বনভোজনে আনন্দ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মার্চ ২০২২, ৩:২১:২৫ অপরাহ্ন

সুফিয়ান আহমদ চৌধুরী
রাত জেগে জেগে কেটে যায় আদনানের। মনে কত যে খুশি। আজই বনভোজনে জাফলং যাবে। সে ভাবে, সেখানে গিয়ে কতই না মজা হবে। ভাবতে ভাবতে বিছানা ছেড়ে ওঠে সে।
তারপর বাথরুমে ঢোকে সে। হাত-মুখ ধুয়ে আসে। নাস্তা করতে বসে টেবিলে। নাস্তা শেষ করে কাপড়-চোপড় পাল্টে নেয়। সবশেষে, বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিদায় নেয়।
পাড়ার ক্লাব থেকে বনভোজনের এই আয়োজন করেছে। ক্লাবের অফিসে গিয়ে দেখে সবাই জড়ো হয়েছে। বাসও রেডি। একে একে সবাই বাসে উঠে বসে। বাসের ছাদে বসানো মাইকে দেশের গান বাজতে থাকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বনভোজনের বাস জাফলংয়ের পথে রওয়ানা দেয়। বাস চলে আর বাসের ভেতর সবাই আনন্দ-উল্লাস করতে থাকে। গান, ছড়া, কবিতা, কৌতুক পাঠে সময় চলে যেতে থাকে। কেউ কেউ বাস থেকে প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য দেখে। সেসব দেখে যেন চোখ দুটো জুড়িয়ে যায়।
বাসের ভেতর মুহূর্তে আড্ডা জমে ওঠে। আর ছুটে চলে বনভোজনের বাস। সে কি ভালোলাগা কাজ করে সবার মাঝে। বাসের জানালা দিয়ে ফুরফুরে বাতাসে চুল উড়তে থাকে। এভাবে হাসি-খুশি মুখে সবাই বাসে সময় কাটায় আর জাফলংয়ে পৌঁছার প্রতিক্ষা গোনে।
একটা সময় বাস এসে থামে জাফলং। এখানে দারুণ সব পিকনিক স্পট আছে। একে একে বাস থেকে নামে সবাই। ব্যাগপত্র রাখে সবাই। একটু পর শুরু হয় বনভোজনের রান্না-বান্না। মাটি খুড়ে তৈরি করা হয় চুলো। আনা হয় লাকড়ি। সব কিছু বার্বুচিকে বুঝিয়ে দিয়ে জাফলংয়ের দৃশ্য দেখতে বের হয় সবাই।
দলবেঁধে ঘোরাঘুরি করে। ছবি তোলে, আনন্দ উপভোগ করে। বনভোজনে এসেই সামিয়ানা টাঙানো হয়েছে। সেখানে মাইকও লাগানো হয়েছে। রং-বেরং রঙিন কাগজে সাজানো হয়েছে সামিয়ানার চারপাশ। কেউ কেউ বসে বসে বিশ্রাম নেয়। খেলাধুলা, গানের আসরে জমে ওঠে বনভোজন।
রান্না-বান্না শেষ হতেই শুরু হয় খাওয়া-দাওয়া। গরম গরম খাবারে ধুম ছুটে যায়। তারপর বিকেল গড়িয়ে আসতেই পাথর ও পানিতে দাঁড়িয়ে তোলা হয় ছবি। প্রকৃতির সৌন্দর্যে মিশে যায় সবার মনের মাধুর্য। সবাই উপভোগ করতে থাকে নয়নাভিরাম দৃশ্য। কেউ কেউ নৌকায় চড়ে হৈ-হুল্লোড় করে বেড়ায় মনের সুখে। যেন কোনো বাঁধা নেই আজ।
এভাবেই পুরো দিনটা কেটে যায়। মন ছুঁয়ে যায় চরম আনন্দে। ফূর্তির ভেলা ভাসে আহা। সন্ধ্যা শুরু হতেই বনভোজনের গাড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। রাত দশটা বাজতেই সবাই ঘরে ফিরে যায়। বনভোজনের আনন্দ যেন কারও মন থেকে ভুলে যায় না। অন্য সবার মত আদনান দিনটিকে স্মরণীয় করতে ডায়েরিতে জাফলং বনভোজনের আনন্দ-মুহূর্তগুলো লিখতে থাকে।