নির্বিষ বোলিং, হতাশাময় দিন পার করলো বাংলাদেশ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ৫:৫১:৪২ অপরাহ্ন

অনলাইন ডেস্ক::
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ভালো সংগ্রহ পাওয়ার স্বস্তি উবে গেলো দিনশেষে। স্বাগতিক বোলারদের নির্বিষ বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে দুই পাকিস্তানি ওপেনার রীতিমত হেসেখেলে ব্যাটিং করলেন, নির্বিঘ্নে পার করলেন দ্বিতীয় দিন। ইতোমধ্যে অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন অভিজ্ঞ আবিদ আলী। ৮৪ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ের মারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটির দেখা পান এই ব্যাটসম্যান। অন্যদিকে তার সঙ্গী অভিষিক্ত আবদুল্লাহ শফিক খেলছেন দুর্দান্ত।
৩৩০ রানের বিপরীতে খেলতে নেমে বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিংয়ে বিনা উইকেটে ১৪৫ রান তুলে পাকিস্তান। ১৮০ বলে ৯৩ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন আবিদ আলী। তার সঙ্গে ১৬২ বলে ৫২ রান নিয়ে আছেন শফিক। স্বাগতিকদের থেকে এখনো ১৮৫ রান পিছিয়ে আছে সফরকারীরা।
দ্বিতীয় দিন হাসান আলীর দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। ৪ উইকেটে ২৫৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা স্বাগতিকরা অলআউট হয় ৩৩০ রানে। হাসান একাই নেন ৫ উইকেট।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে সাবধানী খেললেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সাবলীলভাবে ব্যাট করেছে পাক দুই ওপেনার। ৮৪ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ের মারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটির দেখা পান অভিজ্ঞ আবিদ আলী। অন্যদিকে তার সঙ্গী অভিষিক্ত আবদুল্লাহ শফিক খেলেছেন দুর্দান্ত। ব্যক্তিগত ৯ রানেই ফিরতে পারতেন শফিক। ১৩তম ওভারে তাইজুল ইসলামের করা বল সরাসরি গিয়ে আঘাত হানে তার প্যাডে। লিটনের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। তবে তাইজুলের পক্ষে থেকেও আসেনি আবেদন, করেননি রিভিউও। ফলে সে যাত্রায় রক্ষা পায় আবদুল্লাহ শফিক।
এর আগে আলোক স্বল্পতার কারণে বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ৫ ওভার খেলা কম হয়। এ জন্য শনিবার দ্বিতীয় দিন খেলা শুরু হয়েছে ১১ মিনিট আগে। প্রথম দিন টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ২০৬ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে তুলেন লিটন-মুশফিক। ৮৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ৮২ ও লিটন কুমাস দাস ১১৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করেন।
মুশফিক-লিটনে আরও একটি সুন্দর দিনের অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দিনের দ্বিতীয় ওভারেই লিটনকে হারালো বাংলাদেশ। এদিন ৮টি বল খেলেছেন লিটন, রান করেছেন এক। পাকিস্তানের পেসার হাসান আলীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এর মধ্য দিয়ে পঞ্চম উইকেটে মুশফিক–লিটনের ৪২৫ বলে ২০৬ রানের জুটিও ভেঙে গেল। লিটনের প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংসটি শেষ হলো ১১৪ রানে। ২৩৩ বলে ১১টি চার ও একটি ছক্কায় এই রান করেন তিনি।
লিটনের বিদায়ে উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে যোগ দেন অভিষিক্ত ইয়াসির আলী রাব্বি। কিন্তু নিজের টেস্ট অভিষেকটি রাঙাতে পারলেন না রাব্বি। ব্যক্তিগত ৪ রান হাসান আলীর দুর্দান্ত পেসে বোল্ড হন তিনি।
দ্বিতীয় দিনে নিজের অষ্টম সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল মুশফিক। কিন্তু নড়বড়ে নব্বইয়ের ঘরে সাজঘরে ফিরতে হল বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলা মুশফিককে। ৯৯তম ওভারে ফাহিম আশরাফের বল মুশফিকের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে। ২২৫ বলে ৯১ রান করে আউট হন মুশফিক।
মুশফিক ফেরার পর দলের হাল ধরেন মেহেদী-তাইজুল। ১০৬তম ওভারে সাজিদ খানকে চার মেরে দলকে ৩০০ রানের দেখা পাইয়ে দেন মেহেদী হাসান। দলীয় ৩০৪ রানে তাইজুলকে ফেরালেন শাহিন আফ্রিদি। ২৮ বলে ১১ রান করে ফিরলেন তাইজুল।
স্বীকৃত ব্যাটসম্যানের সঙ্গ ছাড়াই ইতিবাচক ব্যাট করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাইজুলের সঙ্গে ২৮ রানের জুটি ভেঙে যাওয়ার পর আবু জায়েদকে নিয়ে লড়াই করেন এ স্পিন অলরাউন্ডার। শেষদিকে হাসান আলীর জোড়া শিকারে ফিরলেন জায়েদ (৮) ও ইবাদত (০)। ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
পাকিস্তানের হয়ে ৫১ রানে ৫ উইকেট নেন হাসান আলী। ২টি করে উইকেট শাহিন আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফ। সাজিদ খান নেন ১ উইকেট।
বাংলাদেশ দল:
সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস (উইকেটকিপার), ইয়াসির আলী, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, ইবাদত হোসেন।
পাকিস্তান দল:
আব্দুল্লাহ শফিক, আবিদ আলী, আজহার আলী, বাবর আজম (অধিনায়ক), ফাওয়াদ আলম, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার), ফাহিম আশরাফ, নওমান আলী, হাসান আলী, শাহীন শাহ আফ্রিদি, সাজিদ খান।