পরিবেশ ও শিশু জাহিদা চৌধুরী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুলাই ২০২২, ৬:৫৬:১৬ অপরাহ্ন

শিশুর বিকাশে পরিবেশের প্রভাব অতি গুরুত্বপূর্ণ। শিশু যখন ভূমিষ্ট হয় তখন তারা থাকে নিষ্পাপ। শিশুকে পূর্ণাঙ্গ রূপে গড়ে তুলতে হলে দরকার উন্নত পরিবেশের।
প্রকৃত পক্ষে শিশু যে পরিবেশে জন্মগ্রহণ করে তখন সে থাকে ঐ পরিবেশের পারিপার্শ্বিকতায় আবদ্ধ। যে পরিবেশে শিশু সহজ স্বাচ্ছন্দে বেড়ে উঠবে সে পরিবেশকেই তাদের অনন্য মেধার অধিকারী করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। তার আগ্রহ কৌতুহলকে মেনে নিয়ে তাকে স্বাধীনভাবে সবকিছু জানার সুযোগ দিতে হবে। শিশুদের জানার আগ্রহ কৌতুহল মেটানোর জন্য শিশুদের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব বড়দের।
শিশু অন্যের ভাব ভঙ্গিমা আচরণ অনুকরণ করতে পছন্দ করে। শিশুদের অনুকরণ করাকে কখনোই দোষারূপ করা উচিত নয়। এ সময় মা-বাবার উচিত তাদের সামনে ভালো আচরণ করা।
তারা স্বাভাবিক প্রকাশগুলি তাকে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।
শিশু বয়সেই নৈতিকবোধ এর সূচনা হয়। এ বয়সে তাদের চাওয়া ও জানার আগ্রহ বেশি থাকে বলে শিশুর আগ্রহের প্রতি মনোযোগ হওয়া উচিত। শিশুরা নানা-রকম পশু-পাখি গাছপালা ভালোবাসে। তাই বাড়ির আঙ্গিনায় ফল ও ফুলের গাছ থাকলে মন মানসিকতা সুন্দর হয়ে গড়ে উঠবে। গাছপালা তাদের কৌতুহল মেটাতে সাহায্য করে।
শিশুরা স্বাধীনভাবে খেলাধুলা করতে চায়। খেলার মাধ্যমে শিশুরা অন্যের কিছু জানতে পারে। খেলাধুলায় শিশুরা সহজে নিয়ম শৃঙ্খলা শিখে নিতে পারে।
শিশুদের জোর করে কিছু শেখাতে গেলে তাদের মনের ওপর চা পড়ে। ফলে তাদের আগ্রহ কমে যায়। শিশুদের আগ্রহকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।
অন্যের ছোট জিনিসের প্রতি তাদের আকর্ষণ দেখা যায়। এ সময় তাদের হাতে নানা রকমের ছবি আঁকার বই, কাগজ রং পেন্সিল দিলে তারা খুবই আগ্রহী হয় এবং আপন মনে তখন তারা নানা ধরনের ছবি আঁকা আঁখি করতে থাকে। তাদের এ আগ্রহকে বাড়িয়ে দিতে নানা রকমের রঙ্গীন ছড়ার বই প্রয়োজন। যার মাঝে শিশু আনন্দ খুঁজে পাবে।
শিশুরা ছড়া বলতে এবং শুনতে ভালোবাসে। ছড়া শিখতে ও ছবি আঁকতে আঁকতে ধীরে ধীরে বই খাতার প্রতি মনোযোগি হয়ে উঠে, আর তখনই বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে।
বিদ্যালয়ে তারা পরিচিত হয় বাইরের জগতের সাথে। বিদ্যালয়ে সঙ্গী সাথীদের মাঝে গড়ে উঠে বন্ধুত্ব। ভ্রাতৃত্বের সেতু বন্ধনে জীবন এগিয়ে চলে, এভাবেই গড়ে উঠে বিশ্ব মানবতার পারিপার্শ্বিক সম্পর্ক।
শিশুর মধ্যে তখন আচরণে অনেক পরিবর্তন আসে। সুন্দর পৃথিবী তাদের আমোদ আনন্দ দেয়। মনের আনন্দে তখন তাদের কাছে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে উঠে।
শিশুর স্বাভাবিক আচরণে তখন যদি তারা বাধাগ্রস্ত হয় তাহলে সে শিশু হয়ে ওঠে অশান্ত এবং জেদি। শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশে বড়দের আগ্রহী হওয়া উচিত যাতে শিশুরা আপন-মনে তাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে।
শিশুর স্বাভাবিক ও মানসিক বিকাশ হতে হবে আনন্দদায়ক ও অর্থপূর্ণ। শিশুকে মমতাপূর্ণ স্বাচ্ছন্দ পরিবেশে বেড়ে উঠতে সহায়তা করতে হবে। শিশুর কোমল মনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে। একমাত্র পরিবেশের প্রভাবই শিশুর বাড়ন্ত বয়সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়ক হতে পারে।
সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ জীবন হিসেবে মানুষকে গড়ে তুলতে হলে উন্নত পরিবেশে গড়ে তুলতে শিশুকে সেই পরিবেশে ছেড়ে দিতে হবে, যেথায় পরিস্ফুটনে হবে তার নবজীবনের কুঁড়ি।