শিশু একাডেমি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ৪:৫৪:০৭ অপরাহ্ন

দুলাল শর্মা চৌধুরী
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বাংলাদেশের শিশুদের জন্য জাতীয় একাডেমি। শিশুদের প্রতিভা, সংস্কৃতি, উন্নয়ন, প্রচার ও পৃষ্ঠপোষকতার জন্য এই একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই একাডেমি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শিশু। শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই ১৯৭৬ সালে সেগুন বাগিচায় শিশু একাডেমির কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে ১৯৭৭ সালে ঢাকার পুরনো হাইকোর্ট এলাকায় এই একাডেমি স্থানান্তর করা হয়, এবং প্রায় ৩,৬৯ একর জমির উপর চারটি ভবন নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সেই চারটি ভবন হচ্ছে, প্রশাসনিক ভবন, মিলনায়তন, যাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি, এবং প্রকাশনী ও লেকচার থিয়েটার ভবন। বর্তমানে এই চারটি ভবন থেকেই একাডেমির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো হলো- জাতীয় সবক্ষেত্রে শিশুদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা, অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতা অর্জনে শিশুদের সহায়তা করা, শিশুদের জন্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, শিশুদের আইনগত অধিকার রক্ষার্থে সাহায্য করা প্রভৃতি। শুরুতে একাডেমির কার্যক্রম রাজধানী কেন্দ্রীক হলেও পরে এর শাখা সারাদেশে বিস্তৃত হয়। বর্তমানে সারাদেশে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির ৭০টি শাখা আছে।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির স্বনামে নিজস্ব প্রকাশনী বিভাগ আছে। এখান থেকে প্রতিবছর অসংখ্য মানসম্মত শিশুতোষ বই-পুস্তক প্রকাশিত হয়। এছাড়া এখান থেকে শিশুদের জন্য ‘শিশু’ নামে নিয়মিত একটি সচিত্র মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বছরব্যাপি যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা। ১৯৭৮ সাল থেকে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার ৬২টি বিষয়ে আঞ্চলিক, উপজেলা, জেলা ও জাতীয়- এ চারটি পর্যায়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় প্রতিবছর সারা দেশের প্রায় তিন লাখ শিশু অংশ নেয় এবং তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায়। ১৯৮০ সাল থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি শিশুদের জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করেছে। এসবের মধ্যে চিত্রাঙ্কন, সংগীত, নৃত্য, নাট্যকলা, আবৃত্তি, উচ্চারণ, তবলা, গীটার, স্পোকেন ইংলিশ ও কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ অন্যতম। দরিদ্র শিশুদের জন্য রয়েছে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। এছাড়া ‘শিশুর বিকাশ প্রারম্ভিক শিক্ষা প্রকল্প’। এই নিয়েই চলছে শিশু একাডেমির কার্যক্রম।