চলছে না জীবনের ঘানি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জুলাই ২০২২, ৮:৫২:৪৩ অপরাহ্ন

জীবনযাত্রা অচল প্রায়। হিমশিম খাচ্ছে মানুষ জীবন চালাতে। বিপদে আছে সব স্তরের মানুষ, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত সবাই। করোনা মহামারি চলাকালে মানুষ সঞ্চয় ভেঙে জীবন চালিয়েছে। মহামারি স্থিমিত হয়ে যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে জিনিসপত্রের বাড়তি দাম। বিশ্বজুড়েই সব জিনিসের দাম লাগামহীন। আবার আবাসিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে অনেক স্থানে বেড়েছে বাসা ভাড়া। সঞ্চয় ভাঙার পর ক্রেডিট কার্ডে ধার করে দৈনন্দিন খরচ মেটাচ্ছেন অনেকে।
করোনা আর ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি বিপর্যস্ত। যে কারণে ব্যাহত হচ্ছে খাদ্য উৎপাদন। সৃষ্টি হয়েছে সরবরাহ-ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা। সব মিলিয়ে ক্রমবর্ধমান রয়েছে মূল্যস্ফীতির চাপ। ফলে বিশ্বজুড়েই জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে। সম্প্রতি বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে অব্যাহতভাবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বর্তমানে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বলেছে, এ চাপ সামনের দিনগুলোয় আরও বাড়তে পারে। এজন্য মানুষকে আয়-রোজগার বাড়াতে হবে। অন্যদিকে মিতব্যয়ী হতে হবে। কেননা বৈশ্বিক পরিস্থিতি প্রতিনিয়তই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশসহ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোয় চলতি বছর সামাজিক অস্থিরতার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের ওপরই চাপ বাড়ছে। তবে মধ্যম আয়ের দেশগুলো উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। মোট কথা খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এশিয়ার দেশগুলোর জন্য অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। ইতোপূর্বে বিশ্ব খাদ্যসংস্থা বলেছিলো, করোনা মহামারি থেমে যাওয়ার পর বিশ্বে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ওই সতর্কতা যেসব দেশ আমলে নিয়েছিল সেসব দেশে খাদ্য পরিস্থিতি কিছুটা ভালো। আশার কথা হলো আপৎকালীন তহবিল হিসেবে বহু দেশ খাদ্য মজুদ বাড়িয়েছে। বাংলাদেশও আমদানি এবং অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সংগ্রহ করে খাদ্যের মজুদ বাড়ায়। বর্তমানে সরকারের হাতে ১৬ লাখ টনের বেশি খাদ্যপণ্য মজুদ রয়েছে। একই সঙ্গে নিম্ন আয়ের মানুষকে নানাভাবে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। তবুও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
মোদ্দা কথা, বাংলাদেশে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির প্রভাবটা একটু বেশি বলেই মনে করা হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ মনিটরিং না থাকা। এখানে বাজারে যে-যার মতো দাম বাড়ায়। কোন জবাবদিহি নেই। কেউ কারসাজি করলেও শাস্তি হয় না। ফলে জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ালেও এর কোনো প্রতিকার হয় না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ।