ভুলোমনা বিল্টু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জুন ২০২২, ৬:৫৩:২৬ অপরাহ্ন

প্রীতম কুন্ডু
শব্দটার সঙ্গে কেবল দিন দুয়েকের পরিচয় বিল্টুর। এটা একটা রোগের নাম। রোগটা যাদের আছে, তারা নাকি অতিসাম্প্রতিক ঘটনাগুলোও মনে রাখতে পারে না। যেমনটা বিল্টুর হয়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মামার কাছ থেকে এসব জানতে পারা।
কিছুই যে মনে থাকে না ওর। সকালে স্কুল থেকে ফিরে দুপুরে ভুলে যায়, আজ কি স্কুলে গিয়েছিল? মাঝেমধ্যেই বিকেলে মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করে, ‘মা, আজ কি দুপুরে খেয়েছিলাম?’ তাই বন্ধুসমাজেও ‘ভুলোমনা বিল্টু’ নামে পরিচিত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, গত দুই দিন অনেক চেষ্টার পরও রোগটার নাম সে ভুলতে পারেনি।
আজ বন্ধুদের সামনে আত্মসম্মান বাঁচানোর জন্য ওর দিদার বিশাল এবং পুরোনো বাড়িতে এসেছে একা একা একটা ঘরে রাত কাটানোর জন্য। বায়নার জের ধরেই বাবা এসে রেখে গেছেন। ভূতের ভয় যে ওর মধ্যে বিন্দুমাত্র নেই, তা প্রমাণ করতেই এত কিছু। বিশাল একটা ঘর বেছে নিয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে এখন বিল্টু ‘ডিমেনশিয়া’ শব্দটাকে উল্টেপাল্টে ভাবতে শুরু করেছে। অন্য কিছুতে মনোনিবেশ করে থাকার একটা ছুতো। তবে কি সে সত্যিই ভয় পাচ্ছে? অন্ধকার ঘরে বাইরের একটুখানি চাঁদের আলো ঢুকে পড়েছে। এ আলো-আঁধারি সারা ঘরে রহস্য মাখিয়ে রেখেছে। শীতের রাত। কম্বলের আরও ভেতর জড়সড় হয়ে গেল বিল্টু। ওর বড় বড় চোখ দুটো অন্ধকার ভেদ করে পুরো ঘরে পাক খেয়ে যাচ্ছে। কত রকমের ছায়া তৈরি হয়েছে ঘরজুড়ে। নানা রকমের আকার-আকৃতি একেকটার। ওর গা ছমছম করে ওঠে।
এমন সময় জানালার পর্দা উড়ে কনকনে ঠান্ডা বাতাস ঢুকে পড়ল ঘরে। কম্বল ভেদ করে তা যেন বিল্টুর গায়ে সরাসরি আক্রমণ করল। কিন্তু সে কিছুতেই মনে করতে পারল না, জানালাটা কে খুলেছিল?