বাড়ছে বিদ্যুতের দাম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ৬:৫৩:০৩ অপরাহ্ন
বৈশ্বিক মন্দা, দৈব্যমূল্য আকাশছোঁয়া, জীবন বাঁচাতে মানুষের হা পিত্যেশ অবস্থা-এর মধ্যে আসছে আরেকটি সংবাদ। বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। অতিসম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে পাইকারি বিদ্যুতের দাম। এর রেশ কাটতে না কাটতেই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ বিতরণকারি সংস্থাগুলো বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে আবেদন করেছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, সর্বশেষ গত ২১ নভেম্বর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের পাইকারি দাম ইউনিট প্রতি ৫ দশমিক ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
বিদ্যুৎ, গ্যাস, তেলসহ বিভিন্ন সেবাখাতে দামবৃদ্ধি একটা নিয়মিত বিষয়ে পরিনত হয়েছে। এগুলোর দাম বাড়ে যখন তখন। ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময় দাম বৃদ্ধির পর সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ প্রতিশ্রুতি দেন, অচিরেই আর দাম বাড়ানো হবে না। কিন্তু তার কোন বাস্তবতা নেই। অতি সম্প্রতি পাইকারি পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মূল্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন যে, পাইকারিতে দাম বৃদ্ধির সঙ্গেই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাবে না। কিন্তু পাইকারিতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সপ্তাহখানেক যেতে না যেতেই ভোক্তা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির জন্য পায়তারা শুরু হয়েছে। এব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হচ্ছে, গ্যাস সরবরাহে রেশনিং এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং করার পরও দাম বাড়ানো হলে তা হবে খুবই দুঃখজনক। এবার আরেকটি বিষয় সংযোজিত হলো। এতোদিন গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার বন্ধ হচ্ছে সেই সুযোগও। গণশুনানি ছাড়াই নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে সরকার। প্রয়োজনে এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে পাশ কাটিয়ে বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণ করা যাবে। এ-সংক্রান্ত আইনের খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অর্থাৎ সংশোধিত আইন অনুযায়ি বিশেষ পরিস্থিতিতে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সরকার বাড়াতে বা সমন্বয় করতে পারবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, বিদ্যমান আইনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বিইআরসি ৯০ দিন সময় নিয়ে নির্ধারণ করে। বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকারও যেন তা নির্ধারণ করতে পারে, এজন্যই এ সংশোধনী আনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা প্রয়োজন। আর দ্রুততম সময়ে মূল্য সমন্বয়ের লক্ষে সরকারেরও ক্ষমতা সংরক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। ভোক্তাভূগিদের বক্তব্য হচ্ছে- এতে করে গ্রাহকস্বার্থের কথা মোটেই বিবেচনা করা হয় নি। গণশুনানির সুযোগ থাকলে কিছুই হোক বা না হোক, মানুষ তাদের কষ্টের কথাটি বলার সুযোগ পেতো।