কোম্পানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের হয়রানির অভিযোগ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ৪:১৬:২৪ অপরাহ্ন
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
ডাক ডেস্ক ঃ সীমান্তে অবৈধ চোরাচালান ও পাথরখেকো এবং চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় কোম্পানীগঞ্জে বৈষ্যমবিরোধী ছাত্রদের মামলা দিয়ে ও গ্রেফতার করে হয়রানি করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক ওসি এবং যুবদল নেতারা। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কোম্পানীগঞ্জে বৈষ্যমবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার বুড়দেও গ্রামের আব্দুল হান্নানের পুত্র শাহজাহান আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জুলাইয়ের ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলনের সময় সারাদেশের মতো কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষার্থীরা গণ-আন্দোলন গড়ে তুলে রাজপথে ছিলেন। বিজয় পরবর্তী সময়ে তারা কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে মিলে উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় মাদক, চোরাচালানে বাধা প্রদান, ধরিয়ে দেওয়া এবং সাদাপাথর পর্যটন স্পটসহ সব উৎস থেকে অবৈধভাবে বালু, পাথর, লুটপাট ও চাঁদাবাজি বন্ধে সোচ্চার ছিলেন। একারণে তারা পাথর ও বালুখেকো এবং মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর কয়েকজন আন্দোলনকারীর সঙ্গে তৎকালীন ওসি মো. বদিউজ্জামান ও পূর্বপাড়ের কিছু যুবদল নেতার কথা কাটাকাটি হয় এবং তারা শিক্ষার্থীদের শারফিনের পাথর লুটে বাধা দেওয়ার মতো কোন কাজ না করতে হুমকি দেন। এমনকি মোটা অংকের টাকা প্রদানের প্রস্তাব করে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর দয়ার বাজার এলাকায় যুবদল নেতা বাহার আহমদ রুহেলের নেতৃত্বে একটি গ্রæপ সাদাপাথর এলাকায় পাথর লোড করছে এবং ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বাহার উদ্দিনের ভাই জুবায়ের, কামাল হাজীর ছেলে হাসনাত এবং হাফিজুরসহ আরও কয়েকজন গাড়ি ও নৌকা থেকে চাঁদা তুলছে বলে খবর পান। পরে কোম্পানীগঞ্জ থানার তৎকালিন ওসিকে জানিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দয়ার বাজার এলাকায় গিয়ে নৌকা ও গাড়িতে চুরি করে পাথর তুলতে দেখতে পান। এসময় বাহারের স্বজনসহ অন্যরা শিক্ষার্থীদের নিকট সেখানে আসার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে তারা চাঁদাবাজদের ধরিয়ে দিতে এসেছেন বলে জানান। একথা শুনে পাথর লুটকালীরা অতর্কিতভাবে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করে। এ সময় উপস্থিত কয়েকজন লোক মধ্যস্থতা করে সবাইকে বাজারে নিয়ে যায় এবং বিষয়টি দেখে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানায়। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তিনটি ভ্যানসহ পুলিশ চলে আসে। পুলিশ আসার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী লোকগুলো বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের চাঁদাবাজ হিসেবে পুলিশের নিকট উপস্থাপন করে। এসময় ওসি বদিউজ্জামান সবাইকে তার সাথে থানায় যেতে বলেন এবং থানা থেকে সবাই যার যার বাড়ি চলে যাবেন বলে জানায়। কিন্তু থানায় যাওয়ার পর ওসি নানা ভাবে বিলম্ব করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন। পরে কয়েকটি গণমাধ্যমে ভুয়া তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পাড়–য়া গ্রামের মরহুম আব্দুল হকের পুত্র আরিফ হাসান জুবায়ের, নয়াগাংগের পার গ্রামের ইলিয়াছুর রহমানের পুত্র হাবিবুর রহমান মামুন, কামালবস্তী গ্রামের শামছুল ইসলামের পুত্র সুহেল আহমদ রানা, টুকেরবাজার গ্রামের আনোয়ার হোসেনের পুত্র মো. রাজন মিয়া, ডাকঘর গ্রামের আব্দুল বাছেতের পুত্র দিলোয়ার হোসেন দিদার প্রমুখ।