অহংকারী ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। -আল হাদিস।
রশিদপুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মার্চ ২০২১, ৪:১১:০৯ অপরাহ্ন

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ঘুম থেকে জেগেই একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর শুনতে হলো সিলেটবাসীকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। শুক্রবার সকালে ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবরটি শুনে বিচলিত হয়ে পড়ে সবাই। যার রেশ কাটেনি এখনও। এই রেশ কাটবেও না কোন দিন স্বজন হারানোদের। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার রশিদপুরে দু’টি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এতে নিহত হয়েছেন আটজন। এর মধ্যে দু’টি বাসের চালকও রয়েছেন। আছেন বাসের সুপারভাইজার, হেলপারও। এতে আহত হয়েছেন ২০ জন। এ সময় ঘটনাস্থলে আহতদের আহাজারি ও স্বজনদের কান্নায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
সকাল পৌনে সাতটায় রশিদপুরে একটি কালভার্টে ঢাকাগামী একটি বাসের সঙ্গে সিলেটগামী অপর একটি বাসের সংঘর্ষ হয় বিকট শব্দে। সংঘর্ষে দু’টি বাসই দুমড়ে মুচড়ে যায়। পরে বাস দু’টির সামনের অংশ কেটে হতাহতদের উদ্ধার করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীসহ যাত্রীদের বক্তব্য এবং দুর্ঘটনার ধরণ দেখে অনেকেই বলেছেন, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং ওভারটেকিং প্রবণতার জন্যই ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। সমস্যাটা এখানেই। আর তা হলো বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো। যেকোন যানবাহনে স্টিয়ারিং হাতে নিয়েই চালকেরা আর স্থির থাকতে পারে না; তারা পারলে উড়াল দেয় আকাশে। আর মহাসড়কগুলোতে আন্তঃনগর বাস কিংবা ট্রাক চালকেরা তো বেপরোয়া গতিতে চালানোকে রীতিমতো এডভেঞ্চার হিসেবেই মনে করে। [তাদেরকে বলা হয়েছে অনেকভাবে। আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনও হয়েছে। তারা মানছে না কিছুই। আর সরকারও আদালতের নির্দেশনা বা আইন কার্যকরে সক্রিয় নয়। বরং অনেক সময় পরিবহন মালিক-শ্রমিক-চালকদের কাছে জিম্মী হয়ে পড়ে সরকার। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণ যাচ্ছে যাত্রী সাধারণের যেমন, তেমনি বাসচালক-হেলপারেরও।]
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অচিরেই শুরু হবে হাজার হাজার কোটি টাকার এই বিশাল কর্মযজ্ঞ। সময়ের পরিক্রমায় এমন খবরে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ আনন্দিত-উৎফুল্ল। পাশাপাশি এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সেই উল্লাস বিষাদে পরিণত হয়। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্প্রসারণসহ সব ধরণের উন্নতি হোক, এর বিরোধীতা কেউ করবে না। কিন্তু তার সঙ্গে দুর্ঘটনা রোধে তথা সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামানো খুবই জরুরি। তা না হলে কী লাভ এতো উন্নয়নের, এমন প্রশ্ন ভূক্তভোগী ও যাত্রী সাধারণের। আমরা রশিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের প্রতি জানাচ্ছি সহমর্মীতা এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করছি। পাশাপাশি অনুরূপ দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্টরা সচেষ্ট হবেন বলেই আমরা আশাবাদী।