আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে প্রেসব্রিফিং
বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জে মহিলা ও শিশুরা সবচাইতে বেশি ঝুঁকিতে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০২২, ৫:০৩:৩৪ অপরাহ্ন

পরিস্থিতি হতে উত্তরণে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালুর তাগিদ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাম্প্রতিক বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে মহিলা ও শিশুরা সবচাইতে বেশি দুর্ভোগ ও ঝুঁকিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতি হতে উত্তরণে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালু করতে হবে।
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বন্যা উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন শেষে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট শহরতলীর গ্র্যান্ড সিলেটে আয়োজিত প্রেসব্রিফিংয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এরূপ মন্তব্য করা হয়। বাংলাদেশে জাতিসংঘের (ইউএন) আবাসিক কো অর্ডিনেটর জিন লুইস (Gwyn Lewis)- এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা শনিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। আজ রোববার তারা গোয়াইনঘাটের বন্যা উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বন্যা উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শনের মর্মস্পর্শী বর্ণনা দেন। বন্যার ফলে মানুষ যে, কি বিপদে রয়েছে তারা তা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন।
ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়, ১২২ বছরের ইতিহাসে এ অঞ্চলের মানুষ এমন বন্যা দেখেনি। সিলেট বিভাগের চার জেলাসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৯টি জেলার প্রায় ৭২ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৯টি জেলার মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার অবস্থা সবচাইতে বেশি ভয়াবহ। প্রায় ৫ লাখ লোক আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছে, যারা অনেকে ঘর-বাড়ি হারিয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে নারী ও মেয়েরা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ বন্যাকে ১৯৯৮ সাল ও ২০০৪ সালের পর অর্থাৎ সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা বলা হচ্ছে। মে মাসের আকস্মিক বন্যার ক্ষয়-ক্ষতি যখন এ বিভাগের মানুষ কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে, তখন এ বন্যা আঘাত করলো। আগামীতে আরো বন্যা হতে পারে-এ আশঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাম্প্রতিক বন্যায় অনেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অবকাঠামোগত ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (ডিডিএম) ও কেয়ারের নেতৃত্বে নিডস অ্যাসেসম্যান্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ (নেএডাব্লিউজি) কাজ শুরু করেছে। তারা সমন্বিত অ্যাসেসম্যান্টের মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণের পাশাপাশি এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে তাৎক্ষণিক ও মধ্যমেয়াদী প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করবে।
এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরের উদ্যোগে ছয় মাস মেয়াদী (জুলাই-ডিসেম্বর) এইচসিটিটি রেসপন্স প্লানের অবতারণা করে তিনি বলেন, এই প্ল্যানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে-বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে জরুরি ভিত্তিতে জীবনদায়ী ও জীবন রক্ষাকারী সহযোগিতা প্রদান, তাদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ঝুঁকি হ্রাস ও নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সহনশীলতা সমুন্নত রাখা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে ইউএনএফপিএ’র প্রতিনিধি ক্রিসিন ব্লকাস (Kristine Blokus), ইউনিসেফের শেলডন ইয়েট, (Sheldon Yett), ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেভেলপম্যান্ট ডাইরেক্টর মাট ক্যানেল (Matt Cannell), ইউরোপিয়ান কমিশনের ইসাবেলা ডি হাডট (Isabella D’Haudt) এবং স্টার্ট ফান্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সাজিদ রায়হান বক্তৃতা করেন।