বিশ্বকাপ ফুটবল: টাইব্রেকারে জাপানি উৎসব থামিয়ে শেষ আটে ক্রোয়েশিয়া
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ৪:৫৪:২৩ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : এবারের বিশ্বকাপে জাপান রীতিমতো জায়ান্ট কিলার রূপেই দেখা দিয়েছিল। জার্মানিকে হারিয়ে শুরু, এরপর স্পেনকে হারিয়ে মৃত্যুকূপ থেকে রীতিমতো গ্রুপের সেরা হয়েই নকআউটে এসেছিল নীল সামুরাইরা। ক্রোয়েশিয়াকেও দারুণ চোখরাঙানিই দিচ্ছিল হাজিমে মরিয়াসুর দল, এগিয়ে গিয়েছিল শুরুতেই। তবে এরপরই ক্রোয়াটরা ফিরলো ম্যাচে। খেলাটা গেল টাইব্রেকারে, কাতার বিশ্বকাপে প্রথম বারের মতো; সেখানেই থামলো জাপানি উৎসব। ৪-১ গোলে শেষ হাসি হাসলো শেষ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্টরা। জাপানের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে নিশ্চিত করে ফেললো প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল।
এরআগে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়ে গোল সমতায় শেষ হয়েছে জাপান ও ক্রোয়েশিয়ার শেষ ষোলোর ম্যাচ। ১২০ মিনিটের লড়াই শেষে দুই দলের কোয়ার্টার ফাইনালের ভাগ্য টাইব্রেকারে নির্ধারণের অপেক্ষায়।
আল জানুব স্টেডিয়ামে গতকাল সোমবার শেষ ষোলোর ম্যাচে প্রথমার্ধে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৪৩ মিনিটের মাথায় মায়েদার গোলে এগিয়ে যায় জাপান। দ্বিতীয়াধের্র ৫৫ মিনিটে খেলায় সমতা ফেরালেন ইভান পেরিসিচ। দেজান লভ্রেনের ক্রস থেকে জোরালো হেডে গোলটি করেন তিনি। আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণে দুই দল গোলের উদ্দেশে সব মিলিয়ে ১২০ মিনিটে ২৯টি শট নিলেও আর কেউ পায়নি গোলের দেখা। তাতে ম্যাচ গড়িয়েছে টাইব্রেকারে।
কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে থাকলেও গোল করার মতো খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি লুকা মদ্রিচের দল। মাঝমাঠ থেকে খেলা গুছিয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা চালিয়েছে মদ্রিচ-কোভাচিচরা। অন্যদিকে সুযোগ বুঝে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে ভীতির সঞ্চার করেছে জাপানিরা। তবে দুদলই প্রতিপক্ষের রক্ষণের সামনে গিয়ে হারিয়েছে বল। প্রথমার্ধে দুদলই প্রতিপক্ষের গোলে মাত্র ৩টি করে শট নিতে সমর্থ হয়েছে, যার মধ্যে একটি করে শট ছিল লক্ষ্যে। প্রথমার্ধের খেলা যখন গোলশূন্য সমতায় শেষ হওয়ার পথে তখনই চমক দেখান ডেইজেন মায়েদা। ৪৩ মিনিটে কর্নার পায় জাপান। ছোট করে কর্নার নেয়ার পর রুতু দোয়ান ডিবক্সে ক্রস করেন। মায়া ইয়োশিদা প্রথমে হেড নেন। বল পেয়ে আলতো ছোঁয়ায় জালে পাঠান মায়েদা। ইয়োশিদা ৩৪ বছর ১০৩ দিন বয়সে গোলটি অ্যাসিস্ট করে জাপানের পক্ষে সবচেয়ে বেশি বয়সে অ্যাসিস্ট করার রেকর্ড গড়েন। দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের খুঁজে পায় ক্রোয়াটরা। দারুণ গতিতে আক্রমণে উঠে আসতে থাকেন পেরিসিচ-বুডিমিররা। তারই ধারাবাহিকতায় পেরিসিচ গোল করে সমতায় ফেরান দলকে। দেজান লভ্রেনের ক্রসে জোরাল হেডে গোল করে রেকর্ডবুকে জায়গা করে নেন টটেনহ্যামে খেলা পেরিসিচ। প্রথম ক্রোয়াট হিসেবে বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলিয়ে পাঁচটি আসরে গোল পেলেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে দুদলই আক্রমণে মনোযোগ দেয়। ফলে প্রতিপক্ষ বারবার আঘাত চালায় রক্ষণে। তবে দুই গোলরক্ষকই দলকে বাঁচিয়েছেন বারবার। জাপানের বিপক্ষে শারীরিকভাবে এগিয়ে থাকা ক্রোয়াটরা ফিজিক্যাল অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগানোর চেষ্টা করলেও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি। ক্রোয়েশিয়া ও জাপান নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারেনি অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও। ১০১তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। তবে পেরিসিচের নেয়া শট গোলবারে প্রবেশের আগেই ব্লক করে দেন সাকাই। তিন মিনিট পর মাঝ মাঠ থেকে দ্রুতগতিতে বল নিয়ে ছুটে বক্সের সামনে থেকে গোলের উদ্দেশে জোরালো শট নেন মিতোমা। তবে ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক লিভাকোভিচ দারুণ নৈপুণ্যে সেটি ঠেকিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন। অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়ে লভ্র মাজেরের শট বার ঘেঁষে যায়। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ।