ভারত-চীন সামরিক উত্তেজনা সহিংস সংঘাতে রুপ নিয়েছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুন ২০২০, ১:৫৪:৪৮ অপরাহ্ন

ভারত-চীন সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থানে থাকা দুই দেশের সামরিক উত্তেজনা সহিংস সংঘাতে রুপ নিয়েছে। চীনা সেনাদের হাতে নিজেদের অন্তত ২০ জন সেনা নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ভারত। সংঘাতে চীনেরও ৪৩ সেনা হতাহত হয়েছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো দাবি করলেও এ নিয়ে কিছু জানায়নি চীন।
কাশ্মীর অঞ্চলের লাদাখে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত গলওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দুই দেশের মধ্যে সংঘাত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সংঘর্ষের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘সোমবার ভারতীয় সেনারা দুবার সীমান্তরেখা অতিক্রম করে উসকানিমূলকভাবে চীনের সেনাদের আক্রমণ করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।’ তবে ভারতের দাবি, ‘চীনা সেনারা ভারতীয় সীমানার অনেক ভেতরে ঢুকে পড়েছিল।’
কয়েক বছর ধরেই দুই দেশের সীমানা বিভাজনকারী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) ভারতের সড়ক ও সেতু বানানো নিয়ে চীনের ধারাবাহিক অসন্তোষকে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে এ উত্তেজনার শুরু। ভারত বলছে, নিজেদের সীমানার ভেতর স্থানীয় মানুষের জন্যই এসব অবকাঠামো নির্মাণ হচ্ছে।
সবশেষ উত্তেজনার শুরু গত মে মাসের শুরুতে। তিব্বত ও লাদাখ সীমান্তে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ দুটির সেনাদের মধ্যে হাতাহাতি-ধস্তাধস্তির মধ্য দিয়ে। মে মাসের শুরুতে লাদাখের গলওয়ান উপত্যকা ও প্যাংগং লেক ছাড়াও নেপাল সীমান্তবর্তী সিকিমের নাকু লায় দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়।
৯ মে সিকিম সীমান্তে সেনাদের ধ্বস্তাধস্তি ও পাথর নিক্ষেপের ফলে সৃষ্ঠ সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন ভারতীয় ও চীনা সেনা আহত হয়। ভারত জানায়, লাদাখ অঞ্চলে সীমানা পেরিয়ে কয়েক কিলোমিটারে মধ্যে একাধিক ছাউনি গড়েছে চীনা সেনারা। এরপর ভারতও ওই অঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে।
এরপর স্থানীয় সামরিক কর্মকর্তারা সংঘাত নিরসনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কূটনৈতিকভাবে বিবাদ নিরসন প্রচেষ্টা বিফলে যাওয়ার পর জুন মাসের শুরুতে দুই পক্ষের কমান্ডারদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়; যা আগে কখনোই হয়নি। কয়েক দফা আলোচনা শেষে ভারত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানালেও সোমবার এ ঘটনা ঘটে।
লাদাখ নিয়েই ১৯৬২ সালে দেশ দুটির যুদ্ধ হয়েছিল। সংক্ষিপ্ত হলেও যুদ্ধটি ছিল বেশ রক্তক্ষয়ী। তারপর থেকে দুই দেশের সেনারা মুখোমুখি হলেও ১৯৭৫ সালের পর তো কোনো গুলিই চলেনি। কিছু উত্তেজনা শুরু হলেও তা দ্রুত মেটানো হতো। তবে এবারের অবস্থা যে ভিন্ন তা বেশ স্পষ্ট।