শহরে বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন
শ্রীমঙ্গল পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় ৭ জন আহত
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ২:১৫:৩২ অপরাহ্ন

ডাক ডেস্ক : শ্রীমঙ্গল পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় উভয় পক্ষের অন্ততঃ ৭ জন আহত হয়েছেন। দুই মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর পাল্টা পাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে একে অন্যকে দায়ি করেছেন মেয়র প্রার্থীরা। সংঘর্ষের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ঘটনার স‚ত্রপাত গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর শ্রীমঙ্গল শহরের ডাক বাংলো পুকুরপাড় এলাকায়। মেয়র মহসিন মিয়া মধুর বাসভবন একই এলাকায়। আহতরা হলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র পুত্র মুরাদ হোসেন সুমন (২৫), তার ভাতিজা মোশারফ হোসেন রাজ (২৩) , সমর্থক খাইরুল বাশার (৩৫) ও মানিক মিয়া (৩২)।
অপরদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র পদপ্রার্থী সৈয়দ মনসুরুল হক এর দলীয় নেতাকর্মী দেলওয়ার হোসেন রাহিদ ও আনোয়ার হোসেন তামীম গুরুতর আহত হয়েছেন। দেলওয়ার হোসেন রাহিদ, শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহকারি দপ্তর সম্পাদক। ঘটনার পর থেকে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হবার পর থেকে এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় আলাদা অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এদিকে, পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা অভিযোগ এনে গতকাল শুক্রবার বেলা ২ টার পর স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মহসিন মিয়া মধু তাঁর নিজ বাস ভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি অভিযোগ করেন, গত রাতে তাঁর বাসায় রাতে বিনা উঁচকানিতে হামলা হয়। এর জন্য তিনি আওয়ামী লীগের একটি অংশকে দায়ি করে বলেন, প্রতিদ্ব›দ্বী মেয়র প্রার্থীর মদদে আমার বাসভবনে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করে ভাংচুর করা হয়। জনমনে ভীতি ছড়ানোর জন্য প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী অপকৌশল গ্রহণ করেছেন। তিনি ভোটের পরিবেশ পরিস্থিতি ধ্বংস করেছেন বলে দাবি করছেন। তার দাবি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনে বড় বাধা এখন প্রতিদ্ব›দ্বী মেয়র প্রার্থী। তার বাসায় হামলার পর তিনি প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও সাংবাদিকদের সহায়তা চেয়ে বলেন জনগণ তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।
এদিকে, বিকেল ৪টার পর নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক তার গুহ রোডের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর অভিযোগ খন্ডন করে বলেন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ইভিএমে ভোট হবে জেনে তার লম্বা হাত ছোট হয়ে গেছে। ইভিএমের ভোটে কারচুপি হবে না তাই তিনি উল্টাপাল্টা অসংলগ্ন কথা বার্তা সমাজে ছড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন তার দলীয় নেতাকর্মীরা রাতে নির্বাচনী কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ডাকবাংলো এলাকায় এলে মধুর বাস ভবনের সামনে থেকে হামলা করে তাদের বাসার ভেতরে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মধু সাহেবের অতীতের সকল রেকর্ড বলে দেয় তিনি কি ধরণের লোক। এর বেশী বলা সমীচীন হবে না। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব, সাধারণ সম্পাদক সহিদ হোসেন ইকবাল, যুগ্ম আহŸায়ক আকরাম খাঁন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বেলায়েত হোসেন, সদস্য আবু সহিদ আব্দুল্লাহ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আছকির মিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতলিব, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু দেব রিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো.ইমরাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শ্রীমঙ্গলের নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামীম অর রশিদ তালুকদার জানিয়েছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বর্তমান পৌর মেয়র এখন পর্যন্তু কোন অভিযোগ লিখিতভাবে দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে সকল অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে, ঘটনার পর থেকে শ্রীমঙ্গল পৌরশহরে বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামীকাল রোববার শ্রীমঙ্গল পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।