কুশিয়ারায় আটকা পড়ছে সাগরের জাটকা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মে ২০২১, ৪:৩১:১২ অপরাহ্ন

আব্দুল আজিজ, রাজনগর থেকে :: মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা নদীতে সম্ভাবনা থাকলেও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে হচ্ছে না ইলিশ উৎপাদন। মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার সীমানা নির্ধারণকারী নদী কুশিয়ারায় ধরা পড়ছে জেলের জালে (ইলিশের বাচ্চা) ঝাটকা।
জালের প্রতি টানে কিছু না কিছু জাটকা পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখা গেছে, মৌলভীবাজার জেলার কাশিমপুরের কুশিয়ারা নদীর পাড়ে। জীবন জীবিকার তাগিদে জেলেরা সকাল থেকে বিভিন্ন স্পটে টানা জাল ফেলে মাছ আহরণ করে। এ সময় জাটকার সাথে অন্যান্য ছোট বড় মাছ ধরা পড়ছে।
মৎস্য বিভাগ বলছে, কুশিয়ারা নদী জাটকা অভিযানের আওতায় পড়েনি। তাই আমরা এখানে কোন অভিযান পরিচালনা করিনি। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
বিশেষেজ্ঞদের মতে, কুশিয়ারা নদীর সাথে পদ্মা নদীর সংযোগ রয়েছে। হয়তো সে সুযোগে মা ইলিশ স্রোতস্বিনী কুশিয়ারায় আসতে পারে।
কুশিয়ারা নদীপাড়ের ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম জানান, প্রতি মৌসুমে কুশিয়ারা নদীতে জাটকা ধরা পড়ে। এখানে দেখার কেউ নেই; তাই জেলেরা জাটকা ধরে বাজারে বিক্রি করে।
কুশিয়ারা নদীপাড়ের বাসিন্দা প্রবীণ শিক্ষক কাঞ্চন কুমার দাশ জানান, ‘ছোট বেলা কুশিয়ারা নদীতে অনেক ইলিশ ধরা পড়তো। তাজা ইলিশ খাওয়ার মজাই আলাদা ছিল। এখন অনেকটাই নেই। জেলেরা বাচ্চা ইলিশ (জাটকা) ধরে এজন্য বড় ইলিশ আর দেখা যায়নি।’
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনুমুখ গ্রামের সমুজ মিয়া, নজরুল মিয়া, বিনোদ সরকারসহ মোট ১০ জনের দল কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন স্পটে জাল ফেলে জাটকাসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। অনেক কষ্ট করে সারাদিন জাল টেনে ৪-৫ হাজার টাকার মাছ ধরতে পারেন। তা বাজারে বিক্রি করে কোনমতে তাদের সংসার চলে। জাটকা ধরার কথা স্বীকার করে তারা জানান, জাটকাসহ অন্যান্য মাছ ধরা পড়ে। জাটকা জালে উঠলে আর কিছু করার থাকে না। বাজারে এর চাহিদা বেশী।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য অফিসার এমদাদুল হক বলেন, এক মাস জাটকা নিধনের বিরুদ্ধে অভিযান ছিল। নতুন করে আরো ৬৫ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। হাট বাজারে অভিযান ঠিকই চলছে। মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদী আমাদের অভিযানের আওতায় পড়েনি। তবে প্রয়োজনে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।
তিনি আরো বলেন, বিগত দু’বছর ধরে কুশিয়ারা নদী ও বাংলাদেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে ইলিশের মৌসুমে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে। এ থেকে প্রমাণ হয় এখানে ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সমন্বিত উদ্যোগ নিলে ইলিশ উৎপাদন সম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।