বিজয়ের মাস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ৫:০৮:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : আজ ১২ ডিসেম্বর। একাত্তরের এই দিন থেকে স্বাধীনতার পালে লাগে উত্তাল হাওয়া। দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আস্তানায় হামলা চালিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনে বাংলার দামাল ছেলেরা। বিভিন্ন এলাকা শত্রুমুক্ত করে লাল সবুজের বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন তারা।
একাত্তরের এ দিন সিলেটের গোলাপগঞ্জের সীমান্তবর্তী হাকালুকি হাওর এলাকায় ৪ নম্বর সেক্টরের কুকিতলা সাব-সেক্টরের ৪০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা অতর্কিতভাবে পাক জান্তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। এতে ২৫ জন হানাদার প্রাণ হারায়। শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা। প্রবল প্রতিরোধের মুখে পাক বাহিনী গোলাপগঞ্জ ছেড়ে সিলেটের দিকে পালিয়ে যায়। এরপর শত্রুমুক্ত ঘোষণা করে চৌমুহনীতে লাল সবুজের পতাকা ওড়ান মুক্তিকামী জনতা। স্বাধীনতা যুদ্ধে নরসিংদীর বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের শতাধিক সম্মুখযুদ্ধ হয়। এসব খন্ড খন্ড যুদ্ধে জেলার ১১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
এদিকে, পরাজয় নিশ্চিত জেনে ঘৃণ্য ও চরম মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডের নীলনকশা করতে থাকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। একাত্তরের ডিসেম্বরের এদিন রাতে ঢাকা সেনানিবাসে প্রাদেশিক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা লে. জেনারেল রাও ফরমান আলীর সভাপতিত্বে আলবদর ও আল শামসের কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের নিয়ে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে আলবদর আলশামস বাহিনীর হাতে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যার একটি তালিকা তুলে দেয় রাও ফরমান আলী। তালিকা অনুসারে আলবদর, আলশামস বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে অপহরণ শুরু করে। তালিকা হাতে পাওয়ার পর এদিন রাতেই আলবদর বাহিনী সাংবাদিক নিজামউদ্দিন আহমদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফাকে বাসভবন থেকে অপহরণ করে। তারা আর ফিরে আসেনি।
ডিসেম্বরের এ দিনে ঢাকা থেকে কোনো পত্রিকা প্রকাশিত হয়নি। মওলানা ভাসানী এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ব্যাপকভাবে সমর্থনের জন্য ভারত সরকার এবং ভারতীয় জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি তার দলের সদস্যদের এবং সমর্থকদের বাংলাদেশ সরকার, আওয়ামী লীগ, মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, মুক্তি সংগ্রামে জয়লাভের আর দেরি নেই।