নববধূকে ঘরে তোলা হলো না, গাড়ীতেই হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে বরের মৃত্যু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মার্চ ২০২৫, ৫:১৭:১৭ অপরাহ্ন

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ ঢাক ঢোল পিটিয়ে বরযাত্রীকে সাথে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি আর যাওয়া হল না হবু বর মুন্না গড় (২২) এর। বিয়ে করতে শ্বশুরবাড়ী যাওয়ার আগেই পথিমধ্যে গাড়ীতেই হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেলেন বর। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগান এলাকায়। বর আর কনের বাড়ীতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হৈ-হুল্লোড় আর অতিথি আপ্যায়নের আনন্দঘন মুহূর্তটি নিমিষেই পরিণত হয় শোকাবহ পরিবেশের।
বরের সাথে আসা বরযাত্রী অভিনাশ গড় জানায়, গত বুধবার বিকাল ৫টায় জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রাজকী চা বাগানের গড় লাইন পাত্রের বাড়ি থেকে ৭০ জন বরযাত্রী নিয়ে কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের নতুন লাইন এলাকার সম্পদ রাজগড়ের মেয়ে সুমি রাজগড়কে বিয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় মুন্না গড়। রাত সাড়ে ৮টায় কনের বাড়ী থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরবর্তী স্থান কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানে পৌঁছার পর বরের গাড়ীসহ বরযাত্রী বহনকারী গাড়ী গুলো দাঁড় করানো হয়। এ সময় সবাই গাড়ী থেকে নেমে কেনাকাটা করেন। এসময় বর মুন্না সবার সাথে হাসিখুশি ভাবে কথাবার্তাও বলেন। প্রায় বিশ মিনিট যাত্রাবিরতির পর যখন সবাই গাড়িতে উঠে বিয়েবাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করবে ; তখনি হবু বর মুন্না চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। সাথে সাথে মুন্নাকে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে গেলেও জ্ঞান না ফেরায় তাকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুন্নাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, বরযাত্রীদের বহনকারী গাড়ীগুলো মাধবপুর বাজারে বরযাত্রীদের নিয়ে অপেক্ষায় ছিল। পরে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে মুন্নার মৃত্যুর সংবাদ বরযাত্রীদের কাছে পৌঁছালে পৌঁনে বারোটার দিকে বরযাত্রীদের নিয়ে গাড়িগুলি কনের বাড়ী পাত্রখোলা চা বাগানে না গিয়ে পাত্রের বাড়ী রাজকী চা বাগানে ফেরত যায়। হবু বরের এমন মৃত্যুর সংবাদ পাত্রখোলা চা বাগানে কনের পিত্রালয়ে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরী হয়। নিহত হবু বর মুন্না গড় জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রাজকী চা বাগানের গড় লাইন এলাকার আসুক গড়ের ছেলে। কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সাজেদুল কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এখানে আনার পর ছেলেটির পালস,শ্বাস-প্রশ্বাস সব বন্ধ পাওয়া যায়। তারপরও আমরা তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।