ধোপাদিঘীকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানালেন এডভোকেট শাহীন
ওসমানী শিশু পার্কের প্রবেশ ফি বৃদ্ধি, জানে না সিসিক
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৫:০৯ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)-এর অনুমতি ছাড়াই নগরীর ধোপাদিঘীরপারস্থ বঙ্গবীর এম এ জি ওসমানী শিশু পার্কে প্রবেশ ফি বাড়ানো হয়েছে। গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে এ পার্কে প্রবেশের ফি বাড়ানো হয়েছে বলে পার্কের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আকস্মিক ভাড়া বাড়ানোয় নগরীর সচেতন মহলে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। একজন সিনিয়র আইনজীবী এ প্রসঙ্গে আরো বলেছেন, বঙ্গবীর ওসমানীর নাম ব্যবহার করে এ পার্কে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে ওসমানীর কোন সম্মান বাড়ছে না বলে তার মন্তব্য। জল্লা ভরাট করে নির্মিত ধোপাদিঘীকে তিনি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
পার্কের ফটকে গেলে- প্রবেশ ফি ৪০ টাকা (ভ্যাটসহ)-লেখাটি যে কারো চোখে পড়বে। এর আগে পার্কের প্রবেশ ফি ছিল ৩০ টাকা। এ বিষয়ে পার্কের কাউন্টারের দায়িত্বরত ব্যক্তি জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর থেকে প্রবেশ ফি বাড়ানো হয়েছে। পার্কের সাথে সংশ্লিষ্ট একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি জানান, ভ্যাট বাড়ায় পার্কের প্রবেশ ফি বাড়ানো হয়েছে। এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে প্রায় ২২টি রাইড। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে রয়েছে বাম্পার কার, রোলার কোস্টার ও লাইভ ম্যাজিক শো। এছাড়াও রয়েছে নাগরদোলা, ময়ুর রাইড, ইলেকট্রিক ট্রেইন, এয়ার সাইকেল, বিভিন্ন রকমের স্লিপার, হর্স রাইড, ফ্লাওয়ার রাইডসহ নানা ধরনের রাইড। এর মধ্যে বেশীরভাগ রাইডের মূল্য ৩০টাকা। বাম্পার কারসহ তিনটি রাইডের মূল্য ৫০ টাকা করে।
প্রবেশ ফি বাড়ানোর বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেজাই রাফিন সরকার। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি এ বিষয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানান। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পার্কের লিজের বিষয়ে কিছুটা অস্বচ্ছতা রয়েছে। এ বিষয়ে মামলা মোকদ্দমাও আছে। সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখার পরামর্শ তার।
সিসিকের অন্য একটি সূত্র জানায়, লিজ গ্রহিতা তাদেরকে লিজের অর্থ দিতে চাইলেও তারা গ্রহণ করছেন না মামলাজনিত কারণে।
২০০১ সালের ২০শে মার্চ প্রায় সাড়ে ৬ একর আয়তনের বঙ্গবীর এমএজি ওসমানী শিশু পার্ক ইজারা প্রদানের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে তৎকালীন সিলেট পৌরসভা। জমা পড়ে ৫টি টেন্ডার। ১৫ এপ্রিলের পৌর পরিষদের সভায় নগরীর কুয়ারপারের ফরিদাবাদের বাসিন্দা মিজান আজিজ চৌধুরী সুইটকে ৫ বছর মেয়াদে ইজারা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০০১ সালের ৯ মে মিজান আজিজ চৌধুরী সুইটের সঙ্গে ইজারা চুক্তি সম্পাদন করে তৎকালীন সিলেট পৌরসভা। ৫ বছর মেয়াদে ইজারা পান মিজান আজিজ চৌধুরী সুইট। এরপর থেকেই শিশু পার্কটি মিজান আজিজ চৌধুরীর তত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। পার্কের লিজের অস্বচ্ছতা নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
পার্ক পরিচালনা ও প্রবেশ ফি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সিলেটের বিশিষ্ট আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি এমাদ উল্যাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন সিলেটের ডাককে বলেন, ধোপাদিঘী ভরাট করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনার জন্য ওসমানী উদ্যান নির্মাণ করা হয়েছে। এ নিয়ে শুরুতেই পরিবেশবাদীদের আপত্তি ছিল। বাণিজ্যিকভিত্তিতে পরিচালনার কারণে এ পার্কের মাধ্যমে ওসমানীর প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে না। ধোপাদিঘীকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থায় সিটি কর্পোরেশন বেআইনীভাবে বঙ্গবীর ওসমানীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। প্রয়োজনে দিঘীর পশ্চিম দিকে রাইডের জন্য ফ্রি জোন করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে এ কৃতী পুরুষের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তার মন্তব্য।