কষ্টের রোদেলা দুপুর
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ মে ২০২২, ৫:২৩:৩৪ অপরাহ্ন

ঝরনা বেগম
‘কবি হৃদয়ের গভীর আকুতি কবিতা মাধ্যম। কবিতায় কবি স্বাচ্ছন্দ্যে তাঁর আপন ভুবন বলয়ে বিচরণ করেন। তিনি ভাষার সুশীল নির্যাসে নির্মাণ করেন কবিতার দেহ ইমারত। তাঁর গাঁথুনি জুড়ে থাকে ছন্দের উচ্ছ্বল মাধুর্য। মনোহারি কথামালা, স্বপ্নের সামিয়ানা। প্রতীকী চোখের চাহনী।’
সময়ের স্বাপ্নিক কবি কামরুল হোসেনের কষ্টের রোদেলা দুপুর কাব্যগ্রন্থের ফ্ল্যাপের কয়েকটি কথা আমার পছন্দ হলো-আর সেই কয়েকটি কথা দিয়েই শুরু করলাম ‘কষ্টের রোদেলা দুপুর’ কবিতার বইটির গ্রন্থালোচনা।
‘কষ্টের রোদেলা দুপুর’ কবিতার বইটি পড়ে আমি অবাক হয়ে যাই কামরুল হোসেন অনন্য অসাধারণ ভাষাশৈলী আর কথার জাদু দিয়ে কাব্যগ্রন্থটিকে সাজিয়েছেন শৈল্পিক সুষমায়। যেমন-বইটির উৎসর্গ পাতায় লিখেছেনÑ‘যৌবনে লালিত অপূর্ণ স্বপ্ন/জীবনের পড়ন্ত বেলায়/পূর্ণতা পেলো।/এ যে সুখেরই নিঃশ্বাস।/দুনিয়া (ছদ্মনাম) তোমার জন্য আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।’
বইটির ভেতরে মোট ৮০টি কবিতার মধ্যে ‘জয়িতা তুমি’ কবিতায় কবি লিখেছেনÑ‘বুকের দরজার কড়া নাড়ার শব্দে/ঘুম ভেঙে দেখি দাঁড়িয়ে আছো তুমি/নীল শাড়িতে বেশ সুন্দর লাগছে তোমাকে/চোখে চোখ না রেখেই বলছো ভীষণ ক্লান্ত আমি/অনেক হেঁটেছি আমিও, চলো হাঁটি এক সাথে/জয় করে নেবো সব আমাদের মতো করে/জয়িতা তুমি হাতে-হাত ধরে চোখাচোখি দু’জন/আবারও দেখা হবে নতুন কোনও প্রভাতে।’
আবার, ‘বাইশ বছর দেখিনা তোমায়’ কবিতার গল্প গাঁথুনি আরো মোহনীয়! ‘সেই চিরচেনা তুমি বাইশ বছর পরে/আজও সদ্য স্নান সেরে পবিত্র রমণী/যুগ-যুগান্তরে বাস করো কারো অন্তরে/ঘুমটার আড়ালে লুকায় সেই মুখখানি/আমি চিনি গো তারে চিনি/আমার সত্তায় তাঁর বসবাস হারিয়ে যায়নি।’
‘তোমাকে সাজাতে ইচ্ছে করে’ কবিতার দৃঢ়তা আরো গভীর ও রোমান্টিক। ‘কালো ফ্রেমের চশমা পরবো আজ/দারুণ মানাবে তোমায়/তাকাও তো আমার পানে!/লাজুক তুমি, না না কেউ নেই এইখানে/বাসন্তি রং শাড়ি পরাবো আর দেখবো শুধুই আমি/কতদিন এ চোখ দেখেনা তোমায়/এমন সাজে/যেনো স্বর্গ হতে এসেছো নামি।’
নান্দনিক শিল্প-ভাষায় রচিত একটি কবিতার বই ‘কষ্টের রোদেলা দুপুর’। আর এই চমৎকার শৈল্পিক কাব্যগ্রন্থটির স্বাপ্নিক রচয়িতা কামরুল হোসেন। তাঁর জন্ম ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামে। বাবা মরহুম মো. জমির উদ্দিন এবং মা রাবেয়া খাতুন। সুনামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে কবি আল এমদাদ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯১ সালে এস.এস.সি, ১৯৯৩ সালে সিলেট সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি, ১৯৯৫ সালে এম.সি কলেজ (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে বি.এ, ১৯৯৮ সালে একই কলেজ থেকে এম.এ পাশ করেন। ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাদেপাশা মুফজ্জিল আলী স্কুল এ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করে ২০০১ সালে লন্ডনে চলে যান। বর্তমানে লন্ডনের রয়েল মেইল-এ কর্মরত।
‘কষ্টের রোদেলা দুপুর’ সময়ের একটি রোমান্টিক কবিতার বই। পাঠককে মোহাবিষ্ট করে রাখার মতো ‘কষ্টের রোদেলা দুপুর’ বইটির প্রকাশক পান্ডুলিপি প্রকাশন।