ইসলামী গানের দল মণ্ডপে গান করে ‘পূজা কমিটির নেতার অনুরোধে’: পুলিশ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ৮:০১:১২ অপরাহ্ন

অনলাইন ডেস্ক : চট্টগ্রাম নগরীর জে এম সেন হলে মহাসপ্তমীর অনুষ্ঠানে ইসলামি গান পরিবেশনকারী দলটি মঞ্চে উঠে পূজা উদযাপন কমিটির এক নেতার ‘অনুরোধে’ গান ধরেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় দুইজনকে আটকের পর শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ কমিশনার (ক্রাইম) রইছ উদ্দিন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বৃস্পতিবার জে এম সেন হল পূজা মণ্ডপে সন্ধ্যার পর থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলেন।
“ইতোপূর্বে পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পীকে ওই অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনের অনুরোধ করেন। তার অনুরোধের প্রেক্ষিতে শিল্পী গোষ্ঠীর একদল সদস্য একটি ইসলামিক গজল ও একটি বাউল গান পরিবেশন করেন।”
পরিবেশন করা দুটি গানের মধ্যে একটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে’ মন্তব্য করে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে।”
তিনি বলেছেন, গান পরিবেশনকারী শিল্পীদের পরিচয় শনাক্ত করে রাতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছয় জনের মধ্যে নুরুল করিম (৩৪) ও শহীদুল ইসলাম (৪২) নামে দুই জনকে আটক করা হয়।
তাদের মধ্যে শহীদুল তানজিমুল উম্মাহ নামে একটি মাদ্রাসার এবং নুরুল ইসলাম দারুল ইফরান একাডেমির শিক্ষক।
আটক দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জানিয়ে উপ কমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, “এ ঘটনার সাথে কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে আছে কি না এবং কোনো অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এটা করা হয়েছে কি না, সেটা আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি।
“পাশাপাশি যার আমন্ত্রণে তারা গান করতে উঠেছিল সেই সজল দত্তকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা চেষ্টা করছি, যদিও তাকে এখনও আমরা পাইনি।”
পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় মামলা করার কথা বলা হয়েও শুক্রবার দুপুর ১২টার পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা নথিভুক্ত হয়নি। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন উপ কমিশনার রইছ উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর জে এম সেন হলে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত দুর্গা পূজার মহাসপ্তমীর আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে ‘চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি’ নামের একটি সংগঠন দুটি গান পরিবেশন করে।
গান পরিবেশনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সেখানে হিন্দুদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। পরে সেনাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়। ক্ষুব্ধ সনাতন ধর্মালম্বীরা সেখানকার সামনের সড়কে বিক্ষোভও করেন।
পরে ডিসি ফরিদা খানম মণ্ডপে গিয়ে বক্তব্য দেন এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মামলা করার আশ্বাস দেন।
রাতে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য মঞ্চে উঠে ঘটনার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত পূজা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।