সিলেট বিভাগে জ্বালানি তেল সংকট
এক সপ্তাহের মধ্যে সংকট না কাটলে ধর্মঘটে যাবার হুমকি ব্যবসায়ীদের
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ৩:২৫:১০ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টারঃ সিলেট অঞ্চলের জ্বালানি তেলের সংকট নিরসনে প্রশাসনকে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ সময়ের মধ্যে সংকটের সমাধান না হলে আগামী রোববার থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে যাবার হুমকি দিয়েছেন।
সিলেট বিভাগ পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানান, সোমবার সকালে তারা এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের সাথে দেখা করতে যান। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে তারা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আ ন ম বদরুদ্দোজার সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ব্যবসায়ী নেতারা জানান, গত প্রায় ৬ মাস ধরে সিলেটে জ্বালানি তেলের সংকট বিরাজ করছে। সিলেট-ঢাকা রেল সেকশনে ঘন ঘন দুর্ঘটনা এবং সিলেটের গ্যাস ফিল্ডসমূহ থেকে স্থানীয়ভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ হবার পর থেকে মূলত এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু, সংকট নিরসনের কোন উদ্যোগই পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এক সপ্তাহের মধ্যে সংকট নিরসনের উদ্যোগ না নিলে আগামী রোববার থেকে ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হবেন বলে তারা এডিসি জেনারেলকে জানিয়ে এসেছেন। তারা জানান, সিলেট বিভাগে সব মিলিয়ে ১১৪টি পেট্রোল পাম্প রয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আ ন ম বদরুদ্দোজা জানান, সংকট নিরসনে সোমবারই এ বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তার সাথে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘আসলে সমস্যা তো আমাদের না। সমস্যা রেল কর্তৃপক্ষের। আমরা তাদেরকে (রেল কর্তৃপক্ষ) বিষয়টি জানিয়েছি।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎকালে জুবায়ের আহমদ চৌধুরী ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিলেটের সভাপতি মোস্তফা কামাল, অর্থ সম্পাদক সিরাজুল হুসেন আহমদ, সহ সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম, সদস্য শাহেদ মোশফিকুর রহমান চৌধুরী শাহেদ, এনামুল হক রুবেল, জুবের আহমদ চৌধুরী খোকন, রিয়াদ উদ্দিন, ইউনুস মিয়া, সানওয়ার আলী ও আব্দুস কুদ্দুস তালুকদার।
প্রসঙ্গত, সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনে ঘন ঘন দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে রেলের তেলবাহী ওয়াগন না আসায় জ্বালানি তেলের সংকটে পড়েছে সিলেট বিভাগ। এ অবস্থায় রাষ্ট্রীয় তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার সিলেটের ডিপো অনেকটা ড্রাই (শুষ্ক) হয়ে গেছে। ডিপো থেকে চাহিদা অনুযায়ী পেট্রোল পাম্পসমূহে জ্বালানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। কিছু কিছু পেট্রোল পাম্প ভৈরত থেকে লরি দিয়ে ডিজেল নিয়ে আসলেও সেখান থেকে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আনতে পারছে না।
সূত্র জানায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও রেলস্টেশনের পাশে বিয়ালীবাজারের কাছে তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। এ কারণে ২৯ ঘণ্টা সিলেটের সাথে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি কুলাউড়ায় মালবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় আরো ৪ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। মূলত ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে তেলবাহী ওয়াগন পরিবহন অনিয়মিত হয়ে পড়ে বলে জানায় ওই সূত্র।