শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ নভেম্বর ২০২২, ৭:১২:৫৮ অপরাহ্ন
শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র না থাকায় কর্মজীবী নারীদের অনেকেই চাকরি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়- চাকরি কিংবা ব্যবসা, সবক্ষেত্রে নারীদের এখন সরব উপস্থিতি। তবে কর্মজীবী এই নারীরা সন্তান লালনপালন করতে গিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা না থাকায় কর্মক্ষেত্র ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারি উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত দিবাযত্ন কেন্দ্র তেমন একটা উপকারে আসছেনা বললেই চলে।
সময়ের পরিক্রমায় পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নারীরাও এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষাদীক্ষা কিংবা চাকরিক্ষেত্রে।বিশেষ করে, চাকরিজীবী নারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু নারীদের চাকরির পরিবেশসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বাড়ছে না। বরং নারীরা চাকরি করতে গিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে; অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, সন্তান লালন পালন। জানা যায়, দেশের কমপক্ষে দুই কোটি নারী বিভিন্ন পেশায় জড়িত। আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপের তথ্য মতে, দেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ছয় কোটি ১৪ লাখ। এর মধ্যে এক কোটি ৮৩ লাখ নারী এবং চার কোটি ৩১ লাখ পুরুষ। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ ছিল ৩৬ শতাংশ। ২০১৩ সালে এসে দেখা যায় এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক পাঁচ ভাগে। শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও শ্রমবাজারে তা কমে যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগের।এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, নারীদের অনেকেই শিশু সন্তান দেখভাল করার কেউ না থাকায় চাকরি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। গবিষকদের মতে-সময়ের আবর্তে এখন যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে একক পরিবারে পরিণত হয়েছে। যেসব পরিবারে বয়োজ্যেষ্ঠ কেউ নেই কিংবা সন্তান দেখভাল করার কেউ নেই, সেসব পরিবারের মায়েরা সন্তানের দেখাশোনা করতে গিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। আর যারা কষ্ট করে চাকরি টিকিয়ে রেখেছেন, তারা দুটি কাজ একসঙ্গে করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছেন।
এই অবস্থায় কর্মস্থলের পাশে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থাকা অপরিহার্য্য।প্রধানমন্ত্রী সরকারি-বেসরকারি অফিসে ডে কেয়ার সেন্টার করার তাগিদ দিয়েছেন একাধিক বার। আর দেশের শ্রম আইন অনুযায়ী, যে প্রতিষ্ঠানে ৪০ জনের বেশি নারী শ্রমিক আছেন, সেখানে ছয় বছর বয়স পর্যন্ত শিশুসন্তানের জন্য শিশুকক্ষ বা শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের জায়গা থাকতে হবে। এই আইন বাস্তবায়ন জরুরি। এছাড়া প্রতিটি কমিউনিটিতে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে একটি করে ডে কেয়ার সেন্টার করা যেতে পারে।