দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলো ৬টি ফায়ার ফাইটিং ইউনিট
বড় ধরনের অগ্নিকান্ড থেকে রক্ষা পেলো রশিদপুর তেল শোধনাগার
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ এপ্রিল ২০২১, ২:২২:৪৯ অপরাহ্ন

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি/বাহুবল থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ হবিগঞ্জের বাহুবলে রশিদপুরস্থ দেশের অন্যতম তেল শোধনাগারটি অল্পের জন্য বড় ধরনের অগ্নিকান্ড থেকে রক্ষা পেয়েছে। মূল প্ল্যান্টের বাইরে ড্রেনে লাগা আগুন প্রায় দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ৬টি ফায়ার ফাইটিং ইউনিট।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বুধবার দিবাগত রাত ১১ টায় শোধনাগারের বার্ন ফিডের (বর্জ্য মজুত করা স্থানে) কন্টেইনারে আগুনের সূত্রপাত হয়। হঠাৎ বিকট শব্দ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পার্শ্ববর্তী এলাকায় আতংক সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে একযোগে চেষ্টা চালিয়ে রাত ১ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। প্ল্যান্টটি চার হাজার ব্যারেল তেল ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বলে জানা গেছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড (এসজিএফএল) একটি সূত্র জানায়, আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে ও কারণ খুঁজতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসজিএফএল-এর জিএম (প্রশাসন) ও কোম্পানী সচিব প্রকৌশলী ফারুক হোসেনকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কমিটি এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। ওই সূত্র জানায়, এসজিএফএল-এর নিজস্ব ফায়ার ফাইটারের পাশাপাশি হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ওই সূত্র জানায়, সেখানে মূলত দুটি প্ল্যান্ট রয়েছে। ২০১৮ সালে একটি প্ল্যান্ট চালু হয় এবং বর্তমানে নতুন আরেকটি প্ল্যান্ট থেকে অকটেন উৎপাদনের কমিশনিং পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিটি ট্যাংকে প্রায় ৬০ পার্সেন্টের মতো মজুদ ছিল। আগুনে ছড়ার আশ-পাশের নদীর গাছ-পালার কিছুটা ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তবে, বসতির কোন ক্ষতি হয়নি।
হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শিমুল মো: রাফি জানান, খবর পেয়ে হবিগঞ্জ থেকে চারটি এবং মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গল থেকে আরো দুটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। তিনি জানান, চার হাজার ব্যারেল কনডেনশেডের মূল প্ল্যান্টের বাইরের ড্রেনে মূলত আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। যে কারণে আগুনে বড় ধরণের কোন ক্ষতি হয়নি। আগুনে প্ল্যান্টের আশ-পাশের কোন ক্ষতি হয়নি। তিনি জানান,মূলত বার্ণফিড চেম্বার থেকে আগুন লাগে। যখন কনডেনশেড থেকে পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন আলাদা করা হয়, তখন এগুলোর বর্জ্য গিয়ে একটি চৌবাচ্চার মধ্যে থাকে। এই চৌবাচ্চার বর্জ্য কয়েকদিন পর পর পুড়ানো হয়। আগুন লাগার দিন তারা বর্জ্য ধ্বংসের পর্যায়ে ছিল না, বর্জ্যগুলো প্ল্যান্টের চতুর্দিকে লিকুইড আকারে বের হয়ে যায়। আবার ঘন বর্জ্যগুলো চৌবাচ্চায় জমা থাকে। আগুন মূলত ড্রেনের মধ্যে লাগে। ড্রেনে আগুন লাগায় মূল প্ল্যান্টের কোন ক্ষতি হয়নি বলে জানান। মূল প্ল্যান্টে আগুন লাগলে ভয়াবহ ক্ষতি সাধিত হতো বলে জানান তিনি। খবর পেয়ে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা তালুকদার তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তিনি জানান, অগ্নিকান্ডে বড় ধরণের কোন ক্ষতি হয়নি। আগুনে প্ল্যান্টে কর্মরত ৩ জন কর্মচারী সামান্য আহত হয়েছেন। তিনি জানান, দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।