অক্টোবরের বেতন-ভাতা না পেয়ে বিপাকে বিশ্বনাথের ৮০২ প্রাথমিক শিক্ষক-কর্মচারী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ৩:৪২:২৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বনাথে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে যোগদান করতে না দেয়ায় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ৮০২ জন শিক্ষক-কর্মচারী অক্টোবর মাসের বেতন পাননি। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এ উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তার পদ শূন্য হয়। এ পদে ২০ অক্টোবর ‘মাহমুদুল হক’ নামের এক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা থেকে বদলি হয়ে বিশ্বনাথ উপজেলায় যোগদান করার কথা ছিল। কিন্তু, বিশ্বনাথে ‘মাহমুদুল হক’র যোগদানের খবর জানাজানি হলে তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার একটি অংশ আন্দোলন শুরু করে। ফলে তিনি (মাহমুদুল) বিশ্বনাথে যোগদান করতে পারেননি।
ভুক্তভোগীরা জানান, ‘মাহমুদুল হক’ নামের ওই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলায় যোগদান না করায় উপজেলার ১৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭০২ জন প্রধান ও সহকারী শিক্ষক, ৯৫ জন দপ্তরী ও শিক্ষা অফিসের ৫ জন স্টাফ’সহ প্রায় ৮০২ জন শিক্ষক-কর্মচারী ‘অক্টোবর’ মাসের বেতন পাননি। বেতন না পাওয়ার ফলে বাসা ভাড়া ও পরিবারের প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এসব শিক্ষক-কর্মচারী। জানা গেছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার অবসরে যাবার পর ‘ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা’র দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সোহেল রানা। ‘আর্থিক’ ক্ষমতা না থাকায় তিনি ওই শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ছাড় দেওয়ার অনুমতি দিতে পারছেন না।
সঠিক সময়ে বেতন না পাওয়ায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে জেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি ও বিশ্বনাথ উপজেলার মুফতিরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বাবুল কান্তি দাশ মেঘল বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে চলে যান আমাদের সাবেক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক স্যার। আর ২০ অক্টোবর একই পদে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের যোগদান করার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২২দিন অতিবাহিত হলেও তিনি আজ (১১ নভেম্বর) পর্যন্ত যোগদান করেন নি। তার যোগদানে বিলম্ব হওয়ার ফলে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রধান ও সহকারী শিক্ষক ও কর্মচারী’সহ ৮০২ জনের বেতন উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। ফলে এসকল শিক্ষক-কর্মচারীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। তিনি জানান, সচরাচর প্রতি মাসের ২/৩ তারিখ তাদের বেতন ভাতা হয়। বিষয়টি তারা বিভাগীয় পরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসারকে জানান ।
জেলা শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াত এরশেদ এ প্রতিবেদককে জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার যোগদান না করায় শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানানো হয়। অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি। বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুনন্দা রায় বলেন, বিশ্বনাথে শিক্ষা কর্মকর্তার পদায়ন হলেও যোগদান হয়নি। বেতন বিলে শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর লাগে। এ কারণে তাদের বেতন হচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, গত ৪ নভেম্বর নতুন শিক্ষা কর্মকর্তা জেলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করে ৩ দিনের ছুটিতে ছিলেন। শুনেছি ছুটি শেষে তিনি আবার জেলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করেছেন। এর বেশি আর কিছু জানি না। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার ক্ষমতা তার নেই বলে জানান তিনি।