জ্ঞানবিজ্ঞানে মুসলিম মনীষীদের বিস্ময়কর অবদান
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জুন ২০২২, ৮:৩৪:৩৬ অপরাহ্ন

মাওলানা আব্দুল হান্নান তুরুকখলী
[পূর্ব প্রকাশের পর]
ইবনে সিনা ঃ ইসলামের চার শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর মধ্যে ইবনে সিনা একজন। ল্যাটিন ইউরোপে তিনি ‘অ্যাভিসেনা’ নামে পরিচিত। ইবনে সিনা বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসাবিদ ও দার্শনিক। চিকিৎসা শাস্ত্রে তাঁর অসাধারণ অবদানের জন্য তাঁকে আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্র ও চিকিৎসা প্রণালী এবং শল্য চিকিৎসার দিশারী মনে করা হয়। ইবনে সিনা ২৪ খানা ছোট এবং ২১ খানা সুবৃহৎ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। কেউ কেউ তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক বলে উল্লেখ করেছেন। চিকিৎসা বিষয়ে ‘কানুন ফিততিবব’ তাঁর একটি অনবদ্য সৃষ্টি। চিকিৎসা বিষয়ে এর সমপর্যায়ের কোন গ্রন্থ আজ পর্যন্ত দেখা যায় না। ড. ওসলার এ গ্রন্থকে চিকিৎসা শাস্ত্রের বাইবেল বলে উল্লেখ করেছেন। চিকিৎসা সম্বন্ধীয় যাবতীয় তথ্যের আশ্চর্য রকম সমাবেশ থাকার কারণে এ গ্রন্থটিকে ইউনানী ও জারবী চিকিৎসা শাস্ত্রের বৃহৎ সংহতি বলা চলে। ইবনে সিনা মাত্র ১৬ বছর সমকালীন জ্ঞানী-গুণী, চিকিৎসক ও মনীষীদের পড়িয়েছেন। ফলে সহজেই বোঝা যায় তিনি ছিলেন সে সময়কার বড় চিকিৎসক। কথিত আছে যে, ইবনে সিনা যখন ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তেন তখন অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো তার মানসপটে স্বপ্নের মতো ভাসত। তাঁর জ্ঞানের দরজা খুলে যেত। ঘুম থেকে উঠে তিনি সমস্যার সমাধান করে ফেলতেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি ‘আল-মুজমুয়া’ নামে একটি বিশ্বকোষ রচনা করেন। চিকিৎসাশাস্ত্রে তাঁর অবদান এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, ১৮ শতকের শেষ পর্যন্ত প্রায় ৭০০ বছর ধরে তাঁর লিখিত গ্রন্থগুলো অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ সহ ইউরোপের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পড়ানো হতো। চতুর্মুখী জ্ঞানের অধিকারী ইবনে সিনা জ্যোতির্বিজ্ঞানেও রেখেছেন অসামান্য অবদান। বিশুদ্ধতর গণনা করার উপযোগী যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের চিন্তাই ইবনে সিনাকে প্রথমে পেয়ে বসে। এই বিদ্যার প্রতি তাঁর এতই অনুরাগ ছিল যে, শেষ বয়সে তিনি গতিশীল পরিমাপ যন্ত্রের মতো সূক্ষ্ম গণনা করার উপযোগী একটি যন্ত্রও আবিষ্কার করেন। এর মাধ্যমে যেন যান্ত্রিক সংযোজন নিখুঁতভাবে হয়ে থাকে। তিনি কয়েকটি জ্যোতিষ্ক গবেষণাগার স্থাপন ছাড়াও হামাদানে কয়েকটি মানমন্দির নির্মাণ করেছিলেন। ইবনে সিনা ভার্নিয়ার স্কেলের মতো একটি স্কেল উদ্ভাবন করেন যা দিয়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ পরিমাপ করা যেত। তিনি গবেষণা করে গেছেন আপেক্ষিক গুরুত্ব নিয়ে। তিনি ব্যবহার করেছিলেন একটি ‘এয়ার থার্মোমিটার’ বা ‘বায়ু থার্মোমিটার’। ইরানের একটি প্রদেশ খোরাসানের শাসক ছিলেন ইবনে সিনার বাবা আব্দুল্লাহ। ইবনে সিনা ৯৮০ সালে বুখারার নিকটবর্তী আফশানাতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১০৩৭ সালে ইস্পাহানে মৃত্যুবরণ করেন।
বানু মুসা ঃ বানু মুসাকে বলা হয় জ্যোতির্বিদদের মধ্যে একজন বিস্ময়কর জ্যোতির্বিদ। কারণ আর কিছুই নয়, তার সময়ে তিনি যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। নবম শতকে বাগদাদের তিন মনীষীর একজন ছিলেন তিনি। এই তিনজনকে একত্রে বলা হতো মেশিনারি জগতের বিস্ময়। তাঁরা পিরমাপক যন্ত্রের আবিষ্কার করেছিলেন।
ইবনুল হাইসাম ঃ আমিরুজ জিল্লি ওয়ান নুর বা আলোছায়ার সম্রাট ইবনুল হাইসাম। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক হিসেবেও হাসান ইবনুল হাইসাম অধিক পরিচিত। তাঁর অনবদ্য রচনা হলো ‘কিতাবুল মানাজির’। যাতে রয়েছে সমগ্র মানবজাতির জন্য আলো-অন্ধকার ও দৃষ্টিবিদ্যার অসংখ্য অজানা তথ্য। এসব তথ্য দৃষ্টিবিদ্যার জগতে দিয়েছিল জ্ঞানের বিপ্লব। তিনিই সর্বপ্রথম অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আলোর সংজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি বলেন ‘আলো হলো এমন একটি উজ্জ্বল তরঙ্গরেখা যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে, যা সোজা পথে বিচ্ছুরিত হয়। বাতাসের মতো বাঁকা হয়ে ছড়ায় না।’ আলো যখন তার উৎস থেকে বের হয়ে কোনো স্থানে পতিত হয় বা বাধাগ্রস্ত হয়, তখন সেখান থেকে আবার বিপরীত দিকে বিচ্ছুরিত হয়। এখানে তাঁর আবিষ্কৃত গুরুত্বপূর্ণ থিওরি হলোÑআলো বিপরীত দিকে বিচ্ছুরিত হওয়ার সময় ওই স্থানের রং ও প্রতিচ্ছবিসহ বিচ্ছুরিত হয়। এটা তিনি প্রমাণ করেও দেখিয়েছেন। বহু গবেষকের মতে ইবনুল হাইসামের এই আবিষ্কারের সূত্র ধরেই পরবর্তীতে ক্যামেরা আবিষ্কৃত হয়েছিল। ক্যামেরার পূর্ণ নাম হলো ক্যামেরা অবস্কোরা। পরবর্তীতে তা আধুনিক ফটোগ্রাফিক ক্যামেরায় রূপান্তরিত হয়। আর এর নাম ক্যামেরাই থেকে যায়। বিভিন্ন ধরনের কাচের মাধ্যমে বস্তু বড় ও স্পষ্ট দেখায় তা তিনিই আবিষ্কার করেন। এ থেকেই চশমার সৃষ্টি হয়। তিনিই রিফলেকশন তত্ত্বের জনক। বহু বিজ্ঞানী ও গবেষক ইবনুল হাইসামকে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক বলেছেন। বিখ্যাত দৃষ্টিবিজ্ঞানী হাসান ইবনুল হাইসাম দৃষ্টিবিজ্ঞান, দর্শন, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা শাস্ত্র গণিত প্রভৃতি বিষয়ে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। ইবনুল হাইসাম ৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১০৪০ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর পুরো নাম আলী আল হাসান ইবনে আলী হাসান ইবনে আল হাইসাম। পশ্চিমা বিশ্বে তিনি আল-হাইজেন নামে সমধিক পরিচিত। তাঁর জন্মস্থান ইরান হলেও মিসরের কায়রোতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আল-রাজি ঃ আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি। তিনি ৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। আবু বকর আল-রাজি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও শল্য চিকিৎসাবিদ। তিনি দীর্ঘদিন জুন্দেশাহপুর ও বাগদাদের সরকারি চিকিৎসালয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তৎকালীন সময়ে তাঁর সুনাম এতই বিস্তৃতি লাভ করে যে, পশ্চিম এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপ থেকেও অগণিত রোগী তাঁর নিকট চিকিৎসার জন্য আসত। শল্য চিকিৎসায় আল-রাজি ছিলেন তৎকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। তিনি গ্রিকদের চেয়েও উন্নত পন্থায় ‘অস্ত্রোপচার’ করতেন। তাঁর রচিত গ্রন্থ দুই শতাধিক। এর মধ্যে শতাধিক চিকিৎসা বিষয়ক। বসন্ত ও হাম রোগ বিষয়ে তাঁর রচিত ‘আল-জুদারী ওয়াল হাসবাহ’ নামক গ্রন্থখানি এতই মৌলিক ছিল যে, খ্রিস্ট জগতের লোকেরা এর পূর্বে এ বিষয়ের বৈজ্ঞানিক আলোচনায় তেমন অগ্রগতি লাভ করতে পারেনি। তাঁর আরো একটি গ্রন্থের নাম ‘কিতাবুল মানসূরী’ (১০ খন্ডে সমাপ্ত)। এ গ্রন্থ দু’খানি চিকিৎসা শাস্ত্রের ইতিহাসে আল-রাজিকে চির অমর করে রেখেছে।
আল-বেতরুগি ঃ নূর আদ-দীন ইবনে ইসহাক আল-বেতরুগি। তিনি ইসলামের সোনালি যুগে মরক্কোয় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। তিনি ‘স্লেশিয়াল মোশন’ নিয়ে যুুগান্তকারী মতবাদ দিয়েছিলেন। তার সীমাবদ্ধতা থাকার পরও তিনি প্লেনটারি মোশন নিয়ে নিজস্ব থিওরি প্রদান করেছিলেন যা এখন ঠিক।
আল-সাইগ ঃ প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ, যুক্তিবিদ, দার্শনিক, পদার্থবিদ, মনোবিজ্ঞানী, কবি এবং বিজ্ঞানী আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে ইয়াহইয়া ইবনে আল-সাইগ। তিনি ইবনে বাজ্জাহ নামে বেশি পরিচিত। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। উদ্ভিদবিদ হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। আল-সাইগের কবিতাগুলোও ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
ওমর খৈয়াম ঃ অনেক ইতিহাসবিদদের মতে সুলতান মাহমুদের মৃত্যুর কিছুদিন আগে ওমর খৈয়াম জন্মগ্রহণ করেন। ওমর খৈয়ামের শৈশবের কিছু সময় কেটেছে অধুনা আফগানিস্তানের বলখ শহরে। সেখানে তিনি খোরাসানের অন্যতম সেরা শিক্ষক হিসেবে বিবেচিত ইমাম মোয়াফেফক নিশাপুরীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। দিনের বেলায় জ্যামিতি ও বীজগণিত পড়ানো, সন্ধ্যায় মালিক শাহর দরবারে পরামর্শ প্রদান এবং রাতে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি জালালি বর্ষপঞ্জি সংশোধন সবটাতে তাঁর নিষ্ঠার কোনো কমতি ছিল না। ওমর খৈয়াম দীর্ঘদিন গবেষণা করে ‘আত-তারিখে জালালি’ নামে একটি পঞ্জিকা উদ্ভাবন করেন। এ জন্য তিনি বিশ্বের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। এটি ষোড়শ শতাব্দীতে পোপ গ্রেগরী কর্তৃক প্রবর্তিত পঞ্জিকার চেয়ে বেশি নির্ভুল ও উন্নতমানের। জীবদ্দশায় ওমর খৈয়ামের খ্যাতি ছিল গণিতবিদ হিসেবে। তিনি প্রথম উপবৃত্ত ও বৃত্তের ছেদকের সাহায্যে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান করেন। ওমর খৈয়ামের আরো একটি বড় অবদান ইউক্লিডের সমান্তরাল স্বীকার্যের সমালোচনা, যা পরবর্তীতে অ-ইউক্লিডের জ্যামিতির সূচনা করে। ১০৭০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পুস্তক ‘মাকালাত ফি আল জার্ব আল মুকাবিলা’ প্রকাশিত হয়। এ পুস্তকে তিনি ঘাত হিসেবে সমীকরণের শ্রেণিকরণ করেন এবং দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধানের নিয়মাবলি লিপিবদ্ধ করেন। ওমর খৈয়াম জ্যোতির্বিদ হিসেবেও সমধিক পরিচিত।
আল-ফারাবি ঃ বিজ্ঞানী ও দার্শনিক আল-ফারাবির আসল নাম আবু নাসির মুহাম্মদ ইবনে ফারাখ আল-ফারাবি। ৮৭২ খ্রিস্টাব্দে তুর্কিস্তানের ফারাব নামক শহরের আল-ওয়াসিজ নামক গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আল-ফারাবির জন্ম। শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে তিনি দীর্ঘ ৪০ বছর বাগদাদে অবস্থান করেন। জ্ঞানের অন্বেষণে তিনি ছুটে গিয়েছেন দামেস্কে, মিশরে এবং দেশ-বিদেশের বহু স্থানে। পদার্থবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, যুক্তিশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রভৃতিতে তাঁর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে বিজ্ঞান ও দর্শনে তাঁর অবদান ছিল সর্বাধিক। তিনিই প্রথম ইসলামী বিশ্বকোষ ও মুসলিম তর্কশাস্ত্র রচনা করেন। পদার্থবিজ্ঞানে তিনিই ‘শূন্যতার’ অবস্থান প্রমাণ করেছিলেন। আল-ফারাবি ৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে দামেস্কে মারা যান।
আল-কিন্দি ঃ আবু ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল-কিন্দি ৮০১ খ্রিস্টাব্দে কুফা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কুরআন, হাদীস, ফিকাহ, ইতিহাস, দর্শন, ভাষাতত্ত্ব, রাজনীতি, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা প্রভৃতি বিষয়ের পন্ডিত ছিলেন। তাঁকে মুসলিম পেরিপ্যাটেটিক দর্শনের জনক বলা হয়। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ২৬৫ খানা গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর গ্রন্থগুলো বহুল পঠিত। তিনি ৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে মারা যান।
আল-বলখি ঃ মুসলিম জ্যোতির্বিদদের অগ্রগতি ছিল প্রশ্নাতীত। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই মুসলিম জ্যোতির্বিদদের সাফল্যের খোঁজ মিলেছিল। তাঁদেরই একজন জাফর ইবনে মুহাম্মদ আবু মাশার আল-বলখি। তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত পারশিয়ান জ্যোতির্বিদ, দার্শনিক, গণিতবিদ, তিনি আল-ফালাকি, আবুল মাশার, ইবনে বলখি নামেও পরিচিত। তাঁর কাজগুলো এখনো প্রশংসনীয়।
আল-বাত্তানি ঃ জাবির ইবনে সিনান আল-বাত্তানি ৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে মেসোপটেমিয়ার অন্তর্গত বাত্তান নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন অংক শাস্ত্রবিদ ও জ্যোতির্বিদ। তিনিই সর্বপ্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়েছিলেন যে, এক সৌর বছর ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড হয়। তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, সূর্যের আপাত ব্যাসার্ধ বাড়ে ও কমে। সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কেও তাঁর বক্তব্য ছিল সুস্পষ্ট। আল-বাত্তানি তাঁর নিজস্ব উদ্ভাবিত যন্ত্র দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন যে, সূর্য তাঁর নিজস্ব কক্ষপথে গতিশীল। তিনি জ্যোতির্বিদ্যা চর্চার জন্য নিজস্ব মানমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বহু বছর ধরে জ্যোতির্বিদ্যায় প্রচলিত ভুলগুলো সংশোধন করে এই শাখার অনেক সংস্কার ও উন্নতি সাধন করেন। পাশ্চাত্য ইতিহাসবিদরা তাঁকে উল্লেখ করেছেন আল-বাতেজনিয়াজ, আল-বাতেজনি, আল-বাতেনিয়াজ, ইত্যাদি নামে। এই মহান মনীষী ৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
ইবনুল নাফিস ঃ চিকিৎসাবিজ্ঞান ও আইনশাস্ত্রে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। ইবনুল নাফিস মানবদেহে রক্তসঞ্চালন পদ্ধতি, ফুসফুসের সঠিক গঠন পদ্ধতি, শ্বাসনালি, হৃৎপিন্ড, শরীরে শিরা-উপশিরায় বায়ু ও রক্তের প্রবাহ সম্পর্কে বিশ্বের জ্ঞানভান্ডারকে অবহিত করেন। তিনি মানবদেহে রক্ত চলাচল সম্পর্কে গ্যালেনের মতবাদের ভুল ধরেন এবং এ সম্পর্কে নিজের মতবাদ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করেন।
ইবনে ইউনুস ঃ অগ্রজ মুসলিম বিজ্ঞানীদের মতো ইবনে ইউনুসও সূর্যের পরিক্রমণ পথের ক্রান্তি-কোণের কৌণিক মান নির্ধারণ করেন আর যা পুরোপুরিই সঠিক। তারকারাজির গতিবিধির যে মাপ ও পরিমাণ ইবনে ইউনুস আবিষ্কার করেন তা অন্যান্য মুসলিম বিজ্ঞানীদের চেয়ে সঠিক। এটাকে ইবনে ইউনুসের গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার বলে মনে করা হয়। ইউরোপে ইবনে ইউনুস ১৮ শতাব্দী পর্যন্ত ছিলেন অখ্যাত। ১৮০৪ সালে তাঁর গবেষণা ও পঞ্জিকা পরিচিতি ফ্রেঞ্চ ভাষায় প্রকাশিত হয়। এরপর পশ্চিমা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তাঁর রচনার প্রতি গভীর মনোনিবেশ করেন। যার ফলে জ্যোতির্বিজ্ঞানে ইবনে ইউনুসের অবদান দৃশ্যপটে আসতে শুরু করে। ইবনে ইউনুসের পঞ্জিকার মাধ্যমে পশ্চিমের বিজ্ঞানীরা নানাভাবে উপকৃত হয়েছেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইবনে ইউনুসের করা মহাবিষুব, সংক্রান্তি, গ্রহসংযোগ, নক্ষত্রের সাময়িক অদৃশ্যকরণ যেমন চাঁদের পেছনে দূরের কোনো তারা বা নিহারিকা বা গ্রহের সম্পূর্ণ ঢাকা পড়ে যাওয়া সংক্রান্ত নানা পর্যবেক্ষণের দীর্ঘ গবেষণা রয়েছে যা সৃষ্টিজগতের বিভিন্ন পরিবর্তনের ওপর যথেষ্ট আলোকপাত করে। মূলত সময় নির্ণয়ে মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি সফলতা লাভ করে। তাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের জলঘড়ি ছিল। এদের মধ্যে ছিলেন মহান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইবনে ইউনুস, যিনি সময় নির্ণয়ের বিষয়টি সংশোধন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন। সময় নির্ণয়ের জন্য সর্বপ্রথম তিনিই পেন্ডুলাম ও দোলক ব্যবহার করেন। ইবনে ইউনুস ৯৫২ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১০০৯ খ্রিস্টাব্দে পরলোক গমন করেন।
ইবনে রুশদ ঃ অষ্টম থেকে ১২শ শতাব্দী হলো প্রাথমিক ইসলামী দর্শনের ব্যাপ্তিকাল। দার্শনিক আল-কিন্দি এর সূচনা করেন এবং ইবনে রুশদের হাতে এই প্রাথমিক সময়কালটির সমাপ্তি ঘটে। রেনেসাঁর যুগে ইউরোপে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া। ইবনে রুশদের পুরো নাম আবু আল ওয়ালিদ মুহাম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে রুশদ। পশ্চিমা বিশ্বে তিনি ‘অ্যাভেরোস’ নামে পরিচিত। স্পেনের কর্ডোভায় ১১২৬ খ্রিস্টাব্দে এক সম্ভ্রান্ত ও ধার্মিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ইবনে রুশদ। তাঁর দাদা আল মোরাভিদ রাজবংশের শাসনামলে কর্ডোভার প্রধান বিচারপতি ছিলেন। দর্শন ছাড়াও তিনি ইসলামী শরীয়াহ, গণিত, আইন, ওষুধবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। দর্শনশাস্ত্রে তিনি জনপ্রিয়তা পান অ্যারিস্টটলের লেখাগুলো অনুবাদ করে। ইবনে রুশদ ১১৯৮ সালে মারাকাশে পরলোকগমণ করেন।
ইবনে খালদুন ঃ চৌদ্দ শতকের একজন মুসলিম দার্শনিক, ইতিহাসবেত্তা, সমাজবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ ইবনে খালদুন। আত্মজীবনী অনুযায়ী তাঁর কাজ দুই ভাগে বিভক্ত-ঐতিহাসিক দর্শন এবং ইসলামিক দর্শন। তাঁর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হচ্ছে ‘আল-মুকাদ্দিনা’। ইবনে খালদুনকে আধুনিক ইতিহাস রচনা, সমাজবিজ্ঞান এবং অর্থনীতির অন্যতম একজন জনক বলা হয়। তাঁর পুরো নাম আবু জায়েদ আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মদ বিন খালদুন আল-হাদরামী। তিউনিসিয়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৩৩২ খ্রিস্টাব্দে ইবনে খালদুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন ইসলাম ধর্মবিষয়ক একজন পন্ডিত। বাবার কাজেই তিনি শৈশবে শিক্ষালাভ করেছেন। খুব অল্প বয়সেই তিনি কুরআন, হাদীস, আইন, বক্তৃতা, ব্যাকরণ, দর্শন, সাহিত্যে পারদর্শী হয়ে উঠেন। ১৪০৬ খ্রিস্টাব্দে ইবনে খালদুন কায়রোতে মৃত্যুবরণ করেন।
আল-গাজ্জালি ঃ পুরো নাম আবু হামিদ মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ আল-গাজ্জালি আত-তুসী। তিনি ছিলেন মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক, পন্ডিত এবং ধর্মতত্ত্ববিদ। তাঁর চিন্তাধারাকে মুসলিম ধর্মতত্ত্বের বিবর্তন বলে ধরা হয়। কারণ সেই সময়ে মুসলিম দার্শনিকদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন গ্রিক দর্শন দিয়ে প্রভাবিত। কিন্তু তিনি প্রচলিত দার্শনিক চিন্তাধারার বাইরে এমন কিছু দার্শনিক মতবাদ প্রচার করেন যা সমকালীন আর কারো পক্ষে সম্ভব ছিল না। তিনিই সর্বপ্রথম ইসলামের দার্শনিক চিন্তাধারাকে স্বতন্ত্র রূপ দিতে সক্ষম হন। সর্বোপরি গ্রিক দর্শনের প্রভাব থেকে তিনি ইসলামকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন বলে তাঁকে ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’ বলে অভিহিত করা হয়। ইমাম গাজ্জালি ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। মানুষের আত্মিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভের জন্য নৈতিক শিক্ষা যে অত্যাবশ্যক তা তিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। তিনি সুফীবাদকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি ইসলামী অনুশাসন সমূহের দার্শনিক ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ের উপর অনেক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। ‘ইহইয়াউ উলুমুদ দ্বীন’ তাঁর রচিত অনন্য গ্রন্থ। ইমাম গাজ্জালী ১০৫৮ সালে খোরাসানের তুস নগরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১১১১ সালে খোরাসানের তুস নগরীতেই ইন্তেকাল করেন।
আলী তাবারী ঃ আলী তাবারী চিকিৎসা বিষয়ে কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন। তন্মধ্যে ‘ফিরদাউস আল-হিকমাহ ফিত-তিব্ব’ বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বর্গ নামক গ্রন্থটিই সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। এ গ্রন্থটিকে আরবী চিকিৎসা শাস্ত্রের প্রথম বিশ্বকোষ বলা যেতে পারে। এতে চিকিৎসার ধারা ও পদ্ধতি, ওষুধ তৈরির প্রক্রিয়া, গাছ-গাছড়ার গুণাগুণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ইবনুল আরাবী ঃ ইবনুল আরাবী ছিলেন বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাসে প্রথম পোস্ট মর্ডাণ। তাঁর ‘ফুসুলুল হিকাম’ ও ‘ফুতুহাতুল মাক্কাহ’ গ্রন্থ দুটিকে এখনও ইসলামের আধ্যাত্মিক এবং দার্শনিক চিন্তার সর্বোচ্চ স্থান দেয়া হয়। ইবনুল আরাবীর দর্শন না জানলে ইসলামী দর্শন সম্পর্কে অবগতি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তিনি আল-ফারাবি বা ইবনে রুশদের মতো আধুনিকতাবাদী ছিলেন না। তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক দূরকল্পী এবং জ্ঞানের অস্পষ্ট বিষয়গুলোতে উস্তাদ। শায়খুল আকবর বলেন, ‘আপনি যদি মুসলিম হন এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার প্রেষণা থাকে তাহলে ইবনুল আরাবীর দর্শন পড়া কর্তব্য। না পড়াটা হবে দুঃখজনক।’ অসামান্য জ্ঞানসম্পন্ন এই দার্শনিক ১১৬৫ খ্রিস্টাব্দে স্পেনে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১২৪০ খ্রিস্টাব্দে সিরিয়ার দামেস্কে মারা যান।
আল-মুকাদ্দাসী ঃ আল-মুকাদ্দাসী ‘আহসান আত-তাকাসীম ফিল মারিকাতিল আকালীম’ নামে একখানা বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। তিনি বিশ বছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। তাঁর গ্রন্থে তিনি সেসব দেশের ভৌগলিক মূল্যবান তথ্যাদি তুলে ধরেন। এবং এতে একটি মানচিত্র সংযোজন করেন।
ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ ঃ ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ আল-হামাবীর ‘মুজামুল বুলদান’ নামক গ্রন্থখানি ভূগোল শাস্ত্রের একখানা প্রামাণ্য গ্রন্থ। এতে তিনি প্রত্যেক স্থানের ঐতিহাসিক, জাতি-তাত্ত্বিক ও প্রাকৃতিক বিষয়ের বিবরণ দিয়েছেন এবং ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঘটনাসমূহের উল্লেখ করেছেন।
ইবনে জারীর তাবারী ঃ বিশুদ্ধ ও প্রামাণ্য তাফসীর ও ইতিহাস প্রণয়নে ইবনে জারীর তাবারীর অবদান সর্বাবিধ। তাঁর তাফসীর ও ইতিহাস গ্রন্থকে বিশুদ্ধতম তাফসীর ও ইতিহাস বলা হয়ে থাকে। কুরআনের তাফসীর প্রণয়নে তিনি অগাধ পান্ডিত্য ও সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ শক্তির পরিচয় দেন। তিনি তাফসীর সম্পর্কীয় প্রচুর হাদীস সংগ্রহ করেন এবং তার উপর ভিত্তি করে তাঁর তাফসীর গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। এ কারণে এ তাফসীর গ্রন্থখানি অত্যন্ত প্রামাণ্য ও নির্ভরযোগ্য। তিনি এ তাফসীর গ্রন্থে ধর্মীয় নীতি ও আইন সম্পর্কীয় ব্যাপারেও পর্যালোচনা করেছেন। তাঁর তাফসীর গ্রন্থখানির নাম ‘জামিউল বায়ান ফী তাফসীরিল কুরআন’ এবং ইতিহাস গ্রন্থখানির নাম ‘তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক।’
আহমদ ইবনে তুলুন ঃ মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। আর মানুষের সমাজে বেঁচে থাকার জন্য পাঁচটি মৌলিক অধিকার অতি জরুরি। চিকিৎসা এর মধ্যে অন্যতম। চিকিৎসার জন্য অতি প্রয়োজন চিকিৎসক ও হাসপাতাল। মানুষের জন্য এই হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন আহমদ ইবনে তুলুন। তিনি ছিলেন তুলুনিদ সাম্রাজ্যের একজন শাসক। পৃথিবীর ইতিহাসে নবম শতকে মিশরে সর্বপ্রথম হাসপাতাল ব্যবস্থার সূচনা হয়। আহমদ ইবনে তুলুন ৮৭২ সালে মিশরের রাজধানী কায়রোতে আহমদ ইবনে তুলুন হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরবর্তীতে হাসপাতাল ব্যবস্থার ধারণা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। অর্থাৎ আধুনিক বিশ্বে চিকিৎসার জন্য এই যে হাসপাতাল ব্যবস্থা তা চালু হয়েছে মুসলমানদের হাত ধরেই। পরবর্তীতে বাগদাদে আরো নতুনভাবে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এভাবে ধীরে ধীরে গোটা বিশ্বে হাসপাতাল ব্যবস্থা চালু হয়।
ফাতেমা আল-ফিরহি ঃ সারাবিশ্বে এখন কত কত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেখান থেকে দেয়া হচ্ছে কত শত সনদ। শিক্ষা ব্যবস্থায় উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা সর্বপ্রথম বুঝতে পারেন মুসলিমরাই। কারণ পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুসলিমদের হাতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ প্রদানের কার্যক্রমও প্রথম সূচিত হয়েছে মুসলিমদের মাধ্যমেই। আফ্রিকা মহাদেশের মরক্কোয় প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছিল। ৮৫৯ সালে প্রিন্সেস ফাতেমা আল-ফিরহি মরক্কোর ফেজেতে বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সর্বপ্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরবর্তীকালে প্রিন্সেস ফাতেমার বোন মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর পুরো কমপ্লেক্সটির নাম হয় ‘কারুইয়িন বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং মসজিদটির নাম রাখা হয় ‘আল-কারুইয়িন মসজিদ।’
তথ্য নির্দেশ ঃ (১) বাংলাদেশ প্রতিদিন ঃ ১ জুন-২০১৮, ২১ সেপ্টেম্বর-২০১৮, ১২ জুলাই-২০১৯, ৯ আগস্ট-২০১৯।
(২) ইসলাম শিক্ষা ঃ নবম-দশম শ্রেণি, এনসিটিবি, ঢাকা। পরিমার্জিত সংস্করণ-ডিসেম্বর ২০০৮।
(৩) আলোকমালা (নির্বাচিত প্রবন্ধ)-মাওলানা আব্দুল হান্নান তুরুকখলী। প্রকাশকাল-২০১৪।