বিলাসবহুল হাউজবোট ঘিরে হাওরে বেড়েছে পর্যটন সম্ভাবনা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২:১২:২৯ অপরাহ্ন
শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ থেকে ॥ হাওরে উপর আধুনিক দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। যেখানে রয়েছে বিলাসবহুল রুম ও থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা। নীলজলের উপর ভাসমান এই বাড়ির ছাদে বসে উপভোগ করা যায় হাওর আর পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য। বলছি প্রকৃতি রাণী সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর ও যাদুকাটা নদীর বুকে ভাসমান হাউজবোটের কথা। উন্নত মানের এই হাউজবোট ঘিরে তৈরী হয়েছে পর্যটন সম্ভাবনা।
হাউজবোট বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক বছরে সুনামগঞ্জের পর্যটন এলাকায় হাউজবোট বেড়েছে দুই শতাধিক। বর্তমান সুনামগঞ্জ ও তাহিরপুরের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় চলাচল করছে আড়াই শতাধিক দৃষ্টিনন্দন হাউজবোট। এছাড়াও হাউজবোটের আদলে তৈরী করা স্থানীয় নৌকা রয়েছে আরও ২০০। জেলার পর্যটন এলাকা দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন ছুটে আসছেন হাজারো পর্যটক।
একদিকে সুউচ্চ পাহাড় অপরদিকে বিশাল হাওরের স্বচ্ছ জলরাশি। এরমধ্যে বিলাসবহুল হাউজ বোট । দূর থেকে দেখলে সাধারণ একটি নৌকা মনে হলেও এটিতে রয়েছে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা । প্রকৃতির চোখ ধাঁধাঁনো পরিবেশে পরিবার, প্রিয়মানুষ বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে এমন একটি সাজানো দৃষ্টিনন্দন নৌকায় ঘুরে বেড়ানো যেনো এক অন্যরকম অনুভুতি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রকৃতির রাণী খ্যাত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর, যাদুকাটা নদীসহ আশোপাশের পর্যটন এলাকা ঘিরে রয়েছে সুনামগঞ্জে সমাদৃত হাউজবোট সার্ভিস ব্যবস্থা। এতোদিন টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণের জন্য নির্ভর করতে হতো হাওর প্রচলিত চৌওলা নৌকা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় হাওরাঞ্চলে পর্যটন ব্যবস্থায় এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। জেলার ও জেলার বাইরে বিনিয়োগকারীদের প্রচেষ্টায় হাওরে চালু হয়েছে আধুনিক এই হাউজবোট সার্ভিস ব্যবস্থা। এসব হাউজ বোর্টে ঘুরে আসা যাবে টাঙ্গুয়ার হাওর, মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশ নিলাদ্রী, স্বচ্ছ পানির জল যাদুকাটা,নামাছড়া ঝরণা, মুক্তিযুদ্ধের উপত্যকা টেকের ঘাট, নয়ানাভিরাম শিমুল বাগানসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা। অবসর সময় কিংবা ছুটির দিনে হাউজবোটে করে সুনামগঞ্জ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরতে আসেন হাজারো পর্যটক। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যরে উপভোগ করতে পেরে খুশি আগত পর্যটকরা।
হাউজবোটে করে ঢাকা থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে আসা পর্যটক মাহিম আহমেদ বলেন, আমি একটি কোম্পানিতে কাজ করি। ছুটি নিয়ে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। এখানে এসে অন্যরম অনুভুতি পাচ্ছি। হাউজবোটে করে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখলাম। হাউজবোটে করে প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে পারছি। এ যেন এক অসাধারণ মুহুর্ত। হাওরে হাউজবোট সার্ভিস অসাধারণ। আমি আশা করছি সামনে এর সম্ভাবনা আরও বাড়বে। মানুষ বাহিরে ঘুরতে না গিয়ে সুনামগঞ্জে আসবে।
পর্যটকদের চাহিদা বাড়ায় বেড়েছে হাউজ বোটের সংখ্যা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলেও হাউজবোট ঘিরে বাড়বে পর্যটন সম্ভাবনা এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জলছবি হাউজবোটের স্বত্ত্বাধিকারী হাসানুর রহমান উল্লাস বলেন, প্রথম দিকে আমরাই প্রথম সুনামগঞ্জের হাওরে হাউজবোট সার্ভিস চালু করি। বিগত কয়েক বছরে এই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জেলা ও জেলার বাইরের অনেকেই এই খাতে বিনিয়োগ করছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা আসতেছেন। এতে করে একদিকে যেমন জেলার পর্যটন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে অন্যদিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সুনামগঞ্জের পর্যটন সম্ভাবনা দিন দিন বাড়তে থাকবে বলে জানান এই উদ্যোক্তা।
আধুনিক হাউজবোট সার্ভিস সুনামগঞ্জের পর্যটন সম্ভাবনা দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে দেশের বাইরে তুলে ধরবে বলে মনে করছেন প্রকৃতি প্রেমিরা।