সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছেই
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মে ২০২২, ৭:২৪:৪৭ অপরাহ্ন

রঞ্জিত কুমার দে
দুর্ঘটনা একটি মর্মান্তিক বিষয় এবং সারাজীবনের কান্না। দেশ-স্বাধীন হওয়ার পর যদিও সড়কপথ উন্নত ছিলনা কিন্তু দুর্ঘটনা হওয়ার ঘটনা শোনা যেতনা। বর্তমানে দেখা যায় রাস্তাঘাট যতই প্রশস্ত হচ্ছে দুর্ঘটনা সীমাহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত দশ বৎসর পূর্বে মোটরসাইকেল এর সংখ্যা ছিল কম এবং পিকআপ গাড়ির প্রচলন একেবারে ছিলনা। এখন পত্রিকার পৃষ্ঠা খুললে দেখা যায় মোটরসাইকেল আরোহীগণ ট্রাকের নীচে পড়ে জীবন বিসর্জন দিচ্ছে। ট্রাক চালক রাস্তায় দ্রুত গতিতে ট্রাক চালাচ্ছে তাতে দুর্ঘটনা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পিকআপ ও ট্রাকচালক মালামাল বহনকারী গাড়ি কোন কিছু তোয়াক্কা না করে গাড়ী টানছে; তাদের সময় বাঁচাতে গিয়ে পথচারীর জীবন বিসর্জন দিতে হচ্ছে। বর্তমানে অসংখ্য গাড়ী অর্থাৎ মোটরসাইকেল, পিকআপ ও ট্রাকের সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্ঘটনার সংখ্যা সীমাহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় যানজট লেগেই আছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি পরিলক্ষিত হলেও জনগণের নির্ভিগ্নে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ পিকআপ গাড়ীর চালক ও ট্রাক চালক মদ্যপান করে গাড়ী চালাচ্ছে তাতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা জীবন বিসর্জন দিতে হচ্ছে। আইনানুসারে সুষ্ঠ বিচার ব্যবস্থা কার্যক্রম জোরদার না হওয়ায় দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। দক্ষ চালকের অভাবে; আবার কখনও কখন গাড়ির হেলপার গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। শুধু আইন প্রণয়ন করে শাস্তির ব্যবস্থা করেই সর্বনাশা জীবননাশ হতে অব্যাহতি পাওয়া যাবেনা। আইনকে কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং জনগণ ও সরকারকে সমবেতভাবে সচেষ্ট হতে হবে। দুর্ঘটনা ঘটানোর দায়ী ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান রাখতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধের জন্য জনগণকে সরকারের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হতে হবে। সরকার ও জনগণ উভয়ের সচেতনতার মাধ্যমেই শুধু এই সামাজিক নিষ্ঠুর অপরাধের প্রতিকার সম্ভব। প্রতিদিনই মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে ঘর হতে বের হয়। জীবন ও জীবিকার তাগিদে মানুষ ছুটে চলে। এরই মাঝে সন্ধ্যায় কেউ ঘরে ফেরে কেউ ফেরেনা। সড়ক দুর্ঘটনার মত ভয়াবহ ব্যাপার থেকে রক্ষা পেতে হলে বাড়াতে হবে সাধারণ মানুষের সচেতনতা। চালকদের নিতে হবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ। পথচারিদের ফিরিয়ে দিতে হবে ফুটপাতের দখল। প্রতিটি বিবেকমান মানুষকে রুখে দাঁড়াতে হবে পথচলার অনিয়মের বিরুদ্ধে। তবেই সম্ভব হবে নিরাপদে পথচলা।
আমাদের সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা ও সদ্দিচ্ছাই পারে এ দুর্ঘটনা রোধ করতে। এটি দুর্ঘটনা একটি পরিবারের সারাজীবনের কান্না। সড়ক দুর্ঘটনারোধে দুর্বার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে অনেক সংগঠন। নিরাপদ সড়কের দাবি আজ আমাদের সকলের। আমাদের প্রত্যেককে আত্মসচেতন হতে হবে এবং অন্যকে সচেতন করে তুলতে হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।