ড্রেন পরিষ্কারে সিসিকের ৪টি এস্কেভেটর কাজ করছে
টানা বৃষ্টিতে সিলেট নগরে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে মানুষ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মে ২০২২, ৬:১৬:২২ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ষা আসার আগেই গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন খাল ও ড্রেনের পানি উপচে রাস্তায় ওঠায় গতকাল শুক্রবার ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। ভারী বর্ষণে নগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে। টানা বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর।
বৃষ্টির পানিতে রাস্তা জলমগ্ন হওয়ায় গতকাল শুক্রবার জুমআর নামাজ পড়তে ঘর থেকে বের হওয়া মুসল্লিরা পড়েন দুর্ভোগে। ঘণ্টা ও হাঁটু পানি মাড়িয়ে অনেক মুসল্লিকে যাতায়াত করতে হয়েছে। সুবিদ বাজার এলাকার লাভলী রোডের বাসিন্দা আব্দুল গাফ্ফার বলেন, লাভলীরোড এর রাস্তার ড্রেনের সংস্কার কাজ করছে সিসিক। এই কয়েক দিন থেকে বৃষ্টি হলেই পুরো রাস্তায় হাঁটু পানি লেগে থাকে। পানি চলাচলের রাস্তা না থাকায় মানুষকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, জুমআর নামাজ পড়তে দরগাহ মসজিদে এসেছিলেন। আসার সময় নগরীর অনেক স্থানে রাস্তায় পানি মাড়িয়ে এসেছেন। জলাবদ্ধতার জন্য রাস্তায় যানচলাচলও কম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অতিবৃষ্টির ফলে নগরীর লামাবাজার, পাঠানটুলা শিবগঞ্জ, সেনপাড়া, সোনারপাড়া, শাহজালাল উপশহর, মেন্দিবাগ, তোপখানা, কাজলশাহ, লালাদীঘির পাড়, আম্বরখানা এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির ফলে বাসাবাড়ি ও সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
নগরের সুরমা নদীসংলগ্ন এলাকা মেন্দিবাগ, কুশিঘাট, তোপখানা, কালীঘাট, শেখঘাট এলাকায় দেখা গেছে নদীর পানি ভরাট অবস্থায় রয়েছে। পানি আরও বাড়লে ওই এলাকাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি প্রবেশ করবে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা বলেন, সুরমা ও কুশিয়ারার পানি এখনো বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি, তবে নদীর পানি বাড়ছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র প্রভাবে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাব পড়েছে সিলেটে। গত কয়েকদিন থেকে টানা বর্ষণে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিসিক কাজ করে যাচ্ছে।
সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, সিসিকের ৪টি এক্সেভেটর কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার কুমারগাওঁ এলাকায় এস্কেভেটর দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া, দক্ষিণ সুরমাসহ বিভিন্ন জায়গায় পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে রাখা স্থান এবং গাভিয়ার খালসহ বিভিন্ন জায়গায় সিসিকের লোকজন কাজ করছে। সিসিকের যে কোন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে আমাদের অবগত করলে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ১২ ঘণ্টায় ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছে এবং ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়ার পরও ২১ মে পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
তবে এ মাসে গড় বৃষ্টিপাত ৫৮১ মিলিমিটার হওয়ার কথা। সে হিসেবে ৩২ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। এরআগে গত মাসেও ২৫ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।