বিশ্বম্ভরপুরে প্রকাশ্যে সরকারি জমির মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১:৫০:৩৫ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের কয়েকশ’ মিটার অদূরে করচার হাওরে প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে নেয়া হচ্ছে খাস জমির মাটি। গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী কর্তৃক সরকারি অকৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে নিরব ভূমিকায় স্থানীয় প্রশাসন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে মাটি উজাড় হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট হাওরের কৃষকরা। কৃষকরা জানিয়েছেন, সরকারি এই অকৃষি জমি স্থানীয়রা গরু চড়ানো, বোরো মৌসুমে চারা বপন, ধান শুকানোসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকেন। সম্প্রতি বাঁধে মাটি নেয়ার নামে হাওর নিবটবর্তী খাস জমি ভেকু মেশিনের সাহায্যে দিনে রাতে কেটে উজাড় করা হচ্ছে। যে হারে মাটি কাটা হচ্ছে, এতে কিছু দিন পর হাওরে দৃশ্যমান কোনো জায়গা থাকবে না। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হবেন কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাস জমিতে ভেকু মেশিনের সাহায্যে মাটি কেটে একাধিক ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন হিমেল নামের স্থানীয় এক রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা। খরচার হাওরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থায়ী বাঁধে চুক্তিভিত্তিক মাটি ফেলছেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টাকা দিয়ে মালিকানা জায়গা থেকে মাটি নেয়ার কথা থাকলেও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সরকারি খাস জমি থেকে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মাটি কাটার দৃশ্য ধারণ করতে গেলে বাঁধা দেন হিমেল ও তার লোকেরা। এক পর্যায়ে সাংবাদিকের সাধে খারাপ ব্যবহার করেন তিনি।
সরকারি জমি থেকে মাটি নেয়ার কোনো অনুমতি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে দাপট দেখিয়ে বললেন, হিমেলকে উপজেলার সবাই চিনে। অনুমতি আছে কিনা আপনাকে কেনো বলবো? যা বলার ইউএনওকে বলবো।
মাটি নেয়ার ব্যাপারে বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা ভূমি সহকারি শিল্পী রানী মোদক বলেন, সরকারি জমি থেকে মাটি নেয়া হচ্ছে-এমন অভিযোগ শুনে আমি সেখানে গিয়ে তাদের বাঁধা দিলে তারা জানান, ইউএনও স্যার তাদের অনুমতি দিয়েছেন। আমি স্যারকে ব্যাপারটি বলার পর তিনি বলেছেন তাদের যেনো অফিসে ডেকে আনি।
এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, আমি কোনো অনুমতি দেইনি। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। ঠিকাদারের লোকেরা যদি মাটি নেয়া বন্ধ না করে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।