বিজয়ের মাস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ৪:২৬:৪৯ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য কূটনৈতিক সাফল্য আসে। বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভারত। এছাড়া, যুদ্ধজয়ের বড় খবর তৈরি করে যৌথবাহিনী। সীমান্ত জেলা যশোরের পতন ঘটে। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সম্মিলিত হামলার মুখে টিকতে না পেরে দখলদার পাকসেনারা যশোর সেনানিবাসে আশ্রয় নেয়। অবরুদ্ধ পাকবাহিনী পরে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। ঢাকা সেনানিবাসের পর যশোর সেনানিবাস ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটি। যশোর সেনানিবাসের পতনে মনোবল হারিয়ে ফেলেন ঢাকাস্থ পাক জেনারেলরা। তারা কল্পনাও করতে পারেনি এত তাড়াতাড়ি যশোর সেনানিবাস যৌথবাহিনীর দখলে চলে যাবে। ভোরে যৌথবাহিনী চৌগাছা ও ঝিকরগাছার মাঝখান দিয়ে আচমকা সেনানিবাসের ওপর চতুর্মুখী আঘাত আনে। দুপুর পর্যন্ত প্রতিরোধ করে তারা। বিকেলে ক্ষতবিক্ষত পাকসেনারা সেনানিবাস ছেড়ে যে যেদিক পারে পালাতে থাকে। এইদিন পাকিস্তান বাহিনীর বিমান তৎপরতা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে।
যৌথবাহিনীর বিমান হামলায় ঢাকা সেনানিবাস ও তেজগাঁও বিমানবন্দরে আকাশ থেকে বোমা হামলা চালানো হয়। বিনা প্রতিরোধে পাক বাহিনীর স্থাপনার ওপর আঘাত আনে মিত্র বাহিনীর যুদ্ধ বিমান। যৌথবাহিনী মুক্ত করে বাংলাদেশের আকাশ।
এইদিন কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনীর এস ফোর্সের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর। বান্দিনার অদূরে এস ফোর্সের অধিনায়ক কর্নেল কেএস সফিউল্লাহ শত্রু সেনাদের অ্যাম্বুশে পড়েও ভাগ্যক্রমে প্রাণে রক্ষা পান। এ যুদ্ধে অবশ্য এস ফোর্সই জয়ী হয়। অধিনায়ককে শত্রুর হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন ১১ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ক্যাপ্টেন নাসিম ও সেক্টর কমান্ডারের গানার আবদুল মান্নান। দু’জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আটক করা হয় ১১ জন পাকসেনাকে। যশোর কুমিল্লা ছাড়াও ওইদিন দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ চলে। পাক সেনাদের অবস্থা ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে।