ধর্মপাশায় তালাবদ্ধ ঘরে স্বামী-স্ত্রীসহ চার সন্তানের মৃত্যু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ৫:২৭:৩৬ অপরাহ্ন
ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা: ধর্মপাশা উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে আগুন লেগে একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী, চার সন্তানসহ ৬ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের আদর্শ গ্রাম শিমের খাল আশ্রয়ণ প্রকল্পে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন, শিমেরখাল গ্রামের দিনমজুর এমারুল মিয়া (৫৫), তার স্ত্রী পলি আক্তার (৪৫), শিশু সন্তান পলাশ (৯), ফরহাদ (৭), ফাতেমা বেগম(৫), ওমর ফারুক (৩)। ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে শিমেরখাল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় ঘরে অবস্থান করছিলেন দিনমজুন এমারুল, তার স্ত্রী ও চার সন্তান। ঘরের ভেতর থেকে দরজা তালাবদ্ধ অবস্থায় আটকানো ছিলো। পাশের ঘরের লোকজন আগুনের ধোঁয়া দেখে এগিয়ে আসলে দরজা তালাবদ্ধ থাকায় নিহতদের উদ্ধার করা যায়নি। খবর পেয়ে পুলিশ এলে স্থানীয়রা ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও চার সন্তান অগ্নিকান্ডে মারা যান।
এদিকে, অগ্নিকা-ের মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘর ভেতর থেকে তালাবদ্ধ থাকায় এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। এ ঘটনাটি আত্মহত্যা হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে নিশ্চিত করে ঘটনার কারণ বলতে পারছেন না নিহতের স্বজনরা।
নিহত পলি আক্তারের বাবা চেরাগ আলী বলেন, আমিও আমার পরিবার নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি বাড়িতে বসবাস করছি। গতকাল আমার মেয়ে আর মেয়ের জামাইকে দাওয়াত খাইয়েছি। তখন তাদের কোনো সমস্যা দেখিনি। রাতে যখন আগুন লাগে, তখন ঘরে এসে দেখি দরজা ভেতর থেকে তালা ঝুলানো। ঘরে ঘুমালে তালা লাগাবে কেন? কোনো কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। তবে এ ব্যাপারে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই বলে জানান তিনি।
অপরদিকে, অগ্নিকা-ের ঘটনায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিলেও প্রাথমিকভাবে অগ্নিকান্ডে ঘরের সবার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (ধর্মপাশা সার্কেল) আলী ফরিদ আহমেদ বলেন, আমরা ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে ঘরে মৃত দেহগুলো পুড়ানো অবস্থায় দেখতে পাই। ঘরের দরজায় তালা ঝুলানো ছিল। চাবি নিচে পড়ে ছিল। ঘরের বিভিন্ন আলামতসহ মরদেহের সুরতহাল শেষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, সিআইডি ও পিবিআই’র ক্রাইম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কারণ উদঘাটনের লক্ষে কাজ করবে।