আজমিরীগঞ্জে কুদালিয়া নদীতে ড্রেজারে চলছে বালু উত্তোলন!
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ৫:২৩:৩২ অপরাহ্ন
আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে সংবাদদাতা: আজমিরীগঞ্জের কুদালিয়া নদী থেকে একটি চক্র অবৈধভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় এই চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। ফলে নদীর তীর ও আশপাশ এলাকার ফসলি জমি, বসত ভিটা ও রাস্তা নদী ভাঙ্গনের হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এমনকি সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। এনিয়ে এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের কুদালিয়া নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হয়। এর ফলে ইতোমধ্যে নদীরপাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি। নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের নোয়াগড়ের কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান মিয়াসহ একটি চক্র বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। ঐ প্রভাবশালী মহল প্রতি ঘনফুট বালু ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করছে। প্রায় ৮ থেকে ১০ মাস পূর্ব পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ডজন খানেক ড্রেজার মেশিন ও বিপুল পরিমাণ পাইপ ধ্বংস করে। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে উপজেলা প্রশাসন অভিযান না চালিয়ে রহস্যজনক কারণে নীরবতা পালন করছে। এতে সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে।
এ বিষয়ে বালু উত্তোলনকারী শাজাহান মিয়া বলেন, দুই এমপি’র ডিও লেটার নিয়ে নদী খননের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছিলাম। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিনে পরিদর্শন করে নদী খননের অনুমতি দিয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর প্রতিক মন্ডল স্বাক্ষরিত এক পত্রে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দিঘলবাগ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ অনুকূলে ইজারাকৃত আজমিরীগঞ্জ উপজেলাধীন কুদালিয়া নদী ও কুশিয়ারা নদী গ্রুপ জলমহালের উন্নয়নের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে শর্ত সাপেক্ষে মাটি খননের অনুমতি দেয়া হয়। চার নং শর্তে উল্লেখ আছে, খননকৃত মাটি জলাশয়ের পাড় উন্নয়নের কাজে সংরক্ষিত করতে হবে। কোন বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার/বিক্রয় করা যাবে না। কিন্তু সেই শর্তের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে বালু।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালেহা সুলতানা সূমী বলেন, তারা অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করছে। তবে বালু বিক্রির বিষয়টি সত্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ইউএনও।