চুনারুঘাটে স্বামী মারা যাওয়া নারী দ্বিতীয় বিয়ে করায় সমাজচ্যুত করেছে মাতব্বররা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ৬:৩০:৫৫ অপরাহ্ন

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্বামী মারা যাওয়া নারীর দ্বিতীয় বিয়ের অপরাধে ৭ মাস ধরে তার বসত ঘরে তালা দিয়ে সমাজচ্যুত করেছে গ্রাম্য মাতব্বররা। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের খাসপাড়া গ্রামে। গতকাল বুধবার সকালে নির্যাতিত মহিলা হামিদা আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে ঘটনার বিবরণ দেন।
সমাজচ্যুত হামিদা জানান, তার প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর এলাকার কিছু খারাপ চরিত্রের লোক তাকে কুপ্রস্তাব দিত। তাই, তিনি বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ে করার অপরাধে খাসপাড়া গ্রামের গ্রাম্য মাতব্বর ঈমান আলী, ফালান মিয়া, জালাল মিয়া, সিরাজ মিয়াসহ ১৫/২০ জন মাতব্বর মিলে তার বসত ঘরে তালা দেন। ৭ মাস ধরে তালাবদ্ধ ঘরে লাখ টাকার আসবাবপত্র জরাজীর্ণ অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হল- তার দুটি শিশু বাচ্চা রুটি খেতে বসছিল কিন্তু গ্রাম্য মাতব্বররা শিশুদের ১ টুকরো রুটিও খেতে দেয়নি। ঘর থেকে বের করে তালাবদ্ধ করে দেয়। দীর্ঘ ৭ মাসে তারা অন্যত্র বসবাস করছেন এবং স্বামী স্ত্রী মিলে আমু চা বাগানের পুলপাড় নামক স্থানে একটি চায়ের স্টল দিয়ে জীবন যাপন করছেন।
এ ব্যাপারে হামিদার বোন জ্যোৎস্না আক্তার জানান, গ্রামের মাতব্বররা ডাকলে, হামিদা আসেনি। তাই, ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক তার ঘরে তালা মারা হয়েছে।
প্রতিবেশি সফিক মিয়া জানান, মুরব্বী ঈমান আলী ঘরে তালা দিয়েছেন। তাই, সেই তালা তিনি ছাড়া কেউ খোলার সাহস রাখেন না।
স্থানীয় আহম্মদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পলাশ জানান, ঘটনাটি তিনি জানেন না। তবে যারা অতি উৎসাহী হয়ে এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন, তা আইন বিরোধী। অন্যায় করলে বিচার আছে, প্রচলিত আইনে হবে। ঘরে তালা মেরে অসহায় মহিলা ও বাচ্চাদের বের করে দেয়া কোন ভাবেই ঠিক হয়নি।
অভিযুক্ত গ্রামের মুরব্বী ঈমান আলীসহ কয়েকজন হামিদার ঘর তালা বন্ধ করার কথা স্বীকার করে জানান, তারা গ্রামবাসী একত্র হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ কাজ করেছেন।