আলিয়া মাঠের পরিবর্তে এমসি মাঠে আনজুমানে খেদমতে কুরআন’র তাফসীর
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২:৫৯:৩৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের পরিবর্তে এমসি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের তিন দিনব্যাপী ঐতিহাসিক তাফসীরুল কুরআন মাহফিল। আগামী ৯ জানুয়ারি মাহফিল শুরু হবে। ধর্মপ্রাণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আনজুমান কর্তৃপক্ষ।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের উদ্যোগে সাংবাদিকদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। আনজুমানের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ একরামুল হকের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মাওলানা এএইচএম সোলায়মানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আনজুমানের নির্বাহী পরিষদ সদস্য ড. নূরুল ইসলাম বাবুল।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আনজুমানের সহ-সভাপতি হাফিজ আব্দুল হাই হারুন। নগরীর বন্দরবাজার কুদরতউল্লাহ মার্কেটস্থ আনজুমান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আনজুমানের নির্বাহী পরিষদ সদস্য হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জাহেদুর রহমান চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আলম।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় পর আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (র.) এর স্মৃতি বিজড়িত সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের উদ্যোগে ৩ দিনব্যাপী ৩৬তম তাফসীরুল কুরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিšুÍÍ সিলেটের ধর্মপ্রাণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি, নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিবেচনা করে আলোচনাক্রমে আমরা নির্ধারিত তারিখ ঠিক রেখেই শুধু স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পূর্বের তারিখে যথাসময়ে সিলেট এমসি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে এমসি কলেজ মাঠের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়া হয়েছে। এছাড়া,মাহফিল ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতৃবৃন্দ মাঠ পরিদর্শন করেছেন। মাহফিলের জন্য মাঠের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শীঘ্রই শুরু হবে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে মাহফিলে সিলেটের ইতিহাসে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম ঘটবে। লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ‘দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনে রাজনৈতিক দলের ন্যায় দ্বীন প্রচারের কাজে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় ধরে আল্লামা সাঈদী (র.) এর স্মৃতি বিজড়িত আলিয়া মাঠের মাহফিল করতে বাধা দেয়া হয়েছে। দু’বার মাঠে প্যান্ডেল নির্মাণের পরও মাহফিল করতে দেয়া হয়নি। স্টেইজ ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল এবং মাইক খুলে নেয়া হয়েছিল। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট ইসলাম বিদ্বেষী সরকারের পতনের পর এক যুগ পর আবারো আনজুমান ঐতিহ্যবাহী তাফসীরুল কুরআন মাহফিলের আয়োজন করতে যাচ্ছে। মাহফিলে বিশ^বরেণ্য আলেমে দ্বীনগণ তাফসীর পেশ করবেন। মাহফিলে ধর্মপ্রাণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি হবে। আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশী মানুষ হলে পুরো নগরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়ে পদদলিত হয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ফলে, আগামী ৯, ১০ ও ১১ জানুয়ারীর তাফসীরুল কুরআন মাহফিলটি আলিয়া মাদ্রাসার পরিবর্তে সিলেট এমসি কলেজ মাঠে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মাহফিল সফলে সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশসহ সরকারী সকল বাহিনী ও সংস্থার সহযোগিতা কামনা করা হয়। পর্যাপ্ত পানি ও স্যানিটেশনের জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন এবং নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
আনজুমান কর্তৃপক্ষ বলেন, ৩ দিনব্যাপী তাফসীর মাহফিল চলবে প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এই তিনদিন মাঠে মহিলাদের জন্য আলাদা বিশেষ কোন ব্যবস্থা থাকবেনা। তবে, ১১ জানুয়ারী শনিবার সকাল ১০টায় এই মাঠেই মহিলাদের জন্য আলাদা মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। মাহফিলে মহিলাদের লিখিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে। মাহফিলে প্রধান মেহমান হিসেবে তাফসীর পেশ করবেন মাওলানা সাইয়্যেদ কামালুদ্দিন জাফরী। প্রধান মুফাসসির হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বরণ্যে ইসলামিক স্কলার ড. মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। মাহফিলে তাফসীর পেশ করবেন পীরজাদা মাওলানা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, মুফতি আমীর হামজা, মাওলানা সাদিকুর রহমান আজহারী ও মাওলানা আব্দুল্লাহ আল আমীন। এছাড়া, মাহফিলে সিলেট বিভাগের বরণ্যে মুফাসসিরগণ তাফসীর পেশ করবেন। মাহফিল সফল করতে ইতোমধ্যে আনজুমানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় চলছে। এছাড়া, সিলেট নগরীসহ এর আশপাশ এলাকায় চলছে মাইকিং। স্থান পরিবর্তনের কারণে যাতে জনমনে কোন বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সিলেটের ধর্মপ্রাণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন আয়োজকরা।