খবর আগেই পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ও নিউজ হিসেবে প্রচারিত হয়েছিল। এই কারণেও নামাজে লোক সমাগম বেশি হয়েছে। শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারেন নি। তাই তাঁরা সেই অনুপাতে মাইকের ব্যবস্থা করেননি। পর্যাপ্ত মাইক লাগান নাই। বহুদূর মাইকের শব্দ পৌঁছায় নাই। নামাজী মুত্তাকীগণ এক সঙ্গে তকবীর দিয়েছেন। অনেকে একে অন্যের রুকু সেজদা দেখে নিজেরা রুকু সেজদা করেছেন। মাইক ব্যবহারে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি মুসল্লীদের বিরক্তি ও অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে।
ঈদের দিন এবং পরদিনও শহরের টক অব দি টাউন ছিল ঈদের নামাজে মাইকের অব্যবস্থাপনা।
এতসব অসুবিধা ও অব্যবস্থা মোকাবিলা করে যারা কোনো মতে একটু দাঁড়াবার সুযোগ করে নামাজ আদায় করেছেন, তারা নিজেদের ধন্য ও কৃতার্থ মনে করছেন ও গর্ব অনুভব করছেন।