সদর খাদ্যগুদাম পরিদর্শন শেষে খাদ্যমন্ত্রী
ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করলেও বাংলাদেশে প্রভাব পড়বে না
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ মে ২০২২, ৫:৫১:২৩ অপরাহ্ন

সিলেটে ২৫-৩০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার সাইলো নির্মাণ করা
হবে ॥ ভারতে প্রতি লিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ২১০ রুপিতে
স্টাফ রিপোর্টার : খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, সরকারিভাবে ভারত গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। তবে বেসরকারিভাবে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। প্রজ্ঞাপনে এটা পরিষ্কার আছে। অতএব, এ নিয়ে কোন অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না।
গতকাল রোববার দুপুরে সিলেট সদর খাদ্যগুদাম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী আরো বলেন, ভারতকে তাদের উৎপাদিত গম বিক্রি করতেই হবে। আজকে হয়তো প্রজ্ঞাপন দিয়েছে, ১৫ দিন/এক মাস পর রপ্তানী খুলেও দিতে পারে। কাজেই, এ নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। যুদ্ধের আগে রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করা হতো। যুদ্ধের পর ভারত থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানী করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
সরকার জিনিষপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় দেশে অনেক পণ্যের দাম কম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২১০ রুপিতে। সেখানে বাংলাদেশে দাম আরো অনেক কম। তিনি জানান, বর্তমানে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারে আছে। পেঁয়াজ আমদানি করলে কৃষকরা পেঁয়াজ উৎপাদন ছেড়ে দেবে। পেঁয়াজের দাম আর উঠবে না বলে মন্তব্য মন্ত্রীর।
মন্ত্রী বলেন, গত আউশ ও আমন ধানেরও আমাদের প্রচুর মজুদ রয়েছে এবং বৃষ্টির কারণে আগামী আউশ ফসলও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই দেশে কোনো ভাবেই খাদ্য সংকট তৈরি হবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ, দেশে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয় ; তাতে চাল আমদানি করতে হবে না বাংলাদেশের। এবারের বন্যায় ধানের ফসলী জমির যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে খাদ্যে কোন ঘাটতি হবে না।
খাদ্যমন্ত্রী আরো বলেন, গত এক বছর থেকে আমরা বিদেশ থেকে কোনো চাল আমদানি করিনি। আমাদের কৃষকদের উৎপাদিত ধান দিয়েই চালের চাহিদা মিটছে। তবে গম আমাদের দেশে হয় না, বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তিনি আরো জানান, সিলেটে ধান চাল সংরক্ষণের জন্য ২৫-৩০ হাজার মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সাইলো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। জমি অধিগ্রহণের পর সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ধানের দাম বাড়ানো হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নে জবাবে মন্ত্রী বলেন, যৌক্তিকভাবে ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে- যাতে কৃষক তার ফসলের ন্যায্যমূল্য পায়। সরকার কৃষকের জন্য সার, বীজ ও নানা কৃষি উপকরণ প্রণোদনা হিসাবে দিয়ে থাকে। ধানের দাম বাড়লে চালেরও দাম বাড়বে সে কারণে যৌক্তিক যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সে দামেই ধান চাল সংগ্রহ করা হবে। তবে, এক্ষেত্রে কোন সিন্ডিকেট কাজ করছে কি না-সে বিষয়ে তারা নজর রাখবেন।
এ সময় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাজমানারা খানুম, জেলা প্রশাসক মো: মজিবর রহমান, খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (সংগ্রহ) মো: রায়হানুল কবীর, পরিচালক মো. জামাল হোসেন, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সিলেট মো. মাইন উদ্দিন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নয়ন জ্যোতি চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার রোববার দুপুরে বিমানের ফ্লাইটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন। সেখান থেকে সিলেট সদর খাদ্যগুদাম পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে সিলেট সার্কিট হাউসে কিছু সময় অবস্থান করে মন্ত্রী সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।