এমন লোকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করোনা, যে তোমার দোষগুলো মনে রাখে এবং গুণগুলো ভুলে যায়। - হজরত আলী (রাঃ)
লকডাউন এক সপ্তাহের
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ এপ্রিল ২০২১, ৮:৩০:৫৯ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ আগামী মাসের প্রথম দিকে নিম্নমুখী হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য দিয়েছেন। তাদের মতে বিগত সপ্তাহ খানেকের বেশী সময় ধরে যেভাবে সংক্রমণ চূড়ায় ওঠেছে তাতে যুক্তরাজ্যে সংক্রমণের উর্ধ্বগতির সঙ্গে একটা সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। তাদের মতে, দেশে টিকার দ্বিতীয় ডোজ শুরুর তিন সপ্তাহ পর থেকে অর্থাৎ এখন থেকে চার সপ্তাহ বা এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাসের প্রথম নাগাদ দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে আসতে পারে। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত টিকা দেওয়ার ওপর জোর দিতে হবে। এই প্রেক্ষাপটেই আজ থেকে দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে এক সপ্তাহের লকডাউন।
দেশে করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার বর্ষপূর্তি হতে না হতেই সংক্রমণের উর্ধ্বগতি শুরু হয়ে যায়। গত মার্চ মাসের আট তারিখ ছিলো দেশে করোনা রোগী শনাক্তের এক বছরপূর্তি। তখন পর্যন্ত অর্থাৎ গত ফেব্রুয়ারি বা মার্চের প্রথম দিকে দেশে করোনার সংক্রমণ ছিলো নিম্নমুখী। মৃত্যুর হারও কমে আসে। আশা করা হয়েছিলো গ্রীষ্মে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে সংক্রমণ আরও কমে আসবে। কিন্তু ঘটলো উল্টো। তাপমাত্রা যখন উর্ধ্বমুখী তখন সংক্রমণও উর্ধ্বমুখী হয়ে উঠলো। আর দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ডই ছাড়িয়ে গেলো। বিশেষজ্ঞগণ বলছেন বিশ্বব্যাপী চলছে এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ আমেরিকা, ইউরোপের কয়েকটি দেশ এবং প্রতিবেশী দেশ ভারতে সবচেয়ে বেশী আঘাত হেনেছিলো। এসব দেশে তেমনি দ্বিতীয় ঢেউও চড়াও হয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ সবচেয়ে বেশী আঘাত হানে যুক্তরাজ্যে। কিন্তু সেখানে মাত্র ছয় সপ্তাহে মৃত্যু নেমে আসে শূন্যের কোটায়। সেখানে সাফল্য এসেছে টিকা প্রদানসহ এই ব্যাপারে সরকার ও জনগণের সর্বাত্মক সচেতনতার কারণে। বাংলাদেশেও এব্যাপারে সাফল্য পেতে দরকার সময়োপযোগী পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞদের মতে আমরা সংক্রমণ বিস্তার ঠেকানোর জন্য যতো বেশী ব্যবস্থা একসঙ্গে কার্যকর করতে পারবো, ততোই সাফল্য আসবে দ্রুত। কিন্তু ৫০ শতাংশ ব্যবস্থা নিলে সংক্রমণও কমবে ৫০ শতাংশ। আর বাকি ৫০ শতাংশ থেকে আবারও সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থেকে যাবে।
সংক্রমণ রোধে সরকার সময়ে সময়ে নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের নির্দেশনা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সরকারের সেই নির্দেশনা শতভাগ কার্যকর হচ্ছে না। বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনীহা অনেকের মধ্যে। এখানে ওখানে অহরহ হচ্ছে লোকসমাগম। তাছাড়া গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কথা থাকলেও সেটা মানছেনা সংশ্লিষ্টরা। গাদাগাদি করে যাত্রীবহন করা হচ্ছে আবার বর্ধিত ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে। টিকা গ্রহণের ব্যাপারেও অনেকের অনীহা। আর টিকাও এখন পর্যন্ত সহজলভ্য হয়ে ওঠেনি। সব মিলিয়ে আজ থেকে দেশব্যাপী শুরু হওয়া লকডাউন যথাযথভাবে কার্যকর করার মাধ্যমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে সব মহল, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।