বিশ্ব নদী দিবসের আলোচনায় বক্তারা
নদী হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে

ডাক ডেস্ক ॥ ‘নদীর নিজস্ব ভাষা আছে, আছে আপন কথা। আনন্দে সে হাসে, ছলাৎ ছলাৎ শব্দ করে। বেদনায় সে কাঁদে, দুর্ব্যবহার করে। কখনো হয়ে ওঠে প্রতিশোধপরায়ণ। আবহমান কালের মানুষেরা নদীর সে ভাষা বুঝতে পারতো, নদীর প্রতি তাই তাদের আচরণও ছিল ইতিবাচক। কিন্তু, সময়ের পরিবর্তনে মানবজাতির চিরসখা সে নদীর কথা ভুলতে বসেছে, নদীর সাথে প্রতিদিন করছে দুর্ব্যবহার। দখল, দূষণ আর ভরাটের মাধ্যমে মানুষ নদী হত্যার নগ্ন খেলায় মেতে উঠেছে। তাই নদী হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করে শাস্তি প্রদানের কোন বিকল্প নেই।’

সিলেটে ‘নদীর কথা, নদীর ব্যথা’-শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় বক্তারা একথাগুলো বলেন।
আন্তর্জাতিক নদী দিবস-২০২২ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর ইমজা মিলনায়তনে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও সারি নদী বাঁচাও আন্দোলন যৌথভাবে এ আলোচনার আয়োজন করে।
সুরমা রিভার ওয়াটার কিপার্স আব্দুল করিম কিমের সভাপতিত্বে ও সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল-হাদীর সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন-সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক ও গোয়াইনঘাটের পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান লেবু, সিলেট ইতিহাস ও ঐতিহ্য ট্রাস্ট এর সভাপতি ডাক্তার মোস্তফা শাহ জামান চৌধুরী বাহার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগীয় প্রধান আ.ফ.ম জাকারিয়া, শাবিপ্রবির সহকারী অধ্যাপক ড. বেলাল আহমদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী দ্বীপন, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোয়াইনঘাটের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জামাল উদ্দিন, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় পরিষদের সহ-সভাপতি এডভোকেট মো. হাসান আহমদ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, পুলিশ লাইন্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ব্যুরো প্রধান শাহ্ দিদার আলম নবেল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মোহাম্মদ তাজিম উদ্দিন, দৈনিক জৈন্তা বার্তার সম্পাদক ফারুক আহমদ, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বেলাল, সারি নদী বাঁচাও আন্দোলন এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মনজুর আহমদ প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমদ, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদের সভাপতি মাহফুজুল কিবরিয়া মাহফুজ, গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. ফখরুল ইসলাম, আলোকিত গোয়াইনঘাটের সম্পাদক মো. আমিন উদ্দীন, এ.কে নিউজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন, পুষ্পকলি সম্পাদক শাহিদ হাতিমী প্রমুখ।

সভায় পিয়াইন নদীর ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে আলোকপাত করতে গিয়ে বক্তারা বলেন, এককালের প্রমত্তা পিয়াইন নদী এখন ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। উত্তর-পূর্ব সিলেটের জীবন ও অস্তিত্বের সাথে জড়িত এ নদী বর্তমানে দখল, দূষণ আর ভরাটের উৎসবে পরিণত হয়েছে। ১৯৫৪ সাল থেকে এ নদী খননেন জন্য স্থানীয় অধিবাসীরা দাবি জানালেও এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ নদীর পর্যটন ও খনিজ সম্পদ থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও নদীকে বাঁচানোর কোন উদ্যোগ নেই। বক্তারা অবিলম্বে এ নদী খননের প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।