কমলগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২১, ৩:৫৩:৪৬ অপরাহ্ন

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনাভাইরাসের উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে প্রায় সাড়ে চার মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। ফলে আবার মুখর হয়ে উঠেছে উদ্যানটি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে চলতি বছরের পয়লা এপ্রিল থেকে লাউয়াছড়াসহ মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত ২০ আগস্ট দুপুরে লাউয়াছড়া খুলে দেওয়ার পর থেকে সবুজ এ বন পর্যটকদের পদভারে আবার মুখরিত হয়ে ওঠে। শুধু লাউয়াছড়াই নয়, পর্যটকরা সেখান থেকে যাচ্ছেন মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, চা-বাগানসহ কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে এ উদ্যান। ছোট-বড় প্রায় সব বয়সী পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে। শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় পর্যটকের আগমন বেশি লক্ষ্য করা গেছে। মাস্ক ছাড়া উদ্যানের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না পর্যটকদের। কিন্তু প্রবেশদ্বার অতিক্রম করার পর অধিকাংশ পর্যটক মাস্ক খুলে ফেলছেন। ছবি তোলা কিংবা প্রকৃতি থেকে অক্সিজেন গ্রহণের জন্য তারা মাস্ক রাখছেন না মুখে। তবে পর্যটকরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদ্যানে চলাচল করেন সে জন্য কাজ করছে লাউয়াছড়া উদ্যানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন পর্যটন পুলিশ ও বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট লোকজন।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান খোলার খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থেকে ঘুরতে আসা মাজারুল কয়েস, ফাহমীদা নওশীন, নেত্রকোণা থেকে আসা শাহ দিলদার মামুন, সিলেট থেকে আসা শ্রাবন্তী চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকার পর প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর জন্য এসেছি। সবুজ এ বন ঘুরে সত্যিই ভালো লেগেছে। কমলগঞ্জ জীব বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ আজাদ বলেন, করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা এখানে ভ্রমণ করলে তা নিরাপদ হবে।
লাউয়াছড়া উদ্যানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পর্যটন পুলিশের এসআই নাছির উদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আগত পর্যটকদের বলা হচ্ছে। যাদের মাস্ক নেই তাদেরকে টিকিট কাউন্টার থেকে মাস্ক সংগ্রহ করে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছি। পাশাপাশি পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ।
লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনা আসার পর গত শুক্রবার দুপুর থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আসা দর্শনার্থীদের করোনার বিধি-নিষেধ মানাতে সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। মুখে মাক্স ব্যবহারের পর আমরা ভিতরে প্রবেশ করতে দিই। প্রথম দিন শুক্রবার দুপুরে লাউয়াছড়া উদ্যান খুলে দেওয়ার পর বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি করা হয়। তবে এখন থেকে যদি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান স্বাভাবিকভাবে খোলা থাকে তাহলে সরকারের লাখ লাখ টাকা আদায় হবে এই পর্যটন কেন্দ্র থেকে। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শুক্রবার থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। শুধু লাউয়াছড়া নয়, জেলার বন বিভাগের সব পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র ১৯ আগস্ট খোলা হলেও বনবিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন পর্যটন কেন্দ্রগুলো ২০আগস্ট দুপুর থেকে খোলা হয়েছে।