জাতীয় ঐক্যের ডাক সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫:৫৬:৪৩ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : দেশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা। বলেছেন, ভারতের আধিপত্যবাদী চিন্তা বাদ দিতে হবে। বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে।
কোনো ধরনের আগ্রাসন মেনে নেয়া হবে না। এমন চেষ্টা হলে দেশবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেবে। গতকাল রাজধানীর মহাখালীস্থ রাওয়া কমপ্লেক্সের সামনে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যবৃন্দের আয়োজনে ‘ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের’ আহবান শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের আহবায়কের বক্তব্যে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ বলেন, আমরা সরকারকে আহবান করতে চাই- আর কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়, সাম্যতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি।
ভারতের জনগণকে আমরা বলতে চাই, আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। আপনারা আমাদের বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু। কিন্তু ভারতের গেরুয়া পোশাকধারী হিন্দু আধিপত্যবাদকে আমরা কোনোভাবেই এদেশে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতে রাজি নই।
তিনি বলেন, আজকে এখানে আমরা এক হয়েছি ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানাতে। হযরত শাহ্ জালাল (র.) হযরত শাহ্ মকদু (র.), অতিশ দীপঙ্কর, শ্রী চৈতন্য, অনুকূল ঠাকুর, লোকনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখের আবাস ভূমি এই বাংলাদেশ। আমরা যুগ যুগ ধরে আমাদের এই শ্যামল ভূমি বাংলাদেশে স¤প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছি।
কিন্তু আমরা অতি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি স¤প্রতি বাংলাদেশের লেডি ফেরাউন পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতের হিন্দু বিদ্বেষী নেতৃত্বের শ্যোন দৃষ্টি পড়েছে আমাদের দিকে। তাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন কর্মকাাণ্ড তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে।
তাদের সর্বশেষ উদ্যোগ ছিল আগরতলা ও কলকাতার দূতাবাসে আক্রমণ চালানো এবং আমাদের দেশের পতাকাকে অবমাননা করা। আমরা এসব ঘটনাগুলোকে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি হিসেবে মনে করছি।
এ ছাড়া ভারতের কিছু মিডিয়া, রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশকে নিয়ে সার্বক্ষণিক বিষোদ্গার করে চলেছে। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী যেকোনো দূতাবাসে হামলা সে দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা।
দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে যখন আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা হয়, আমাদের পতাকা পদদলিত হয়, আমাদের দূতাবাসে আক্রমণ হয় তখন আমরা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চুপ করে থাকতে পারি না। আমরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথ নিয়েছিলাম।
এখনো আমরা সেই শপথ থেকে বিচ্যুত হয়নি। দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে জাতিকে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। আসুন সব ধরনের রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে ধর্ম-মত ও দলের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করি। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের তরুণ ছাত্র এবং শ্রমিক-জনতাকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিভিন্ন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের অংশগ্রহণে রাওয়া ক্লাবের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচ থেকে শুরু হয়ে তেজগাঁও বিমান বন্দরের সামনে হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংলগ্ন সড়কের ইউটার্ন দিয়ে ঘুরে আবারো রাওয়া ক্লাবের নিচে গিয়ে শেষ হয়।