রাগীব-রাবেয়া মিউজিয়াম উদ্বোধন
আমার যা কিছু অর্জন তা মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দিয়েছি : দানবীর ড. রাগীব আলী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুন ২০২৪, ৪:৪৩:২৩ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : দেশবরেণ্য শিল্পপতি দানবীর ড. রাগীব আলী ও তাঁর সহধর্মিনী মহিয়সী নারী মরহুমা রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর মানবসেবামূলক কর্মকান্ডকে চির জাগরুক রাখতে উদ্বোধন হয়েছে রাগীব-রাবেয়া মিউজিয়াম।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর তালতলাস্থ সুরমা টাওয়ারের ৭ম তলায় এ মিউজিয়ামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মিউজিয়াম উদ্বোধন করেন সমাজসেবায় নিবেদিতপ্রাণ দানবীর ড. রাগীব আলী।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশ-বিদেশে অসংখ্য শিক্ষা ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, অনেক কষ্টের বিনিময়ে এ মিউজিয়ামের যাত্রা শুরু হয়েছে। অচিরেই রাগীবনগরে নতুন ভবনে আরও বড় পরিসরে একটি সমৃদ্ধ ও পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়াম তৈরি করা হবে। এর প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, মিউজিয়াম থেকে আহরিত জ্ঞান লাভ করে অত্র অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন উপকৃত হবে।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত এ দানবীর আরো বলেন, আমি যা কিছু অর্জন করেছি, তা নিজের জন্য রাখিনি, তা মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দিয়েছি।
তিনি মানবকল্যাণকে ইবাদত হিসেবে নিয়ে আমৃত্যু কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এজন্য তিনি সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন লিডিং ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক পিপি, বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী আজিজুল মাওলা, লিডিং ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসনের ডীন প্রফেসর ড. বশির আহমেদ ভুঁইয়া, রেজিস্ট্রার মো. মফিজুল ইসলাম ও বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী।
লিডিং ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, রাগীব-রাবেয়া মিউজিয়াম উদ্বোধন রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, দানবীর ড. রাগীব আলী ও মহীয়সী নারী মরহুমা রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর নামে মিউজিয়াম হওয়া সময়ের দাবি। এতে করে সিলেট তথা সারাদেশের মানুষ দানবীর ড. রাগীব আলীর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পারবে। বিশেষ করে আগামী প্রজন্ম উপকৃত হবে। রাগীব আলী ও রাবেয়া খাতুনের মতো গুণীজন সৃষ্টিতে অবদান রাখবে।
মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ আরো বলেন, সমাজের এমন কোন খাত নেই যেখানে রাগীব আলীর অবদান নেই। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়াসহ সকল ক্ষেত্রে নি:স্বার্থভাবে অবদান রেখেছেন যা প্রশংসনীয়। কোন কিছু পাওয়ার প্রত্যাশায় তিনি মানবসেবা করেননি। তিনি মিউজিয়াম উদ্বোধন তাঁর অবদানকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রয়াস বলে তিনি আখ্যায়িত করেন। রাগীব-রাবেয়া মিউজিয়াম আন্তর্জাতিক মানের মিউজিয়ামে পরিণত হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী আজিজুল মাওলা বলেন, শিক্ষার্থীদের গবেষণাকে এগিয়ে নিতে দেশে-বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে মিউজিয়াম রয়েছে। রাগীব-রাবেয়া মিউজিয়াম লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের গবেষণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
প্রফসর ড. বশির আহমেদ ভুঁইয়া বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে মিউজিয়াম। দানবীর ড.রাগীব আলী সিলেট তথা এ দেশের মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। কর্মের মাধ্যমে তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন।
রেজিস্ট্রার মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, দানবীর ড. রাগীব আলী বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। কর্মের কারণে তিনি যুগশ্রেষ্ঠ। এ মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা তাঁর দূরদর্শিতা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আফতাব চৌধুরী বলেন, দানবীর ড. রাগীব আলীর মতো বিত্ত ও চিত্তের অধিকারী মানুষ খুব কমই রয়েছে। তাঁকে জানা ও গবেষণার জন্য মিউজিয়াম আদর্শ স্থান। মিউজিয়ামে পায়ের স্যান্ডেল থেকে টুপি পর্যন্ত থাকতে হবে। এ মিউজিয়াম সমৃদ্ধি লাভ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এছাড়া, অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন লিডিং ইউনিভার্সিটির কলা ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডীন ড. মো. রেজাউল করিম, পাবলিক হেলথ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. আব্দুল মজিদ মিয়া, লাইব্রেরিয়ান মো. আব্দুল হাই ছামেনী, রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. লুৎফর রহমান, লিডিং ইউনিভার্সিটির পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মোহাম্মদ কবির আহমেদ, কবি এখলাসুর রহমান প্রমুখ।
জামিয়া ইসলামিয়া রাগীবিয়া পাঠানটুলা মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ আল মাহদির কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে দানবীর ড. রাগীব আলীকে নিয়ে গান পরিবেশন করেন উত্তম কুমার চৌধুরী। কবিতা পাঠ করেন লিডিং ইউনিভার্সিটির গবেষণা কর্মকর্তা জসিম আল ফাহিম, কবি ও সাহিত্যিক শহিদুল ইসলাম লিটন, কবি তারেশ কান্তি তালুকদার, কবি আতাউর রহমান বঙ্গি ও কবি কামাল আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে লিডিং ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।