নামাজে নিষ্ঠা ও একাগ্রতা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ৭:০২:৩৫ অপরাহ্ন

রফিকুর রহমান লজু
মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ খুব বড় এবাদত। ঈমানের পর নামাজ হলো সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ এবাদত। প্রথম পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের নির্দেশ ছিলো। দয়ালু আল্লাহ প্রিয় নবী (সা.) এর সুপারিশে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ধার্য্য করেছেন। নবী করিম (সা.) বলেন, আল্লাহতায়ালার অধিকতর প্রিয় হলো নামাজ। তাই মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য নামাজ পড়া ফরজ ও জরুরি। নবী (সা.) আরো বলেছেন, নামাজ হলো বেহেস্তের চাবি।
সুস্থ-অসুস্থ সকলকেই নামাজ পড়তে হয়। কষ্ট করে হলেও, অসুবিধার মধ্যে থাকলেও নামাজে ছাড় নেই, নামাজ আদায় করতেই নির্দেশ। নামাজ আত্মসমর্পণ স্বরূপ। কার কাছে আত্মসমর্পণ-দুনিয়া ও আখেরাতের মালিক আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ। আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়তে বিনয়ের সঙ্গে নামাজ আদায় করলে প্রাপ্তি ও পুরস্কারও অনুরূপ মর্যাদার হয়। তাই অসুস্থ, রোগাক্রান্ত, অঙ্গহীন, বিকলাঙ্গ বা অন্য কোনো ভাবে কষ্টভোগী হলেও যাদের অন্তরে আল্লাহর শাস্তির ও দোযখের ভয়াবহতার ভয় আছে তারা রোগযন্ত্রণা ও কষ্ট নিয়েও নামাজ আদায় করেন শুধুমাত্র আল্লাহর প্রিয় ও নেক বান্দা হওয়ার আশায়। আমাদের আশপাশে আমরা দেখি রোগ যন্ত্রণায় কাতর, আতুড়, হাত-পা বিহীন, বিকলাঙ্গরা আল্লাহর নির্দেশ মতো নামাজ আদায় করতে কত না কষ্ট করেন। আমাদের যান্ত্রিক ও অতি ব্যস্ততার কারণে এসব মানুষের এবাদতের প্রতি খেয়াল করিনা। অথচ তাদের খোদা ভক্তি, ইবাদত-নামাজের নিষ্ঠা থেকে আমাদের সতর্ক হওয়ার দরকার আছে, শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন আছে। এতে আমরাই লাভ বান হবো, উপকৃত হবো এবং মৃত্যুর পরের জীবনে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হিসেবে পাবো শান্তির অনন্ত জীবন ও বেহেস্ত। একজন রোগাক্রান্ত নামাজীর কষ্ট করে নামাজ পড়া দেখে উপরোক্ত ভাবনাগুলো উঁকি মারছে মনের গহীনে।
জরুরি কোনো প্রয়োজন না হলে ইদানিং খুব একটা বের হই না, কোথাও যাই না। বয়সও হয়েছে। শরীরও তেমন ভালো নয়। যাক গত কয়েকদিন পূর্বে একটা কাজে সন্ধ্যার পরে জিন্দাবাজারে যেতে হয়েছিল। অজু ছিল তাই এশার ওয়াক্তে বায়তুল আমান জামে মসজিদে নামাজ আদায় করলাম। একটু বিলম্ব হয়ে যাওয়ায় মসজিদের ভিতরে ঢুকতে পারলাম না। সংকীর্ণ বারান্দায় প্রথম কাতারে জায়গা পেয়ে তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে যাই। বারান্দা বেশি সংকীর্ণ হওয়ায় প্রতি কাতারে মাত্র দু’জন দাঁড়ানোর ব্যবস্থা। প্রথম কাতারে ডান দিকে আরেকজন নামাজী মুসল্লী ছিলেন। বয়স সত্তরোর্ধ হবে। তিনি অত্যন্ত কষ্ট করে কিন্তু একাগ্রচিত্তে নামাজ পড়লেন। তার ব্যারাম কি? অসুবিধা কি? জানি না। দেখলাম তিনি না পারেন সোজা হয়ে দাঁড়াতে, না পারেন রুকু করতে, না পারেন সেজদাহ করতে। নিয়ম মাফিক বৈঠকেও বসতে পারেন না। নামাজের সময় ছাড়াও তিনি এমনিই দাঁড়াতে পারেন না। তার দাঁড়ানোর ধরণ হলো ভাঁজ হয়ে যাওয়া কুঁজ থেকে আরো কুঁজ হয়ে অর্ধেক থেকেও বেশি ঝুঁকে থাকা। এ অবস্থায়ই কোনো রকমে রুকু করেন। তার রুকু এবং দাঁড়ানো দুটোই একই রকমের। রুকুতে আছেন না দাঁড়ানো আছেন বুঝার উপায় নেই। সেজদার সময় কপাল মাটিতে লাগে কিনা, তবে বাম পা পিছনের দিকে বামপাশে বিশ্রিভাবে ছড়ানো থাকে। সেজদাহ ও বসা প্রায় একই কায়দার। এমনভাবে সেজদাহ আদায় করেন বুঝা যায় না। সেজদাহে আছেন না বসায় আছেন। অত্যন্ত কষ্ট করে, কষ্ট সহ্য করে নামাজ পড়লেও কোনো রকম নড়াচড়া নেই, উসখুস নেই। উহ আহ নেই। ধ্যান মগ্নতায় ধ্যান ভাঙ্গারও আলামত নেই। এভাবে ধুঁকে ধুঁকে তিনি নামাজ শেষ করেন। ইমাম সাহেব সালাম ফিরানোর পর পর তিনি কুঁকড়ে কুঁকড়ে দ্রুত চলে গেলেন সুন্নাত ও বিতর না পড়েই।
আমি বাকি নামাজ সুন্নাত ও বিতর শেষ করে আমার গন্তব্যে ইদ্রিস মার্কেটে ফয়েজ কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। লোকটির আল্লাহর প্রতি ভক্তির নমুনা অন্তরে গেঁথে রইলো। সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে লোকটিকে আবার দেখতে পেলাম। সিঁড়ি থেকে নেমেই ডানদিকে টুপি-আতরের একটি ছোট দোকান আছে। দেখলাম এই দোকানের একেবারে কাছাকাছি হয়ে লোকটি আগের মতোই শারীরিক অসুবিধা নিয়ে নামাজ পড়ছে। আমার ইচ্ছে হয়েছিলো তার সঙ্গে কথা বলার। কিন্তু সময়াভাবে পারলাম না।
লোকটিকে ভিক্ষুক বা ঐ পর্যায়ের মনে হলো না। আবার অবস্থাসম্পন্নও মনে হলো না। পরনে লুঙ্গি ও শার্ট ছিলো। আল্লাহর বান্দা পরকালের ভয়ে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সীমাহীন অসুবিধা নিয়ে দারুণ কষ্ট সহ্য করে নামাজ পড়ছেন। লোকটির কষ্ট দেখে নিজের নামাজ পড়ার অবস্থার কথা স্মরণ হয়। আল্লাহ সর্বশক্তিমান দয়া করে তওফিক দিয়েছেন তাই কোনো কষ্ট ছাড়া আরামে আরামে যথারীতি রুকু সেজদাহ আদায় করে নামাজ পড়তে পারছি। ঐ লোকটির অবস্থায় পড়লে কি নতিজা হবে ভেবে আঁতকে উঠি।
শারীরিক বিভিন্ন অসুবিধা নিয়ে মুসল্লীদের নামাজ পড়তে দেখি। কোমরে ব্যথা বা হাঁটুর অসুবিধায় কেউ কেউ মাটিতে বসে কেউবা চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করেন। তাদের অসুবিধা তেমন ঘোরতর নয় বলে তারা কষ্ট অনুভব করেন না-শুধু বসে নামাজ পড়েন। কিন্তু নানা রকম অসুবিধা ও কষ্ট সহ্য করে নামাজ পড়েন-এ রকম অনেক মুসল্লীকে প্রায়ই দেখা যায়। তাদের কষ্ট অনেকটা পরিশ্রমের মতো। অঙ্গহীন বা অঙ্গহানীর কারণেও এমন অবস্থা হয়।
আমাদের মহল্লার মসজিদে (রায়নগর সোনারপাড়া জামে মসজিদ) মাঝে মাঝে স্রেফ এক পাওয়ালা ও এক হাত ওয়ালা একটি লোকের আগমন ঘটে। লোকটির একটি পা ও একটি হাত একেবারে নেই। ‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে উঁকি মারে আকাশের মতো সে এক পায়ে দিব্যি দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, এক পা’ দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলতে পারে। সে নামাজ পড়ার সময় এক পায়ের উপর ভর করে যথারীতি রুকু, সেজদাহ, বৈঠক আদায় করে নামাজ পড়ে। এমনি করে নামাজ পড়তে তার কিছু পরিশ্রম হয় বলে মনে হয়। তা সত্ত্বেও সে মনোযোগ সহকারে আল্লাহর আদেশ ফরজ নামাজ আদায় করে থাকে।
আরেকজন নামাজীকে এই আমাদের মসজিদেই পেয়েছি। তার মাজায় ও পায়ে অসুবিধা ছিল। তিনি স্বাভাবিক কায়দায় দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারতেন না। তিনি বাম পা’টি সামনের দিকে লম্বা করে মাটিতে ফেলে রেখে ভীষণ অসুবিধা ও অস্বস্তি নিয়ে কোনো মতে নামাজ আদায় করতেন। বসার মধ্যেও নিচ দিকে ঝুঁকে আর রুকু করতে অসুবিধা হতো। আর এক পা’ সামনে লম্বা করে রেখে সেজদাহ করতে আরো বেশি কষ্ট হতো। তার শরীর মোটা থাকায়ও কষ্ট পেতেন। এমন অসুবিধার মধ্যেও তিনি নামাজে খুব মনোযোগী ছিলেন। আল্লাহর দয়ায় তিনি এখন স্বাভাবিকভাবে নামাজ পড়েন। তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
একজন বিকলাঙ্গ ভিক্ষুকের কোমর থেকে নিচদিক একেবারে চিকন এবং অনুভূতিহীন। সে ছেঁচড়িয়ে ও তার শরীর নিয়ে একটু সরতে পারেন না। সে কাঠের বাক্স দিয়ে তৈরি টানাগাড়ি বা ঠেলা গাড়ি দিয়ে অন্যের সাহায্যে ভিক্ষা করে জীবন চালায়। নামাজের ওয়াক্ত হলে মসজিদে নামাজ আদায় করে। তার সঙ্গী তাকে শূন্যে তুলে বসিয়ে দিলে সে বসে বসে নামাজ পড়ে নেয়। সে যথারীতি রাকাত বেঁধে জমাতে শরীক হয়। হাত দিয়ে আকারে ইঙ্গিতে রুকু, সেজদাহ আদায় করে। নামাজে তার বিনম্রভাব ও একাগ্রতা লক্ষ্যণীয়।
আমাদের মসজিদের একজন মুরুব্বি মুসল্লী অতি সম্প্রতি ইন্তেকাল করেছেন। বয়সের কারণে এবং শরীর মোটা-ভারী হওয়ায় চলা-ফেরায় অসুবিধা হতো। শ্বাসকষ্টও ছিল। নিজস্ব গাড়িতে মসজিদে আসতেন। এসব অসুবিধা সত্ত্বেও নামাজে ছিল পাওবন্দি ও একাগ্রতা। মোটা শরীর নিয়ে রুকু-সেজদাহ করে নামাজ পড়তেন। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।
পূর্বে দেখা যেতো যাদের মাজায়-কোমরে ব্যথা তারা মাটিতে নামাজের কায়দায় বসে নামাজ আদায় করতেন। ইদানিং চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার রীতি চালু হয়েছে। বহু নামাজীকে এই সুবিধা নিয়ে নামাজ পড়তে দেখা যায়। কষ্টের দরুণ একটু আরামে ফরজ আদায়ের নিমিত্ত তারা এমন করে থাকেন। কিন্তু কেউ কেউ আছেন তারা দিব্যি চলাফেরা করেন, গাড়ি-হোন্ডা ড্রাইভ করেন, সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে পারেন, নামতে পারেন। তারা অপারগতা না থাকা সত্ত্বেও সামান্য বাহানায় চেয়ারে বসার রীতি গ্রহণ করেছেন। আবার দেখা যায় কেউ কেউ আছেন দাঁড়িয়ে যথারীতি নামাজ পড়তে পারেন। কিন্তু মাঝে মাঝে তারা চেয়ারেও বসেন। বৈচিত্র্যের জন্য তারা এমন করেন কি না কে জানে। এদের নিয়ে প্রশ্ন উঠে তারা যদি এক ওয়াক্ত বা দ্ ুওয়াক্ত নামাজ দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে পড়তে পারেন তা হলে অন্য ওয়াক্তে কেন পারবেন না? এদের মধ্যে আবার কেউ কেউ আছেন যারা সহজে বহনযোগ্য ফৌল্ডিং ছোট চেয়ার সঙ্গে রাখেন। তারা যেন সাব্যস্থ করেই রেখেছেন সব সময় চেয়ারে বসেই নামাজ আদায় করবেন।
অনেক অসহায় ও দান খয়রাত প্রার্থী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরান (রহ.) মাজারে অবস্থান করেন। অনেক অন্ধ ভিক্ষুকও রয়েছে মাজারে মাজারে এবং মসজিদকে ঘিরে। এ রকম প্যারালাইসিস রোগী, বিকলাঙ্গ বা অঙ্গহীন অসংখ্য ভিক্ষুকও রয়েছে। অনেকে মনে করেন এরা নামাজকে বেশি গুরুত্ব দেয় না। অথচ তাদের অসুস্থতা, চলৎশক্তিহীনতা বা অঙ্গহীনতাকে তারা প্রদর্শন করে আর্থিক ফায়দা লুটতে চায়। অনেকের ক্ষেত্রে এটা সত্যি হলেও একেবারে ঢালাওভাবে শতভাগ সত্য নয়। যাদের মনে খোদা ভয় আছে, খোদা প্রেম আছে, তারা এ রকম করে না। ভিক্ষা করলেও নামাজের ওয়াক্তে তারা দ্রুত নামাজে শরীক হয়।
সৌদিআরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে নামাজের সময় পবিত্র হেরম শরীফের আশেপাশে অসংখ্য ভিক্ষুকের সমাবেশ দেখা যায়। শরীরের উচা-মোটা গড়ন এবং গায়ের কালছে রং দেখে আন্দাজ করা যায় এরা সুদান-সোমালিয়ার অধিবাসী। তাদের মধ্যে বিচিত্র রকমের খুঁড়া-আতুড়-লেংড়া দেখা যায়। তাদের গালে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে চিরা-কাটা-ফাড়া জখমের বীভৎস চিহ্ন আছে। ভিক্ষা বা রোজগারের কৌশল হিসেবে তারা এগুলোর প্রদর্শন করে হজ্বব্রত পালনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত নামাজীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। নামাজের নির্দিষ্ট সময়ে এসে তারা মসজিদে আসা যাওয়ার পথে অবস্থান নেয়। নামাজ শেষে মুসল্লীদের কাছ থেকে ভিক্ষা বা দান গ্রহণ করে তারা তড়িৎ সরে পড়ে পুলিশের ভয়ে। চাকরি সূত্রে মক্কা নগরীতে অবস্থানকারী দেশী ভাইদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ঐ কাল আদমীরা বেশি রোজগারের জন্য মানুষের কৃপা লাভের আশায় নিজ সন্তানদের ছোটবেলায় নিজ হাতে কাটা-ফাড়া করে বীভৎস রূপ দেয়। একই উদ্দেশ্যে বড়রাও নাকি নিজ হাতে নিজেদের শরীরে চাকু চালায়। মানুষের দেহে-চেহারায় এইরূপ বীভৎসতা দেখে ভীষণ ভয় লাগে। ঘটনার বিবরণ শুনে কলিজায় মোচড় অনুভব করি।
এবার এক যুবকের কথা। শারীরিক কোনো অসুবিধা নেই তার। নামাজের প্রতি মসজিদে এসে জমাতে নামাজ আদায়ের প্রতি সে অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। সূরা-কেরাত-দোয়া-দুরূদ সহিভাবে দরদ দিয়ে সে পড়ে। অত্যন্ত দরদ দিয়ে মনোযোগী হয়ে সে নামাজ পড়ে। কিন্তু কি একটা বিদঘুটে রোগে সে আক্রান্ত। পরিবার থেকে উন্নত চিকিৎসা, ঝাড়-ফুক সব কিছু করা হয়েছে। কাজ হয়নি।
নামাজের মধ্যে হঠাৎ সে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যায়। বিদঘুটে শব্দ করে, বাজে কথা বলে এবং এক সময় জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়। মুখে ফেনা আসে, কোন কোন সময় বেহুশের মধ্যে প্রশ্রাব ছুটে যায়। এ রকম অবস্থায় কিছু সময় থাকার পর আপনা আপনি সুস্থ হয়ে উঠে। অসুখের কারণে অভিভাবকরা তাকে ঘরে নামাজ পড়তে বলেন। কিন্তু সে মসজিদে আসবেই। নামাজের প্রতি, মসজিদের প্রতি তার টান, কে বলতে পারে তার মাগফেরাতের উসিলা হতে পারে।
আরেক যুবক। আমাদের মহল্লারই। সে প্রতিবন্ধী সুঠাম দেহ ও ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী। নিয়মিত নামাজী এবং খুব মনোযোগ ও নিষ্ঠার সঙ্গে সে নামাজ আদায় করে। তবে প্রতিবন্ধীসুলভ সীমাবদ্ধতার কারণে নামাজের নিয়মরীতি ও আহকাম-আরকান সম্পর্কে সে তেমন সজাগ ও সচেতন নয়। মসজিদে তাবলিত জামাত এলে বা মসজিদ ভিত্তিক জামাতের সাপ্তাহিক দ্বীনি ও দাওয়াতি আলোচনায় কিংবা জুমমাবারে খতিব সাহেবের বয়ানে সে নিয়মিত হাজির থাকে। সে এসব আলোচনার ধৈর্যশীল ও সার্বক্ষণিক সিরিয়াস শ্রোতা। এসব কিছু প্রতিবন্ধী যুবকের মাফীর উসিলা হোক।
আমরা মুসলমান সকলেরই একান্ত উমেদ বা আকাক্সক্ষা শেষ বিচারের দিন মহান আল্লাহপাক, সর্বশক্তিমান আল্লাহর কৃপা লাভ করা এবং চিরস্থায়ী জীবনে বেহেস্তে স্থান পাওয়া। এই লক্ষ্যে মহান আল্লাহতায়ালা আমরা সুস্থ-অসুস্থ সকলকে তার নির্দেশ অনুযায়ী অপার নিষ্ঠার সঙ্গে নামাজ আদায় ও অন্যান্য ইবাদত পালন করার তৌফিক দান করুন।