পাঠ্যবইয়ে ভুলের দায় কে নেবে?
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:৫৬:৫২ অপরাহ্ন

একেএম শামসুদ্দিন
বেশ কয়েকদিন ধরে পাঠ্যবইয়ের ভুল নিয়ে দেশের সব সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ২০২৩ সালে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে লেখা সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে হুবহু অনুবাদ করে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) প্রতিটি বইয়ের জন্য ডজনেরও ওপর লেখক ও সম্পাদককে জড়িত করা হয়। লেখক কর্তৃক বইয়ের পাণ্ডুলিপি লেখা সম্পন্ন হওয়ার পর সম্পাদকরা সেই পাণ্ডুলিপি একেবারে প্রথম থেকে শেষ অবধি পরীক্ষা করে দেখেন। আমার বিশ্বাস-এরপর লেখক ও সম্পাদক নিশ্চয়ই একসঙ্গে বসে পাণ্ডুলিপির এক এক অধ্যায় করে আলোচনা করেন এবং ভুলত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করে নেন। অতঃপর সেসব পাণ্ডুলিপি জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নিরীক্ষা কমিটিতে পাঠানো হয় আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। শুধু তাই নয়, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিষয় বিশেষজ্ঞ’ ও শিক্ষকদের কাছেও মূল্যায়ন করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এতজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি পাণ্ডুলিপি দেখার পরও কিছু ভুল হয়তো থাকতে পারে। ‘টাইপিং মিসটেকের’ জন্য কিংবা প্রুফ রিডারের ‘গাফিলতির’ জন্য কোনো কোনো শব্দের বানান ভুল থেকে যেতে পারে। এগুলোকে ছোটখাটো ভুল বলা যায়; কিন্তু তাই বলে অন্যের লেখা হুবহু চুরি করে তা চালিয়ে দেওয়া কোনো ছোটখাটো ভুলত্রুটি নয়। আশ্চর্যের বিষয়, এত বিজ্ঞজনের মধ্যে একজনের চোখেও কি পাঠ্যবইয়ের এ চৌর্যবৃত্তি ধরা পড়ল না! পাঠ্যবইয়ে ভুল থাকার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভুল বিষয়ে শিক্ষা দিতে পারি না। এটি রীতিমতো অন্যায়। ইতঃপূর্বে এ ধরনের ভুলের জন্য জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে আদালতে পর্যন্ত দাঁড়াতে হয়েছে। ভেবে অবাক লাগে, এতজনের চোখ এড়িয়ে এ পাঠ্যবই ছাপা হলো কী করে? শুধু কী তাই, সে বই আবার সারা দেশের শিক্ষার্থীদের হাতেও পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
এতক্ষণ একটি পাঠ্যবই প্রকাশের জন্য যে নিয়ম বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা উচিত, সে কথা বলা হয়েছে। এখন দেখতে হবে, আমাদের জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠপুস্তক বোর্ড সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে কিনা। সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞানের এ বইটি যদি কেউ পড়ে থাকেন, তাহলে তারা একবাক্যে স্বীকার করবেন যে, পুরো প্রক্রিয়া এখানে অনুসরণ করা হয়নি। এ পাঠ্যবইয়ের সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, ‘বইয়ের কোনো কোনো অধ্যায়ের অংশবিশেষ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নিয়ে হুবহু অনুবাদ ব্যবহার করা হয়েছে। বইয়ের এ নির্দিষ্ট অংশটুকু এবং ওয়েবসাইটটির লেখাটুকু তুলনা করে অভিযোগটি আমাদের কাছে সত্য বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। ‘বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, আলোচিত অংশটুকু লেখার দায়িত্বে আমরা দুজন না থাকলেও সম্পাদক হিসাবে এর দায় আমাদের ওপরও বর্তায়, সেটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি।’ এ দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি পড়ে বুঝতে সমস্যা হয় না যে, সম্পাদক হিসাবে তাদের যে দায়িত্ব ছিল, তারা তা সঠিকভাবে পালন করেননি। তারা বরং লেখকদের যোগ্যতা ও বিশ্বস্ততা নিয়ে এতটুকু সন্দিহান ছিলেন না। অনুমান করা যায়, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান লেখকদের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল ছিলেন বলেই হয়তো ভালো করে পাণ্ডুলিপি পড়েও দেখেননি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, পাণ্ডুলিপি যদি ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হতো, তাহলে লেখকের এ চৌর্যবৃত্তি সহজেই ধরা পড়ত।
তারা যে লেখকদের সততার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন, তাদের স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতির মধ্যেও এর আভাস পাওয়া যায়। তারা বলেছেন-একই পাঠ্যপুস্তক রচনার সঙ্গে অনেকে জড়িত থাকেন, যাদের শ্রম ও নিষ্ঠার ফলাফল হিসাবে বইটি প্রকাশিত হয়। বিশেষত জাতীয় পাঠ্যপুস্তক রচনার ক্ষেত্রে এসব লেখকের কাছ থেকেই এক ধরনের দায়িত্বশীলতা আশা করা হয়। সেখানে কোনো একজন লেখকের লেখা নিয়ে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তা আমাদের টিমের জন্য হতাশার এবং মন খারাপের কারণ হয়।
তবুও ভালো, কাউকে বিভ্রান্ত না করে এ দুজন অন্তত তাদের ভুলের দায় স্বীকার করে নিয়েছেন। অপরদিকে সরকারের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি প্রথমেই এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার যে চেষ্টা করেছেন, তা সত্যিই হাস্যকর। সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের চৌর্যবৃত্তি নিয়ে চারদিকে যখন সমালোচনা শুরু হয়, তখন আমাদের শিক্ষামন্ত্রী সে সমালোচনার ভেতর সরকার পতনের ইঙ্গিত খুঁজে পেয়েছেন। তিনি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে বিরোধীপক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, কোনো ইস্যু না পেয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে সরাতে কেউ কেউ নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের ওপর ভর করার চেষ্টা করছেন। তাদের নিয়ে করুণা করা যায়।
‘পাঠ্যপুস্তক নিয়ে তারা যা বলছেন, তা মিথ্যাচার; সেটি মেনে নেওয়া যায় না। কেউ কেউ বই না পড়ে না দেখে কেউ একজন বলেছেন, তা শুনে অপরাজনীতি, হিংসা, বিদ্বেষ নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছেন।’ দীপু মনির এরূপ বিবৃতি দায় এড়ানোর প্রয়াস বলেই প্রতীয়মান হয়। সমস্যাটিকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা বলেই মনে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দীপু মনি ভুল ও দোষীদের চিহ্নিত করতে দুটি কমিটি গঠন করার কথা ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে একটি কমিটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত হবে। সেখানে স্বাস্থ্য, ধর্মীয়, পেশাগত বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। অন্য কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি, দুই মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত হবে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কমিটি পাঠ্যবইয়ে ভুলভ্রান্তি, তথ্য বিকৃতি, ধর্মীয় উসকানিসহ বিতর্কিত অন্যান্য বিষয় চিহ্নিত করে সংশোধনের জন্য সুপারিশ করবে। অন্য কমিটি এ ভুল ও বিতর্ক উসকে দিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠপুস্তক বোর্ডের কারও ইচ্ছাকৃত তৎপরতা আছে কিনা, তা তদন্ত করবে।
খবরের কাগজে বেরিয়েছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সংশ্লিষ্ট সদস্য এনজিও এবং বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই তৈরির কাজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। উল্লেখ্য, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কাজ হলো তদারকি করা, লেখা নয়। পাণ্ডুলিপি রচনায় তাদের কেবল সার্বিক সহায়তা দেওয়ার কথা। কিন্তু ওই ব্যক্তি তার কাছের লোকজনকে পাঠ্যবই রচনার কাজে নিয়োজিত করেছে। বই রচনার জন্য যে লেখক প্যানেল তৈরি করা হয়েছে, সেখানে অতিমাত্রায় বামপন্থিদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। লেখক প্যানেল যখন তৈরি করা হয়, সে প্যানেলের অনুমতি নেওয়ার কথা মন্ত্রণালয় থেকে। এ ছাড়া পাণ্ডুলিপির খসড়া তৈরি করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অনুমতির জন্য পাঠানোর কথা। এসব কোনো কিছুই অনুসরণ না করে পাণ্ডুলিপি সরাসরি মুদ্রণের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি শিক্ষামন্ত্রী নিজে স্বীকার করেছেন যে, প্রথম পাণ্ডুলিপি দেখার পর নাকি তিনি কিছু কিছু ছবি ও রচনা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার নির্দেশও উপেক্ষিত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত হওয়ার পরও পাঠ্যবইয়ের ভুলভ্রান্তি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে, তিনি সে সমালোচনার মধ্যে সরকার পতনের ষড়যন্ত্রের গন্ধ কোথায় পেলেন? আমাদের দেশে এখন একটি বিষয় প্রচলিত হয়ে গেছে, তা হলো-কোথাও কোনো অঘটন ঘটলে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া। এটি খুব খারাপ প্র্যাকটিস। কোনো কোনো বিষয়ে অন্যায়ও বটে। সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি ও ষড়যন্ত্রের গন্ধ খোঁজা হয়। এজন্য অনেক সময় দেখা যায়, এসব খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে প্রকৃতি দোষী ব্যক্তি পার পেয়ে যান। আবার দেখা যায়, তদন্তে বা অনুসন্ধানে দলীয় কেউ বা ক্ষমতার বলয়ের কাছাকাছি কোনো ব্যক্তি দোষী প্রমাণিত হলে তখন বিষয়টি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় অথবা সে তদন্ত রিপোর্ট আর আলোর মুখ দেখে না। অতএব, ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ না চাপিয়ে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
পাঠ্যবইয়ে ইসলাম ধর্মকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে, সেটি যে করেই হোক দূর করতে হবে। তা না হলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছবে। তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়, পাঠ্যবইয়ে ইচ্ছাকৃতভাবেই এ ধরনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তাহলে যেসব ব্যক্তি জড়িত, তাদের জরুরি ভিত্তিতে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। যে লেখক চৌর্যবৃত্তির আশ্রয় নিয়েছেন, তাকে চিহ্নিত করার কিছু নেই। তিনি এমনিতেই ধরা খেয়ে গেছেন। দোষী লেখককে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। এখানে শুধু লেখককে দোষ দিলে হবে না। সম্পাদকরাও কম দায়ী নয়। এ দায় থেকে মন্ত্রণালয়ও মুক্ত নয়। সম্পাদনার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, ভবিষ্যতে তাদের এ ধরনের কাজ দেওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। আগামীতে পাঠ্যবই রচনায় লেখক ও সম্পাদকের কাজের সমন্বয় ঘটাতে হবে।
পাঠ্যবই প্রণয়নে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করার কথা-তা যেন সততার সঙ্গে পালিত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের ঘটনায়, দোষ অপরের কাঁধে না চাপিয়ে ‘শর্ষের ভেতর ভূত’ খুঁজতে হবে। দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে এমন কোনো অফিস, সংস্থা কিংবা সংগঠন নেই, যেখানে দুর্নীতি প্রবেশ করেনি। এসব স্থানে সবাই যে দুর্নীতিতে জড়িত, তা নয়। তবে দেখা গেছে, ওইসব জায়গায় এমন অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ পদ ও পদবি দখল করে আছেন, যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। ভাবতে অবাক লাগে, বাংলাদেশের পাঠ্যবই রচনায় খবরের কাগজে উল্লেখিত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সেই সংশ্লিষ্ট সদস্য কোন্ শক্তি বলে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিকে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই তৈরির কাজে অন্তর্ভুক্ত করলেন? খবরের কাগজে প্রকাশিত এ তথ্যটি যাচাই করে যদি সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভুল শিক্ষা দিতে চাই না। গোঁজামিলের শিক্ষা নিয়ে তারা বিভ্রান্ত হোক, তা আমরা কামনা করি না। আমরা চাই না, তারা ভুল পথে পরিচালিত হোক। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তাদের হাতে। দেশ পরিচালনার ভার তাদের কাঁধেই বর্তাবে। মনে রাখতে হবে, তাদের মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা।