‘বালাগঞ্জে কুশিয়ারা নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিন’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মে ২০২৫, ৫:৪১:৪২ অপরাহ্ন

বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেছেন, বিগত সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কুশিয়ারা পাড়ের বিপুল সংখ্যক মানুষকে বার বার দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বালাগঞ্জের শত শত পরিবার নদী ভাঙ্গণের ফলে বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে । আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ এবং এই এলাকার মানুষের সম্পদ রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুর এলাকায় কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত খসরুপুর-বালাগঞ্জ সড়ক ও একটি সেতু পরিদর্শনশেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সাথে কথা বলেন।
গত ৬ মে রাতে কুশিয়ারা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে ফাজিলপুরপৈলনপুর এলাকার প্রায় ৩০০ মিটার সড়ক এবং একটি সেতু ধসে পড়ে। এতে প্রায় পাঁচ ফুট গভীর একটি গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম মূল সড়ক যোগাযোগ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এলাকাটি পরিদর্শনে যাননি।
কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতাগ্রহণের পর বিএনপি সরকারের আমলে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমান এবং সাবেক সংসদ সদস্য এম. ইলিয়াস আলীর উদ্যোগে এই কুশিয়ারা ডাইক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগের আমলে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বালাগঞ্জবাসী বারবার দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছেন। তিনি অবিলম্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সড়ক ও সেতু নির্মাণসহ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা পুন:স্থাপনের দাবি জানান।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরো বলেন,“ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার শুধু মেগা প্রকল্পের নামে দুর্নীতির মহোৎসব চালিয়েছে। দেশের জনগণের উন্নয়ন নয়, বরং নিজেদের পকেট ভারী করাই ছিল তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
ভাঙ্গনপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারী ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি স্থানান্তরের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিলম্ব হলে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই সময়ক্ষেপণ নয়, জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই সড়কটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। দ্রুত ভাঙ্গনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বিকল্প সড়ক নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতের আশ্বাসে নয়, এখনই কাজ শুরু করতে হবে। বর্ষাকাল সামনে-তাই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আগেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”
গত বছরের বন্যার পর ভাঙ্গণ প্রবণ এলাকায় যেভাবে দায়সারা মেরামত কাজ করা হয়েছিল, সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তখনকার সময়ে নির্মিত এই সড়কে বারবার ভাঙ্গন ও ধস শুধু জনদুর্ভোগই বাড়ায়নি, সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা ও ক্ষোভ-দুটিই বাড়িয়েছে।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “দ্রুত ও টেকসই ভাঙ্গনরোধী ব্যবস্থা না নিলে এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও মানুষের জীবন-জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়বে।”
পরিদর্শনকালে বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, জেলা বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মাহবুব আলম, সহ-প্রচার সম্পাদক শাহিন আলম জয়, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম জিতু, সাবেক সহ-সভাপতি আফাজ উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমদ সুহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সেফুল, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল বারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।