একই পণ্যে দুই ভ্যাট
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১১:৫২:২৫ অপরাহ্ন

আমি যদি নিজ চরিত্র সম্বন্ধে যতœবান হই তা হলে আমার খ্যাতি আপনা থেকেই আসবে। -ডি. এল. মুডিযার।
একটি পণ্য কিনতে ক্রেতাদের ভ্যাট দিতে হচ্ছে দুবার। বিশেষ করে, বড় বড় সুপারশপ গুলোতে ক্রেতাদের এই বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এভাবে ক্রেতাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এতে লংঘন করা হচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’ ২০০৯। আর ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ভোক্তা সাধারণ।
সাধারণত বড় বড় সুপারশপ বা চেইনশপগুলোতে প্যাকেটজাত দ্রব্য কিনতে গেলে ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা হয়। অথচ অন্যান্য ছোট বড় দোকানে বাড়তি কোন ভ্যাট নেয়া হয় না। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, পণ্যের প্যাকেটেই যে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লেখা আছে তাতেই ভ্যাট সংযুক্ত করা থাকে। সে হিসেবে ক্রেতাকে একটি পণ্যে ভ্যাট দিতে হচ্ছে দুইবার। অনেক প্রতিষ্ঠান পণ্যের মোড়কের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের পাশে অতিরিক্ত মূল্যের প্রাইস ট্যাগ লাগিয়ে রাখে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’ ২০০৯ অনুযায়ি পণ্যের নির্ধারিত মূল্য অর্থাৎ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে কোন পণ্য কেউ বিক্রি করতে পারবে না। অর্থাৎ পণ্যের মোড়কে ছাপানো মূল্যের বেশি কেউ নিতে পারবে না। কার্যত উল্লিখিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এই আইন না মেনে খোলামেলাভাবেই গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে চলেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বক্তব্য হচ্ছে -দেশি পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরেই পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়।এই মূল্যের ভেতরে ভ্যাটের টাকা সমন্বয় করে ওই পণ্য বিক্রি করতে হবে। অতিরিক্ত টাকা নেওয়া যাবে না। তার মানে হলো, ভ্যাটের নামে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় অবৈধ। অবশ্য এক্ষেত্রে সরকার একটা হাস্যকর যুক্তি দিয়ে থাকে, সুপারস্টোরের ক্রেতারা মুদি দোকানের ক্রেতাদের তুলনায় বেশি সচ্ছল, যে কারণে সুপারমার্কেটগুলো থেকে অতিরিক্ত ভ্যাট আদায় বড় কোন সমস্যা হতে পারে না। আবার উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে বলা হয় এই ভ্যাট ক্রেতার ওপর চাপিয়ে দিয়েছে এনবিআর। আমাদের কিছুই করার নেই।
এখন কথা হলো, ব্যবসায়িরা বলছে এক কথা, সরকার বলছে আরেক কথা। আর মাঝখানে ভোক্তা সাধারণের দুর্ভোগ। লাভবান সরকার হোক বা ব্যবসায়ি হোক,পকেট খালি হচ্ছে ক্রেতাদের। ভোক্তা সাধারণ সরকারকে এই ৫ শতাংশ ভ্যাট কমানোর দাবি করেছে। কারণ ভ্যাটের এই নীতি বিভ্রান্তিকর। কেন একজন ভোক্তা একই পণ্যের জন্য দুইবার ভ্যাট দেবেন?