কদমতলী বাস টার্মিনালের ত্রুটি নিরূপনে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ এপ্রিল ২০২৩, ৭:৩৯:০৩ অপরাহ্ন
সিসিক মেয়রের সংবাদ সম্মেলন ॥ বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান
স্টাফ রিপোর্টার : উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা দেশের সর্বাধুনিক কদমতলী বাস টার্মিনালের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য বাস টার্মিনালের ত্রুটি তদন্তে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে এই কমিটি। গতকাল শনিবার বিকেলে নগর ভবনের সভা কক্ষে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এই তথ্য জানিয়েছেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, এলজিইডি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সমন্বয়ে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র জানান, দেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক বাস টার্মিনালের একটি অংশে ত্রুটির খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে টার্মিনালটি পরিদর্শন করেন। এ নিয়ে জনমনে যেন কোন বিভ্রান্তি না ছড়ায়-সেজন্য বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সিসিক মেয়র বলেন, নির্মাণকারী সংস্থা এখনো সিসিকের কাছে এই প্রকল্পটি হস্তান্তর করেনি। উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমান বাস টার্মিনালটি সুযোগ সুবিধাসমূহ ঠিক আছে কি না-তা পর্যবেক্ষণের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে সেবা প্রদান শুরু হয়। এরই মধ্যে স্থাপনাটির একটি অংশে কিছু ত্রুটি দেখা যায়।
এদিকে, কদমতলী বাস টার্মিনালকে ঘিরে কৌতুহলের শেষ নেই নাগরিকদের মধ্যে। এরমধ্যে উদ্বোধনের আগেই ত্রুটি ধরা পড়ায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু পরিবহন বাস টার্মিনালের আগমন এলাকায় প্রবেশ করে। যাত্রী নামিয়ে দেয়া ও যথাযথ স্থানে পরিবহন পার্কিংয়ের মহড়ায় অংশ নেয় বাসগুলো। এসময় বাস টার্মিনালে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের বাধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত উদ্বোধন হয়নি।
বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে- মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট- এমজিএসপি প্রকল্পে সিলেট সিটি কর্পোরেশন দেশের সর্বাধুনিক সুবিধা সম্বলিত ‘কদমতলী বাস টার্মিনাল’ নির্মাণ করছে। ৮ একর ভূমিতে ৬৫ (পয়ষট্টি) কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পে বিমানন্দরের আদলে বহির্গমন, আগমনের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্থাপনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে গোলাকার পাঁচতলা একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়, কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন কার্যালয় স্থাপন করা হবে।
এছাড়া যাত্রী উঠানামার জন্য পৃথক টার্মিনাল ভবন, সুপরিসর পার্কিং ব্যবস্থা, পরিবহন সেবাদানকারীদের জন্য যাবতীয় সুবিধা সম্বলিত পৃথক ভবন, রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট, পর্যাপ্ত যাত্রী বিশ্রামাগার, নারী, পুরুষ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য আলাদা আলাদা শৌচাগার, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, স্মোকিং জোন, ছোট দোকান, অসুস্থ যাত্রীদের জন্য সিকবেড, প্রার্থনা কক্ষ সহ সকল প্রকার আধুনিক সেবা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে এই স্থাপনায়। এছাড়া, পরিবহন মালিক শ্রমিকদের সভা অনুষ্ঠানের জন্য বিশাল হলরুম এবং যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্কশপ স্থাপন করা হয়।
কদমতলী বাসটার্মিনাল প্রকল্পের নকশা প্রণয়নে নগরীর ক্বীন ব্রীজ, আলী আমজাদের ঘড়ি ও আসাম টাইপ বাংলোর স্থাপত্যশৈলী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নকশা প্রণয়ন করেন স্থপতি সুব্রত দাশ, স্থপতি রবিন দে এবং স্থপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।