হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভিসির নিয়োগ বাতিলের দাবিতে নগরীতে মানববন্ধন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ৪:৫৯:০৩ অপরাহ্ন

‘ড. সৈয়দ সায়েম পতিত সরকারের সহযোগী’
স্টাফ রিপোর্টার : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দানকারীদের অন্যতম অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমেদ হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হকৃবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমেদ এর নিয়োগ বাতিলের জন্য মানববন্ধনও হয়েছে সিলেট নগরীতে।
গতকাল বুধবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী স্বাধীনতার স্বপক্ষের সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ (গশিপ)’ মনোনীত প্যানেল থেকে ২০২২ সালে বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। যদিও এর আগে তিনি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন। এই আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ড. সায়েমকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদকে হকৃবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সিকৃবির সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুব ইকবাল ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহনা কাওছার। এছাড়াও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সিকৃবি চ্যাপ্টারের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম রাশেদ হাসনাত ও সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. মো মাছুদুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিকৃবির সমন্বয়ক টিম, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সিকৃবি ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো ছিদ্দিকুল ইসলাম ও সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. সামিউল আহসান তালুকদার।
গতকাল বুধবার মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিকৃবির সমন্বয়ক আজিজুল হক, মো. ফয়েজ আহম্মেদ, মো. নেয়ামত উল্যাহ, প্রফেসর ড. সামিউল আহসান তালুকদার, প্রফেসর ড. মাছুদুর রহমান, প্রফেসর ড. মাহবুব ইলাহী, প্রফেসর ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলাম ও শাবিপ্রবির প্রফেসর ড. মো. মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিদানকারী পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের দোসর, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের (গশিপ) সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমদ একজন কট্টর আওয়ামী সমর্থক। তিনি জুলাই -আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র – জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষকদের শান্তি সমাবেশের উদ্যোক্তা ছিলেন ঐ সায়েম উদ্দিন। পতিত সরকারের আমলে সিকৃবিতে নিয়োগপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ ভিসিদের ব্যবহার করে সিকৃবিতে নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির নজির স্থাপন করেন তিনি। বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদকে হকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ প্রদান জুলাই-আগস্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করার সামিল। এই নিয়োগ কোন ভাবে মেনে নেয়া যায় না। তারা অবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ নিয়োগের পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।