জগন্নাথপুর ও নবীগঞ্জে ‘ডাকাত আতঙ্ক’ নির্ঘুম রাত বন্যার্ত মানুষের
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০২২, ৬:২১:৩৫ অপরাহ্ন

ডাক ডেস্ক ॥ বন্যার্ত এলাকায় ডাকাত আতঙ্কে গত কয়েকদিন থেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন বানভাসী মানুষ। ‘এই খবরদার খবরদার, আমরা আছি পাহারাদার’-এভাবে রাত জেগে এভাবে হুঁশিয়ারী দিচ্ছেন এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাত ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম কেটেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর ও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলাবাসীর।
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, জলদস্যুদের উৎপাত বন্ধে মানুষ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। প্রায় প্রতি রাত জলদস্যুদের হানা দেওয়ার খবর পাওয়া গেলেও এখনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পাড়ায় পাড়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে রাত জেগে পাহারা দিয়ে জলদস্যুদের প্রতিহত করা হচ্ছে।
হাওর পারের বাসিন্দারা জানান, বন্যা পরিস্থিতির শুরু থেকেই জগন্নাথপুর উপজেলার হাওরগুলোতে নৌকা যোগে জলদস্যুদের উৎপাত বাড়তে থাকে। বেশ কয়েকটি এলাকায় নৌকাযোগে গরু চুরির ঘটনা ঘটে। গত কয়েক দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জলদস্যুদের উপস্থিতি টের পেয়ে লোকজনের মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন জানমালের নিরাপত্তায় রাত জেগে দল বেঁধে পাহারার উদ্যোগ নেন। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ও নৌ টহল চালায়। তবে পুলিশের নৌযান ও পরিবহন খরচ না থাকায় নৌ টহল কম হচ্ছে।
জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা কাদির মিয়া বলেন, গতকাল রাত (মঙ্গলবার দিনগত) ১২ টার দিকে আমাদের গ্রামে নৌকা যোগে একদল জলদস্যু হানা দেয়। টের পেয়ে আমরা গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘খবরদার খবরদার’ বলে চিৎকার দিয়ে তাদের প্রতিহত করি।
চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, বর্ষা মৌসুমে হাওরপারের গ্রামগুলোতে ডাকাতি সহ জলদস্যুদের উৎপাত বৃদ্ধি পায়। এবারও উৎপাত মারাত্মক আকার ধারণ রয়েছে। বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও লোকজন জলদস্যু কর্তৃক হানার শিকার হচ্ছেন।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিজানুর রহমান বলেন, জলদস্যুর উৎপাত বন্ধে হাওরপারের গ্রামসহ উপজেলাব্যাপী আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকায় এলাকায় রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, ডাকাত ডাকাত বলে কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা এই সংকট কাটাতে কাজ করছি। নৌকা ও পরিবহন খরচ না থাকায় নৌটহল পর্যাপ্ত করা যাচ্ছে না।
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান,হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ যখন বন্যার পানিতে দিশেহারা, সেই সময় ডাকাত আতঙ্কে মানুষ রাত কাটাচ্ছে।
গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বানিউন গ্রামের শামীম আহমেদের বাড়িতে একদল ডাকাত হানা দেয়।
শামীম আহমেদ জানান,রাত প্রায় দেড়টার দিকে প্রবল বৃষ্টি ছিল। এ সময় ১০/১২ জনের একদল ডাকাত তার বাড়িতে হানা দেয়। ডাকাতদল তার ঘরের দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল ফোনে গ্রামে জানিয়ে দেন এবং চিৎকার শুরু করেন। ডাকাতদলের হানার সংবাদটি সাথে সাথে বিভিন্ন মসজিদের মাইকে প্রচার করা হলে ডাকাতদল নৌকাযোগে পালিয়ে যায়। ফলে ডাকাতি চেষ্টা তাদের ব্যর্থ হয়।
ইনাতগঞ্জ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জানান,খবর পেয়ে আমরা গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে যাই। ততক্ষণে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।